বিশ্বজুড়ে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ রোধে বিভিন্ন আইন তৈরি হয়েছে, কিন্তু অনেক দেশেই আজও এই অপরাধ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নয়াদিল্লি: বিশ্বজুড়ে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ রোধে বিভিন্ন আইন তৈরি হয়েছে, কিন্তু অনেক দেশেই আজও এই অপরাধ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে যেখানে এই অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর আইনের দাবী ক্রমাগত উঠছে, সেখানে আমাদের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে এমন আইন প্রয়োগ করা হয়েছে যা শুনলেই অপরাধীদের রুহ কাঁপে। পাকিস্তানে ধর্ষণের দোষীদের নপুংসক করার শাস্তি দেওয়া হয়।
পাকিস্তানে ধর্ষণের ঘটনায় চমকপ্রদ তথ্য
পাকিস্তানে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে যে তথ্য সামনে এসেছে, তা অত্যন্ত ভয়াবহ। ২০২৩ সালে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হামিদ মীর একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে উন্মোচন করেছিলেন যে পাকিস্তানে ৮২% ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীরই আত্মীয়-স্বজন। এর মধ্যে পিতা, ভাই, চাচা, মামা, দাদা এবং নানা প্রমুখ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি রয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তানে প্রতি দুই ঘণ্টায় একটি করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
২০২০ সালে প্রয়োগ করা হয়েছিল অ্যান্টি-রেপ অর্ডিন্যান্স
পাকিস্তানে ধর্ষণের বর্ধমান ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালে ইমরান খানের সরকার অ্যান্টি-রেপ অর্ডিন্যান্স ২০২০ অনুমোদন করে। এই আইনের অধীনে ধর্ষণের দোষীদের কেমিক্যাল কাস্ট্রেশন (রাসায়নিক নপুংসকতা) এর শাস্তি দেওয়া হয়। অর্থাৎ দোষীকে একটি বিশেষ ইনজেকশন দেওয়া হয় যার ফলে সে স্থায়ীভাবে নপুংসক হয়ে যায়। সরকার এই শাস্তি প্রয়োগ করেছে যাতে অপরাধীদের মনে ভয় সৃষ্টি হয় এবং তারা আর এই ধরনের কাজ না করে।
পাকিস্তানে ধর্ষণ মামলার তদন্তে কোনও ধরণের অবহেলা করলে পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তাদের তিন বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়াও, যদি কেউ ধর্ষণের ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ করে, তাকেও আইনগত শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়।
কী এই কঠোর আইন দ্বারা অপরাধ রোধ হয়েছে?
যদিও পাকিস্তান ধর্ষণের দোষীদের জন্য কঠোর আইন তৈরি করেছে, তবে বাস্তবতা এখনও উদ্বেগজনক। ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পাকিস্তানে ২১,৯০০ ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে, কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে এই সংখ্যা বাস্তবতার চেয়ে অনেক কম, কারণ সামাজিক ভয়ের কারণে অনেক মামলা রুজুই হয় না।
ভারতেও কঠোর আইনের দাবী উঠেছে
ভারতেও বারবার ধর্ষকদের জন্য কঠোর শাস্তির দাবী উঠেছে। নির্ভয়া কাণ্ডের পর দেশে অনেক নতুন আইন তৈরি হয়েছে, কিন্তু এখনও মানুষ ধর্ষকদের জন্য ফাঁসি বা নপুংসক করার মতো শাস্তির পক্ষে মতামত পোষণ করে। পাকিস্তানের মতো ভারতেও এমন আইন প্রয়োগ হবে কি না, তা একটি বড় প্রশ্ন।