যারা আগে ‘Say No to War’ বলেছিলেন, তারাই এখন যুদ্ধবিরতির উপহাস করছেন। মোদী-বিরোধী তাদের চিন্তাধারা পরিস্থিতি অনুযায়ী বদলাচ্ছে।
India-Pak Ceasefire: একদিকে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের উত্তেজনা চরমে উঠেছিল, তখন “Say No to War” এবং “De-escalate Now” স্লোগান সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। কিন্তু সরকার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার সাথে সাথেই, যারা গতকাল পর্যন্ত শান্তির বার্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তারাই এখন যুদ্ধবিরতির উপহাস করতে শুরু করেছেন।
এই দ্বিচারিতা শুধুমাত্র চিন্তার অস্থিরতা নয়, বরং রাজনীতি-প্রেরিত কৌশল বলে মনে হয়।
যুদ্ধবিরতি দুর্বলতা নাকি বিবেক?
যুদ্ধবিরতিকে কেউ কেউ সরকারের দুর্বলতা বলে মনে করছেন, তাহলে প্রশ্ন উঠে, শান্তির পথ অবলম্বন করা কি সবসময় একটি দুর্বল পদক্ষেপ? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যুদ্ধের উত্তেজনাকে শান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে দেশকে অপ্রয়োজনীয় রক্তপাত ও অস্থিরতা থেকে রক্ষা করা যায়। কিন্তু বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, তাদের অগ্রাধিকার সমস্যার সমাধান নয়, বরং সর্বোপরি বিরোধ।
মোদীর পদক্ষেপ এবং বিরোধের গণিত
যদি প্রধানমন্ত্রী মোদী যুদ্ধ চালিয়ে যেতেন, তাহলে এই শ্রেণীই তাকে ‘যুদ্ধপিপাসু’ ও আক্রমণাত্মক নেতা বলে আখ্যায়িত করতো। এখন যখন তিনি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সমাধানের পথ বেছে নিয়েছেন, তখন তাও সমালোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ কথা স্পষ্ট—বিরোধের এজেন্ডা আগে থেকেই নির্ধারিত, কারণ যাই হোক না কেন।
শান্তির দাবী কি একতরফা হয়?
যখন মানুষ ‘Say No to War’ স্লোগান নিয়ে চলে, তখন তা শুধুমাত্র একটা সময় বা পরিস্থিতির জন্য নয়। এটি একটি স্থায়ী চিন্তাধারা হওয়া উচিত, যা প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য। কিন্তু আজ যেভাবে কিছু মানুষ শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভিত্তিতে তাদের শান্তির সংজ্ঞা বদলাচ্ছে, তা শুধু নীতিবিদ্যার উপর প্রশ্ন তুলছে না, বরং তাদের এজেন্ডাও উন্মোচন করছে।
বিশ্বব্যাপী উদাহরণ এবং বিরোধ
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশ ও গণমাধ্যম একসুরে যুদ্ধের প্রতিবাদ করেছিল, কিন্তু যখন গাজা, ইয়েমেন অথবা অন্যান্য সংঘাতগ্রস্ত এলাকার কথা এল, তখন সেই একই সুর নিঃশব্দ হয়ে গেল। এই দ্বিমুখী মনোভাব বোঝায় যে যুদ্ধবিরোধী চিন্তাধারাকেও রাজনীতির তুলায় তোলা হচ্ছে।
‘Say No to War’ একটি গুরুত্বপূর্ণ চিন্তাধারা, যা গান্ধী, ম্যান্ডেলা ও লুথার কিং-এর মতো নেতারা গ্রহণ করেছিলেন। যদি এই স্লোগান শুধুমাত্র রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হয়, তাহলে তার অর্থ হারিয়ে যাবে। শান্তির দাবী তখনই প্রকৃত বলে মনে হবে যখন তা প্রতিটি সংঘাতে, প্রতিটি দেশে এবং প্রতিটি পরিস্থিতিতে সমানভাবে প্রযোজ্য হবে।