অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের জন্য গত দুই সপ্তাহ ছিল একটা ভয়ঙ্কর স্বপ্নের মতো। প্রথমে আইপিএল ২০২৫-এর ফাইনালে তার দল পরাজিত হয়েছে এবং এবার আবারও তিনি আরেকটি বড় ফাইনাল ম্যাচে হেরে গেছেন।
খেলাধুলার খবর: ভারতীয় ক্রিকেটের উজ্জ্বল তারকা শ্রেয়স আইয়ার আবারও ফাইনাল ম্যাচে জয় থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। গত দুই সপ্তাহে দুটি বড় ফাইনাল, দুটি দলের নেতৃত্ব এবং উভয় সুযোগেই পরাজয়, এই ধারাবাহিকতা এখন ক্রিকেট ভক্ত এবং বিশেষজ্ঞদেরও ভাবতে বাধ্য করছে যে, কি শ্রেয়স ‘ফাইনালের চাপ’ সামাল দিতে পারছেন না?
একদিকে ৩ জুনে অনুষ্ঠিত আইপিএল ২০২৫-এর ফাইনালে পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়ক হিসেবে আইয়ার আরসিবির কাছে পরাজিত হয়েছিলেন, অন্যদিকে এবার টি-টোয়েন্টি মুম্বই লীগ ২০২৫-এর ফাইনালে তিনি তার দল সোবো মুম্বই ফ্যালকনসের অধিনায়ক হিসেবে মুম্বই সাউথ সেন্ট্রাল মারাঠা রয়্যালসের কাছে হেরে গেছেন। মারাঠা রয়্যালস এই ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতে ট্রফি জিতে নিয়েছে।
ওয়াংখেড়েতে মহামুখোমুখী, কিন্তু আইয়ার আবারও ফিকে
ফাইনাল ম্যাচটি মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে মারাঠা রয়্যালসের অধিনায়ক সিদ্ধেশ লাড টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। তার এই সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই সঠিক প্রমাণিত হয় কারণ সোবো মুম্বই দল পাওয়ারপ্লেতেই চাপে পড়ে যায়। দল ৬ ওভারের মধ্যে ৩৩ রানে ২ উইকেট হারায়। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অঙ্গকৃষ্ণ রঘুবংশী এবং ইশান মুলচন্দানী খুব একটা ভালো পারফর্ম করেননি। রঘুবংশী মাত্র ৭ রানে আউট হন, অন্যদিকে মুলচন্দানী ২০ রানের ইনিংস খেলেন।
আবারও ব্যর্থ অধিনায়ক আইয়ার
শ্রেয়স আইয়ারের উপর দলকে সংকট থেকে বের করে আনার দায়িত্ব ছিল, কিন্তু তিনি ফাইনালে আবারও হতাশ করেছেন। আগের আইপিএল ফাইনালেও আইয়ার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছিলেন এবং এবারের ম্যাচেও তিনি মাত্র ১২ রান করেন। ১২তম ওভারে তিনি ক্যাচ দিয়ে আউট হন, যার ফলে দলের কাঠামো ভেঙে পড়তে দেখা যায়।
তবে, এর পর ময়ুরেশ টান্ডেল এবং হর্ষ আগরওয়াল সামনে এসে দলকে সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছাতে সাহায্য করেন। উভয়ে ৮৫ রানের জুটি গড়ে দলকে ২০ ওভারে ১৫৭/৪ রানে নিয়ে যান। টান্ডেল ৩২ বলে অপরাজিত ৫০ রান করেন, অন্যদিকে আগরওয়াল ২৮ বলে অপরাজিত ৪৫ রান যোগ করেন।
মারাঠা রয়্যালসের জবাব—সংগ্রামের পর চমৎকার জয়
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মারাঠা রয়্যালস দল শুরুটা সাবধানে করে, কিন্তু মাঝের ওভারগুলিতে তাদের ইনিংস কিছুটা দোদুল্যমান হয়। তবে, চিন্ময় রাজেশ সুতার এবং আওয়াইস খান নওশাদ মাঝের ওভারগুলিতে প্রয়োজনীয় গতি আনেন। সুতার ৫৩ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন, যেখানে তিনি চমৎকার টাইমিং এবং দক্ষতা প্রদর্শন করেন। অন্যদিকে আওয়াইস খান ৩৮ রানের দ্রুত ইনিংস খেলে দলকে লক্ষ্যের আরও কাছে নিয়ে যান। অবশেষে মারাঠা রয়্যালস ১৯.২ ওভারে ১৫৮ রান করে খিতাব জিতে নেয়।
শ্রেয়স আইয়ারের জন্য এই পরাজয় শুধুমাত্র আরেকটি ফাইনালে হার নয়, বরং তার অধিনায়কত্ব নিয়ে উঠে আসা প্রশ্নের ভিত্তি হতে পারে। যেখানে একদিকে আইয়ারের প্রযুক্তিগত ব্যাটিং এবং নেতৃত্বের ক্ষমতার প্রশংসা করা হয়, সেখানে বারবার বড় ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া তার জন্য বিপদের ঘণ্টা বাজাতে শুরু করেছে।