ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইরানকে আক্রমণ করার হুমকি দিয়েছেন, যা আমেরিকাকে অবহিত না করেই করা হবে। এই পদক্ষেপে আমেরিকা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে যখন দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা চলছে।
ইরান-ইসরাইল: প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইল যেকোনো সময় আমেরিকাকে অবহিত না করে ইরানে আক্রমণ চালাতে পারে। আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনা চলাকালীন এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। আমেরিকার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে যে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই আলোচনাকে ব্যর্থ করার জন্য ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন।
ইসরাইলের আক্রমণের ভয় আমেরিকার
আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সতর্ক করে দিয়েছে যে ইসরাইল তাদের যেকোনো বড় আক্রমণের আগে আমেরিকাকে অবহিত করার সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর নির্দেশ পাওয়ার মাত্র সাত ঘন্টার মধ্যেই ইসরাইল ইরানে আক্রমণ চালাতে পারে। এই উদ্বেগ আমেরিকার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে।
ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা
সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ফিলিস্তিন নিয়ে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সম্প্রতি মুসলিম দেশগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং গাজায় জায়োনি শাসনের অভিযুক্ত নিষ্ঠুরতা নিয়ে পাকিস্তান ও ইরানের সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ইসলামি বিশ্বের জন্য ফিলিস্তিনের বিষয়টিকে একটি কেন্দ্রীয় উদ্বেগ বলে উল্লেখ করেছেন।
খামেনির বার্তা এবং মুসলিম ঐক্যের আহ্বান
আয়াতুল্লাহ খামেনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের মাধ্যমে বলেছেন, "গাজায় জায়োনি শাসনের অপরাধ বন্ধ করার জন্য ইরান ও পাকিস্তানকে একত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।" তিনি ফিলিস্তিনের বিষয়টিকে ইসলামি বিশ্বের অগ্রাধিকার হিসাবে উল্লেখ করে মুসলিম দেশগুলির মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন।
আমেরিকার উদ্বেগের কারণ
আমেরিকা এই পুরো বিষয়ে তাদের গভীর সন্দেহ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আমেরিকার কর্মকর্তারা মনে করেন, ইসরাইল যদি হঠাৎ ইরানে আক্রমণ করে, তাহলে এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বিশ্ব কূটনীতি উভয়ের জন্যই গুরুতর হুমকি হবে। বিশেষ করে যখন আলোচনার সময় এমন ঘটনা ঘটে, তখন পারমাণবিক চুক্তিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
নেতানিয়াহুর হুমকি: আলোচনায় বাধা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু আলোচনাকে ব্যর্থ করার জন্য ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলোতে আক্রমণের হুমকি দিয়েছেন। এই ইঙ্গিত স্পষ্ট করে যে ইসরাইল তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে। এই উত্তেজনার ফলে ভারত এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যও উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে কারণ এটি সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া
এই খবরের পর সোশ্যাল মিডিয়ায়ও এই বিষয় নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে। বিশ্বের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই হুমকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকে আমেরিকাকে আহ্বান জানাচ্ছেন যেন তারা কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়ে এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে যাতে ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধের মতো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।