৪৩ বছরে ধোনীর আইপিএল ইতিহাসে অভাবনীয় কীর্তি

৪৩ বছরে ধোনীর আইপিএল ইতিহাসে অভাবনীয় কীর্তি
সর্বশেষ আপডেট: 08-05-2025

ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে শান্ত ও চতুর ক্যাপ্টেনদের একজন মহেন্দ্র সিং ধোনী আবারও প্রমাণ করেছেন যে বয়স মাত্র একটি সংখ্যা। ৪৩ বছর বয়সে, যখন অধিকাংশ খেলোয়াড় ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন অথবা কোচিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন, তখন মাही মাঠে নতুন নতুন কীর্তি গড়ছেন।

খেলাধুলার খবর: ৪৩ বছর বয়সেও এমএস ধোনীর জল্বন্ততা অক্ষুণ্ণ রয়েছে এবং তিনি এমন একটি কীর্তি গড়েছেন যা ভাঙা আগামী বছরগুলিতে যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্য অত্যন্ত কঠিন হবে। আইপিএল ২০২৫-এর ৫৭তম ম্যাচে, কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে ধোনী আইপিএল ইতিহাসে ১০০ বার অপরাজিত থাকা প্রথম খেলোয়াড় হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। এই ম্যাচে তিনি ১৮ বলে একটি ছক্কার সাহায্যে ১৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন।

ধোনীর এই ইনিংস চেন্নাই সুপার কিংসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যারা দুটি বলে বাকি থাকতে কলকাতাকে দুই উইকেটে পরাজিত করে তাদের পরাজয়ের ধারা ভেঙে দিয়েছে। ১২ ম্যাচে এটি ছিল সিএসকে-র তৃতীয় জয়, যদিও দলটি ইতিমধ্যেই প্লেঅফের লড়াই থেকে বাদ পড়েছে।

ঐতিহাসিক ইনিংস, ঐতিহাসিক সংখ্যা

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস ১৮০ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল। যখন ম্যাচটি একটি সঙ্কটাপন্ন মোড়ে ছিল, ধোনী শেষ ওভারগুলিতে ক্রিজে এসে ১৮ বলে ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৭ রান করে অপরাজিত ফিরেছেন। তার এই শান্ত কিন্তু দায়িত্বশীল ইনিংস চেন্নাই সুপার কিংসের জন্য নির্ণায়ক ছিল এবং দলটি ১৯.৪ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে এই ম্যাচ জিতে নিয়েছে। এটি সিএসকে-র এই মৌসুমে ১২ ম্যাচে তৃতীয় জয়, যদিও দলটি ইতিমধ্যেই প্লেঅফের লড়াই থেকে বাদ পড়েছে।

অপরাজিত শতকের ‘রাজা’

ধোনীর এই ঐতিহাসিক পরিসংখ্যান বুঝতে আইপিএলে সর্বাধিকবার অপরাজিত থাকা খেলোয়াড়দের তালিকায় নজর দেওয়া যাক:

  • এমএস ধোনী - ১০০*
  • রবিচন্দ্রন জাদেজা - ৮০
  • কিরণ পোলার্ড - ৫২
  • দিনেশ কার্তিক - ৫০
  • ডেভিড মিলার - ৪৯

ফিনিশারের ভূমিকায় ধোনীর আধিপত্য

ফিনিশার হিসেবে ধোনীর কর্মজীবন একটি অনুকরণীয় উদাহরণ। তিনি বহুবার ভারত ও সিএসকে-কে শেষ ওভারগুলিতে কঠিন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করে জয় এনে দিয়েছেন। এই ম্যাচেও কিছুটা একই দেখা গেছে। যদিও তিনি কোনো বিস্ফোরক ইনিংস খেলেননি, কিন্তু তার উপস্থিতি এবং শান্ত স্বভাব কলকাতা নাইট রাইডার্সের উপর চাপ বজায় রেখেছে। এটি শুধুমাত্র রান তৈরির নয়, বরং চাপ সামাল দেওয়ার এবং সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের গাইড করার কলা, যা ধোনীকে মহান করে তোলে।

সিএসকে ভেঙে দিল পরাজয়ের ধারা

চেন্নাই সুপার কিংসের জন্য এই জয়টি ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ধারাবাহিক পরাজয়ের পর দলটি একটি বড় জয়ের খোঁজে ছিল। প্রথমে ব্যাটিং করে কেকেআর ৬ উইকেটে ১৭৯ রান করেছিল। জবাবে সিএসকে-র শুরু ভালো হয়নি, কিন্তু মধ্যক্রম এবং শেষে ধোনীর ইনিংস জয় নিশ্চিত করে। দলের পক্ষে আফগান স্পিনার নুর আহমেদ ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হন।

যদিও ধারণা করা হচ্ছে যে আইপিএল ২০২৫ ধোনীর শেষ মৌসুম হতে পারে, তবে তার পারফরম্যান্সে কোনো ঘাটতি দেখা যাচ্ছে না। তিনি এখনও উইকেটের পেছনে চটপটে এবং দল যখনই প্রয়োজন বোধ করে, তখন তিনি ব্যাট দিয়েও অবদান রাখছেন।

Leave a comment