ইরান ইসরাইলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যাতে তিনজন নিহত হয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল হুঁশিয়ারি দিয়েছে—যদি আক্রমণ পুনরায় করা হয়, তাহলে তেহরানকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়েছে।
Israel-Iran: মধ্যপ্রাচ্য আবারও গুরুতর যুদ্ধের ঝুঁকির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এখন প্রকাশ্য যুদ্ধে রূপান্তরিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। শনিবার সকালে ইরান ইসরাইলের উপর পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যাতে তিনজন ইসরাইলি নাগরিক নিহত হয়েছে এবং ১৯ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কেবল ইসরাইল নয়, পুরো বিশ্বের উদ্বেগ বৃদ্ধি করেছে।
ইরানের পাল্টা ব্যবস্থা
ইরান ইসরাইলের উপর প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইসরাইলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রকে পথিমধ্যেই ধ্বংস করে দিয়েছে, কিন্তু কিছু ক্ষেপণাস্ত্র তেল আবিব ও যিরুশালেমের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পড়েছে। ফলে প্রাণহানি ও ক্ষতি হয়েছে।
তেল আবিবের বেলিংসন হাসপাতাল জানিয়েছে, হামলায় একজন নারী নিহত হয়েছে, আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে আরও সাতজন আহতের চিকিৎসা চলছে। ইসরাইলের ফায়ার সার্ভিসের মতে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র শহরের একটি ভবনে ক্ষতি করেছে, আরও চারটি বাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরাইলের প্রতিশোধ
এর আগে ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনায় এয়ার স্ট্রাইক করেছিল। ইসরাইল বলেছে, এই হামলা ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা রোধ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, যাতে তারা ভবিষ্যতে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে।
ইসরাইল এই হামলায় যুদ্ধজাহাজ ও উন্নত ড্রোন ব্যবহার করেছে। রিপোর্ট অনুসারে, হামলায় ইরানী সেনাবাহিনীর অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও লক্ষ্যবস্তু ছিলেন। এই সামরিক অভিযানের পরেই ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
তেহরানকে ইসরাইলের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াব গ্যালেন্ট এবং ইসরাইল কাটজ স্পষ্ট ভাষায় ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ইসরাইল কাটজ তার কঠোর বক্তব্যে বলেছেন, “যদি ইরান আবার ইসরাইলের উপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, তাহলে তেহরান আগুনে পুড়ে যাবে।” তিনি আরও বলেছেন, ইরানী স্বৈরশাসক তার নিজের নাগরিকদের বিপদে ফেলছে এবং রাজধানী তেহরান এর সবচেয়ে বড় দাম চুকাতে হবে। এই বক্তব্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পরে এসেছে, যেখানে আইডিএফ প্রধান স্টাফ, মোসাদের পরিচালক এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বযুদ্ধের আভাস?
বিশ্লেষকদের মতে, যদি এই সংঘর্ষ আরও বাড়ে, তাহলে এর প্রভাব কেবল মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমেরিকা, রাশিয়া, চীন এবং ইউরোপীয় দেশগুলির কৌশলগত নীরবতা বর্তমানে উদ্বেগের বিষয়। তেলের দাম দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
ইসরাইলে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সতর্ক অবস্থায়
হামলার পর ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনী পুরোপুরি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সকল প্রধান শহরে এয়ার ডিফেন্স শক্তিশালী করা হয়েছে। স্কুল, হাসপাতাল ও জনসাধারণের স্থানে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।