বর্তমানে দেশের বহু রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গালের প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে, যার ফলে সেখানকার পরিস্থিতি বেশ খারাপ হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রবল বাতাস, ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গাল: পুদুচেরিতে ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গালের কারণে অবিরত ভারী বৃষ্টিপাত রাজ্যটিকে অভূতপূর্ব সংকটের মুখে ফেলে দিয়েছে। পুদুচেরির ৩০ বছরের ইতিহাসে এত বেশি বৃষ্টিপাত কখনোই রেকর্ড করা হয়নি। তবুও, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এখনও শেষ হয়নি। শিশুদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে, পুদুচেরি সরকার আজ আবার সকল স্কুল ও কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে।
শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন
পুদুচেরির শিক্ষামন্ত্রী এ. নমসিভায়ম জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গালের প্রভাবে রাজ্যে এখনও ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অতএব, ৩ ডিসেম্বর সকল সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুল এবং বেসরকারি স্কুলসহ সকল কলেজ বন্ধ থাকবে। শিশুদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, তামিলনাড়ুর বিল্লুপুরম ও কুড্ডালোর জেলায়ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে স্কুল ও কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন
পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী এন রাঙ্গাস্বামী ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গাল এবং সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির জন্য সহায়তার ব্যবস্থা ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে ১ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪৮.৪ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা এই অঞ্চলে আগে কখনো দেখা যায়নি। এই বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং তাদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
কৃষি ও মৎস্যজীবীদের জন্য ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ও বৃষ্টিপাতের ফলে ১০,০০০ হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ৩০,০০০ টাকা করে প্রতি হেক্টর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পাশাপাশি, নৌকার ক্ষতির জন্য মৎস্যজীবীদের ১০,০০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গরু হারানোর জন্য দুগ্ধকৃষকদের ৪০,০০০ টাকা এবং বাছুর হারানোর জন্য ২০,০০০ টাকা দেওয়া হবে। এছাড়াও, যাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, তাদের ২০,০০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
১০০ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় সাহায্যের দাবি
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুদুচেরি সরকার কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রণালয়কে একটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে ১০০ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় সাহায্যের দাবি করা হয়েছে। পুদুচেরিতে ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গালের প্রভাব কমলেও এখনও ভারী বৃষ্টিপাত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার ফলে রাজ্য সরকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।