উত্তরাখণ্ড সরকার মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে ‘অপারেশন সিন্দুর’ অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে ৫০,০০০-এরও বেশি ছাত্র ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহস ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারবে।
Uttarakhand: উত্তরাখণ্ড সরকার একটি ঐতিহাসিক ও সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামীর নেতৃত্বে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এখন থেকে ‘অপারেশন সিন্দুর’ রাজ্যের সকল স্বীকৃত মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশ্য হলো মাদ্রাসা শিক্ষায়ও দেশপ্রেম, সামরিক বীরত্ব এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর ত্যাগের গাথা পড়ানো।
বর্তমানে উত্তরাখণ্ডে প্রায় ৪৫১টি নিবন্ধিত মাদ্রাসা রয়েছে, যেখানে প্রায় ৫০,০০০-এরও বেশি ছাত্র পড়াশোনা করছে। এই সকল ছাত্র এখন ভারতীয় সেনাবাহিনীর বীরত্বের সাথে জড়িত ‘অপারেশন সিন্দুর’ এর মতো অনুপ্রেরণামূলক গাথার সাথে পরিচিত হবে।
নতুন পাঠ্যক্রমে কী থাকবে?
রাজ্য সরকার স্পষ্ট করেছে যে, ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে একটি সম্পূর্ণ অধ্যায় পাঠ্যক্রমে যোগ করা হবে। এতে অপারেশনের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক সম্পাদিত সাহসী কর্মকাণ্ড, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং দেশের প্রতি সমর্পণের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হবে। এই অধ্যায় কেবলমাত্র একটি ঐতিহাসিক সামরিক ঘটনাকে তুলে ধরবে না, বরং ছাত্রদের মধ্যে দেশপ্রেমের भावনাও জাগ্রত করবে।
অপারেশন সিন্দুর: সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নির্ণায়ক আঘাত
৬ ও ৭ মে মধ্যরাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ -এর অধীনে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি নির্ভুল ও সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK)-এ অবস্থিত ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে পর পর আক্রমণ চালায়।
এই ঘাঁটিগুলির সম্পর্ক জইশ-ই-মোহাম্মদ, লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদীন এর মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে ছিল। সেনাবাহিনীর এই অভিযানে ১০০-এরও বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়, যারা ভারতের বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করছিল।
কেবলমাত্র সন্ত্রাসীদের উপর আঘাত, সাধারণ নাগরিকদের কোন ক্ষতি হয়নি
‘অপারেশন সিন্দুর’ -এর সবচেয়ে বিশেষ দিক হলো, এতে ভারতীয় সেনাবাহিনী কেবলমাত্র সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করেছে, কোনও পাকিস্তানি সামরিক প্রতিষ্ঠান বা সাধারণ নাগরিকের উপর কোনও আক্রমণ করা হয়নি। এটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্ভুলতা (precision) এবং শৃঙ্খলা (discipline) -এর স্পষ্ট উদাহরণ।
কেন এই পদক্ষেপ প্রয়োজন?
উত্তরাখণ্ড সরকারের এই সিদ্ধান্ত শিক্ষায় জাতীয়তাবাদের অন্তর্ভুক্তির অংশ। সাধারণত মাদ্রাসার পড়াশোনা ধর্মীয় শিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ বলে মনে করা হয়, কিন্তু এখন দেশপ্রেম ও জাতীয় নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত অধ্যায়ও পড়ানো হবে।
এর ফলে কেবলমাত্র ছাত্ররা ভারতীয় সেনাবাহিনীর শক্তি ও সমর্পণ সম্পর্কে জানতে পারবে না, বরং তাদের নৈতিক ও মানসিক উন্নয়নও হবে। রাজ্য সরকার মনে করে যে, সকল ছাত্রকে, তারা যে কোনও বোর্ড বা পটভূমি থেকেই আসুক না কেন, দেশের ইতিহাস ও নিরাপত্তা নীতি সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত।
উত্তরাখণ্ডে কতগুলি মাদ্রাসা আছে?
উত্তরাখণ্ড সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ৪৫১টি মাদ্রাসা রাজ্য মাদ্রাসা বোর্ডে নিবন্ধিত। তবে প্রায় ৫০০-এরও বেশি মাদ্রাসা নিবন্ধন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হলো শিক্ষাকে একীভূত করে সকল শিশুকে সমানভাবে জাতীয়তাবাদী শিক্ষা প্রদান করা।