হেডিংলি টেস্টে শুভমন গিলের ঐতিহাসিক শতরান: ভারতের নতুন অধিনায়কের অসাধারণ অভিষেক

হেডিংলি টেস্টে শুভমন গিলের ঐতিহাসিক শতরান: ভারতের নতুন অধিনায়কের অসাধারণ অভিষেক
সর্বশেষ আপডেট: 21-06-2025

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেডিংলি টেস্ট ম্যাচে ভারতীয় দলের তরুণ অধিনায়ক শুভমন গিল ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। অধিনায়কত্বের নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করে শুভমন তার টেস্ট অধিনায়কত্ব অভিষেকেই চমৎকার এক শতরানের ইনিংস খেলে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

Ind vs Eng First Test 2025: ভারতীয় ক্রিকেটের এক নতুন যুগ শুভমন গিলের অধিনায়কত্বে শুরু হলো, এবং তিনি তার নেতৃত্বের প্রথম পরীক্ষাতেই ব্যাটে এমন এক প্রদর্শন করেছেন যা ক্রিকেটপ্রেমীদের মুগ্ধ করেছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্ট ম্যাচে শুভমন গিল তার অধিনায়কত্ব অভিষেককে স্মরণীয় করে তুলেছেন এক চমৎকার শতরানের ইনিংস খেলে। গিল কেবল দলকে শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেই দেননি, বরং ইতিহাসেও নিজের নাম লিখেছেন।

অধিনায়ক হওয়ার সাথে সাথেই ব্যাটে কথা বললো: ছয়তম টেস্ট শতরান

গিল অসাধারণ আত্মবিশ্বাস ও পরিপক্কতার সাথে ব্যাটিং করে ১৭৫ বলে ১২৭ রান করেছেন, যার মধ্যে ১৬টি চার ও একটি ছক্কা রয়েছে। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ছয়তম শতরান, যা তিনি তার ৩৪তম টেস্টে অর্জন করেছেন। সবচেয়ে বিশেষ বিষয় হলো, এই শতরান তিনি অধিনায়ক হিসেবে তার প্রথম টেস্ট ম্যাচেই করেছেন, যার ফলে তিনি টেস্ট অধিনায়কত্ব অভিষেকে শতরান করার ভারতের সবচেয়ে তরুণ ক্রিকেটার হয়েছেন।

তার আগে এই বিরল সাফল্য অর্জন করেছিলেন বিজয় হাজারে, সুনীল গাভাস্কার এবং বিরাট কোহলি, কিন্তু গিল বয়সের দিক থেকে এই তালিকায় নতুন এক মাইলফলক স্থাপন করেছেন।

ঝড়ো অর্ধশতক ও সংযত শতরান

গিল মাত্র ৫৬ বলে তার অর্ধশতক পূর্ণ করেছেন, যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ দ্রুততম অর্ধশতক। একদিকে তিনি প্রথমে আক্রমণাত্মক ছিলেন, অন্যদিকে শতরানের কাছাকাছি পৌঁছানোর সাথে সাথেই তিনি পুরোপুরি সংযম ও পরিপক্কতা প্রদর্শন করেছেন। গিলের এই ইনিংস আক্রমণাত্মকতা ও ধৈর্যের একটি আদর্শ উদাহরণ - যখন ভারত ৯২ রানে দুই উইকেট হারিয়েছিল।

কেএল রাহুল (৪২) এবং অভিষেককারী সাই সুদর্শন (০) প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর দলের একটি স্থিতিশীল ও নির্ভরযোগ্য ইনিংসের প্রয়োজন ছিল। শুভমন গিল এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন এবং যশস্বী জয়সওয়ালের সাথে মিলে তৃতীয় উইকেটের জন্য ১২৩ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণকে নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছেন।

দ্বিতীয় সেশনে উভয় ব্যাটসম্যান এমন এক আধিপত্য দেখিয়েছেন যে ইংল্যান্ডের বোলাররা উইকেটের জন্য তৃষ্ণার্ত থেকে গেছে। যশস্বী ১০১ রানের শতরানের ইনিংস খেলেছেন, কিন্তু তার আউট হওয়ার পরেও গিলের ধৈর্য্য ভাঙেনি।

ঋষভ পন্তের সাথে শক্তিশালী জুটি

যশস্বী জয়সওয়ালের আউট হওয়ার পর ঋষভ পন্ত ক্রিজে এসেছেন এবং গিলের সাথে মিলে স্কোরকে ৩০০-এর উপরে পৌঁছে দিয়েছেন। উভয়ে চতুর্থ উইকেটের জন্য অপরাজিত ১৩৮ রানের জুটি গড়েছেন। পন্তও এই সময় অর্ধশতক (৬৫ রান) করেছেন এবং দলের অবস্থাকে আরও শক্তিশালী করেছেন। গিলের অধিনায়কত্বে এই জুটি কেবল রানই নয়, আস্থারও সৃষ্টি করেছে, এমন এক আস্থা যা দলের ভেতরে এবং সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে থাকবে।

ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কিন্তু ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এই সিদ্ধান্তকে উল্টে দিয়ে প্রথম দিনেই ইংল্যান্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। প্রথম দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ভারত ৩ উইকেটে ৩৫৯ রান করে এবং পুরোপুরি ম্যাচের উপর নিয়ন্ত্রণ করেছে।

Leave a comment