আইপিএলে মুম্বইয়ের ৭ উইকেটের জয়, প্লেঅফের দৌড়ে এগিয়ে

আইপিএলে মুম্বইয়ের ৭ উইকেটের জয়, প্লেঅফের দৌড়ে এগিয়ে
সর্বশেষ আপডেট: 24-04-2025

২৩শে এপ্রিল ২০২৫ তারিখে হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আইপিএল ২০২৫-এর ৪১তম ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে ৭ উইকেটে পরাজিত করে প্লেঅফের দৌড়ে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে। এই জয়ের সাথে সাথে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে।​

খেলাধুলার খবর: আইপিএল ২০২৫-এ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের শুরুটা কিছুটা ধীর ছিল, কিন্তু এখন তারা দারুণভাবে ফিরে এসেছে এবং তাদের শেষ চারটি ম্যাচে জয় লাভ করেছে। এর সাথে সাথে দলটি পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ ৪-এ প্রবেশ করেছে। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বোলার এবং ব্যাটসম্যান উভয়েরই অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখা গেছে। প্রথমে, মুম্বইয়ের বোলাররা হায়দ্রাবাদকে ১৪৩ রানে রুখে দিয়েছে। 

ট্রেন্ট বোল্টের মারাত্মক বোলিং হায়দ্রাবাদের ব্যাটসম্যানদের সম্পূর্ণরূপে চাপে ফেলে দিয়েছে। বোল্ট এই ম্যাচে চারটি উইকেট নিয়েছে, যা দলকে ম্যাচে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। এরপর মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যানরা কোনো ভুল করেনি এবং ১৪৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা মাত্র ১৫.৪ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে অর্জন করেছে। রোহিত শর্মার অর্ধশতক (৭০ রান) এবং সূর্যকুমার যাদবের (৪০*) অপরাজিত ইনিংস মুম্বইকে দারুণ জয় এনে দিয়েছে।

হায়দ্রাবাদের ইনিংস: ক্লাসেন-মনোহরের জুটি দিয়ে রক্ষা হয়েছে মর্যাদা

সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ইনিংসে হেনরিক ক্লাসেন (৭১) এবং অভিনব মনোহরের (৪৩) দারুণ ৯৯ রানের জুটি দলকে সম্মানজনক স্কোর পর্যন্ত পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। শুরু থেকেই হায়দ্রাবাদের অবস্থা খারাপ ছিল, যখন দল ২০ রানের আগেই তাদের চারটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট হারিয়েছে। ট্রেভিস হেড (০), অভিষেক শর্মা (৮), ঈশান কিশান (১) এবং নীতিশ রেড্ডি (২) এর মতো ব্যাটসম্যানরা বড় স্কোর করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এমন সময় ক্লাসেন এবং ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে আসা অভিনব মনোহর ইনিংসটিকে সামলে নিয়েছে। উভয়ে ষষ্ঠ উইকেটের জন্য ৯৯ রানের দৃঢ় জুটি গড়ে দলকে ১৪৩/৮ স্কোরে পৌঁছিয়েছে। ক্লাসেন ৩৪ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেছে এবং শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ৭১ রান করেছে। অন্যদিকে অভিনব মনোহর ৩৭ বলে দুটি চার এবং তিনটি ছক্কার সাহায্যে ৪৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছে।

অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অনিকেত বর্মা ১২, আর প্যাট কামিন্স এবং হর্ষল প্যাটেল এক এক রান করেছে। বোলিংয়ে মুম্বইয়ের পক্ষে ট্রেন্ট বোল্ট সবচেয়ে সফল ছিলেন, যিনি চারটি উইকেট নিয়েছেন। দীপক চাহার দুটি এবং জসপ্রীত বুমরাহ একটি উইকেট নিয়েছে।

মুম্বইয়ের ইনিংস

১৪৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের শুরুটা ধীর ছিল, কিন্তু দলটি সংযম ও অভিজ্ঞতার সাহায্যে লক্ষ্য অর্জন করেছে। প্রথম আঘাতটি জয়দেব উনাদকট দিয়েছেন, যখন তিনি রায়ান রিকেল্টনকে মাত্র ১১ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এরপর রোহিত শর্মা এবং উইল জ্যাকস ইনিংসকে স্থিরতা দিয়েছেন। উভয়ে দ্বিতীয় উইকেটের জন্য ৪৬ বলে ৬৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েছে।

এই জুটি ভেঙে যায় যখন জিশান আনসারি উইল জ্যাকসকে অভিনব মনোহরের কাছে ক্যাচ আউট করিয়েছেন। জ্যাকস তার ইনিংসে দুটি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ২২ রান করেছেন। এরপর রোহিত শর্মার সাথে সূর্যকুমার যাদবের জুটি হয়। উভয় অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান দ্রুত রান সংগ্রহ করে এবং ৩২ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে আসে।

হিটম্যানের দুর্দান্ত ইনিংস, মুম্বইয়ের সহজ জয়

এই ম্যাচে হিটম্যান রোহিত শর্মা আবারও তার ক্লাসিক ব্যাটিং প্রদর্শন করে অর্ধশতক করেছেন। তিনি ৪৬ বলে দারুণ ৭০ রানের ইনিংস খেলেছেন। রোহিত তার অর্ধশতকের জন্য মাত্র ৩৫ বলে নিয়েছেন এবং এই সময়ে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫২.১৭। তিনি ইনিংসে দুটি চার এবং একটি ছক্কা মেরেছেন, যা মুম্বইয়ের ইনিংসকে শক্তিশালী করেছে।

তার সাথে সূর্যকুমার যাদবও ছিলেন, যিনি ৪০ রানের দ্রুতগতির এবং অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। উভয় ব্যাটসম্যানের জুটি ম্যাচের ধারা সম্পূর্ণরূপে মুম্বইয়ের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিলক বর্মা ২ রানে অপরাজিত থেকে গেছে এবং মুম্বই সহজেই লক্ষ্য অর্জন করেছে।

পয়েন্ট টেবিলে অবস্থান

এই জয়ের সাথে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ৯ ম্যাচে ৫ জয় এবং ৪ পরাজয় নিয়ে ১০ পয়েন্ট অর্জন করে তৃতীয় স্থান দখল করেছে। অন্যদিকে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ৮ ম্যাচে ২ জয় এবং ৬ পরাজয় নিয়ে নবম স্থানে রয়েছে।

Leave a comment