প্রধানমন্ত্রী মোদীর আসন্ন আমেরিকা সফর: ভারতের জন্য ৬টি বড় সুবিধা

প্রধানমন্ত্রী মোদীর আসন্ন আমেরিকা সফর: ভারতের জন্য ৬টি বড় সুবিধা
সর্বশেষ আপডেট: 30-01-2025

প্রধানমন্ত্রী মোদী পরবর্তী মাসে, ফেব্রুয়ারীতে, আমেরিকা সফরে যেতে পারেন। এই সফর কূটনীতি ও ব্যবসার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে, যা ভারতকে ৬টি বড় সুবিধা দিতে পারে।

PM মোদী: আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর PM মোদী ও ট্রাম্পের মধ্যে প্রথমবারের মতো টেলিফোনে আলাপ হয়। এখন খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, PM মোদী পরবর্তী মাসে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারীতে, আমেরিকা সফর করতে পারেন। এই সফর কেবল কূটনীতি ও ব্যবসার দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এর ফলে ভারত অনেক বড় সুবিধা পেতে পারে। এখানে পুরো বিস্তারিত জেনে নিন।

ট্রাম্প ও PM মোদীর টেলিফোনে আলাপ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর PM মোদী তাকে টেলিফোনে অভিনন্দন জানান। দুই নেতার মধ্যে এই আলাপ কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাড়তে থাকা বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। PM মোদী এই আলাপে বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য দুই দেশের সহযোগিতার উপর জোর দেন। PM মোদী টুইট করে বলেন যে, ভারত ও আমেরিকা পারস্পরিক লাভ ও বিশ্বাসযোগ্য অংশীদারিত্বের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

অবৈধ অভিবাসীদের ভারতে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা

ট্রাম্প ও PM মোদীর আলাপের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অবৈধ অভিবাসীদের। আমেরিকা প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা করে। দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ট্রাম্পের 'টেলিফোন' কূটনীতি ও ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক

চীনের বিরুদ্ধে তার কঠোর নীতির জন্য পরিচিত ট্রাম্প চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাথেও টেলিফোনে আলাপ করেছিলেন। অন্যদিকে, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার জন্য PM মোদীর আসন্ন সফর থেকে অনেক লাভ হতে পারে।

ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে আরও গভীর হবে অংশীদারিত্ব

১. কোয়াডের সম্মেলন ও ভারত-আমেরিকার ঘনিষ্ঠতা: এই বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলা কোয়াড সম্মেলন ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে পারে। এই সম্মেলনের সময় দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা দেখা যাবে, বিশেষ করে চীনের বিরুদ্ধে।

২. ট্যারিফ নিয়ে আলোচনা: PM মোদীর সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে ট্যারিফ নীতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে। এর ফলে ভারত বাণিজ্যে সুবিধা পেতে পারে, বিশেষ করে ইস্পাত, ব্যয়বহুল মোটরসাইকেল ও ইলেকট্রনিক পণ্যের উপর ট্যারিফ হ্রাস সম্ভব হতে পারে।

৩. হিন্দ-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের আগ্রাসী নীতি রোধ করা: PM মোদী ও ট্রাম্পের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে হিন্দ-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতে পারে। দুই দেশের প্রতিরক্ষা সম্পর্কও শক্তিশালী, যা এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব কমাতে সাহায্য করবে।

৪. প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা: ভারত ও আমেরিকার মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ইতোমধ্যেই শক্তিশালী। PM মোদীর সফরের ফলে ভারতের প্রতিরক্ষা খাত আরও শক্তিশালী হতে পারে, বিশেষ করে যুদ্ধবিমান তেজসের জন্য ইঞ্জিন সরবরাহে বিলম্ব দূর করা সম্ভব হতে পারে।

৫. প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা: চীনের আধিপত্যের মোকাবেলা করার জন্য আমেরিকা ও ভারত একসাথে কাজ করতে পারে, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর খাতে। এর ফলে দুই দেশই প্রযুক্তিগত লাভ পেতে পারে এবং চীনের আধিপত্য কমাতে পারে।

৬. কৌশলগত অংশীদারিত্বের বৃদ্ধি: ভারত ও আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে ভারত আমেরিকাকে ১৯১.৮ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে, যার মধ্যে ১১৮ বিলিয়ন ডলার 'রপ্তানি' ছিল। এটি দুই দেশের সম্পর্কের আরও শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

Leave a comment