দিল্লি-এনসিআরে এখন প্রচণ্ড গরম পড়েছে, আর আবহাওয়া দপ্তর লু-র আশঙ্কায় ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করেছে। তাদের মতে, আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে গরম আর উৎকটতা বৃদ্ধি পাবে।
আবহাওয়ার আপডেট: জাতীয় রাজধানী দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকায় গরম মানুষের পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরেই রয়েছে এবং আগামী দিনগুলিতে আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আবহাওয়া দপ্তর আজ ও কাল দিল্লি-এনসিআরে লু চলার সম্ভাবনা জানিয়ে ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করেছে।
এই সময় দিনের তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ থেকে ২৫ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে। বাতাসের বেগ ১০ থেকে ২০ কিমি প্রতি ঘন্টা থাকতে পারে, কিন্তু এটি স্বস্তি নয় বরং গরম বাতাসের ইঙ্গিত। ২৬ এপ্রিল সকালে হালকা বৃষ্টি হতে পারে, কিন্তু তাতে তাপমাত্রায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
গরমের সবচেয়ে বেশি প্রভাব দুপুর ও সন্ধ্যার সময় দেখা যাচ্ছে, যখন রাস্তায় নীরবতা ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষ ঘরে আবদ্ধ থাকে। স্কুলগুলিতেও বাচ্চাদের গরম থেকে রক্ষা করার জন্য সময়সূচী পরিবর্তন এবং অতিরিক্ত ছুটির সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
রাজস্থান: মরুভূমির গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা
রাজস্থানে গরম তার শুষ্ক ও কঠোর স্বভাব পুরোপুরি দেখাতে শুরু করেছে। আবহাওয়া দপ্তর জয়পুরের মতে, রাজ্যে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় তীব্র বৃদ্ধি দেখা গেছে। বাড়মেরে ৪৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৩.৩ ডিগ্রি বেশি। রাজ্যের অধিকাংশ এলাকায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ খুবই কম ছিল, মাত্র ৬ থেকে ৫৩ শতাংশের মধ্যে।
আগামী কয়েকদিনে রাজস্থানের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা আরও ২ থেকে ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বিকারনেয়র, জোধপুর, জয়সলমের, শ্রীগঙ্গানগর ও চুরু ইত্যাদি এলাকা এই গরমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে।
ওড়িশা: বেশ কিছু জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট
পূর্ব ভারতের ওড়িশাও এবার গরমের নতুন রেকর্ড গড়ছে। রাজ্যের সুন্দরগড়, সম্বলপুর, সোনপুর, বোলানগির ও বারগড় জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে, যখন কালাহান্ডি, দেবগড়, অঙ্গুল ও নুয়াপাড়া জেলায় ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রাজ্যের কিছু এলাকায় পারদ ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছেছে, যার ফলে জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে সম্বলপুর ও সুন্দরগড়ে রাতের তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি, যার ফলে মানুষ রাতেও গরম থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
আবহাওয়া দপ্তর সতর্ক করেছে, যদি পরিস্থিতি এমনই থাকে তাহলে বেশ কিছু জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিদের বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করার প্রয়োজন।
ঝাড়খণ্ড: ডালটনগঞ্জ সবচেয়ে গরম স্থান
ঝাড়খণ্ডের বেশ কিছু জেলায় গরমের ঢেউ মানুষকে বিরক্ত করছে। বিশেষ করে ডালটনগঞ্জে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা রাজ্যের জন্য একটি বিপদের ঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে। রাঁচি, সিমডেগা, পূর্ব ও পশ্চিম সিংভুম, সারাইকেলা-খরসওয়ান ইত্যাদি জেলায়ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে রয়েছে। রাজ্য আবহাওয়া বিজ্ঞান কেন্দ্রের উপ-পরিচালক অভিষেক আনন্দের মতে, দক্ষিণ ঝাড়খণ্ড ও সাঁথাল পরগনা অঞ্চলেও তাপমাত্রা উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং অন্তত আগামী তিন দিন তাতে কোনো বিশেষ হ্রাসের আশা করা যাচ্ছে না।
২৬ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় জলের উৎস শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে এবং কৃষিকাজও ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করেছে। গরম বাতাসের কারণে স্কুল ও অফিসে উপস্থিতি কমে যাচ্ছে।