ব্রিটেনে ইউক্রেন নিরাপত্তা সম্মেলন: পোল্যান্ডের বক্তব্যে আমেরিকার অসন্তোষ

ব্রিটেনে ইউক্রেন নিরাপত্তা সম্মেলন: পোল্যান্ডের বক্তব্যে আমেরিকার অসন্তোষ
সর্বশেষ আপডেট: 03-03-2025

ব্রিটেনে সিকিউরিটি সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ইউরোপীয় দেশগুলি ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং শান্তি পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছে। এর আগে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আমেরিকাকে অসন্তুষ্ট করতে পারে।

UK: ব্রিটেনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিকিউরিটি সামিটের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে ইউরোপীয় দেশগুলি ঐক্য প্রদর্শন করে ইউক্রেনের নিরাপত্তা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছে। এই শীর্ষ সম্মেলনে ইউরোপীয় নেতারা যুদ্ধের অবসানের প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার এবং ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি, ইউরোপের প্রতিরক্ষা নীতি আরও শক্তিশালী করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য

এই সামিটের আগে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এমন একটি বক্তব্য দিয়েছেন যা আলোচনাকে তীব্র করে তুলেছে। তিনি ইউরোপের প্রতিরক্ষা এবং আমেরিকার উপর নির্ভরতাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

তিনি বলেছেন,
"এটা একটা বিরোধীতা যে ৫০ কোটি ইউরোপীয় ৩০ কোটি আমেরিকানের কাছে আবেদন করছে যাতে তারা ১৪ কোটি রুশ মানুষের কাছ থেকে তাদের রক্ষা করে।"

টাস্ক এই পরিস্থিতিকে "ইউরোপের দ্বিধা" বলে উল্লেখ করে বলেছেন যে ইউরোপীয় দেশগুলিকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য শক্তিশালী হতে হবে এবং এই নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তার এই বক্তব্য আমেরিকাকে পছন্দ হবে না, কারণ এটি ইঙ্গিত করে যে ইউরোপকে আর আমেরিকার সাহায্যের উপর নির্ভর করতে হবে না।

ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির সাক্ষাতে উত্তেজনা বৃদ্ধি

সম্প্রতি ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি আমেরিকা সফর করেছেন, যেখানে তিনি ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাত করেছেন। এই সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দুই নেতার মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়েছে।

ট্রাম্প রাগে বলেছেন,
"জেলেনস্কির জেদে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা বেড়ে গেছে।"

অন্যদিকে, জেলেনস্কি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ইউক্রেন রাশিয়াকে তার এক ইঞ্চি জমিও দেবে না। এই বৈঠকের পর ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। এমনকি দুই দেশের মধ্যে খনিজ সম্পর্কিত চুক্তিতেও সম্মতি হয়নি।

ইউরোপীয় দেশগুলি ইউক্রেনের জন্য শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করেছে

এদিকে, ইউরোপীয় দেশগুলি ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য একটি শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কির স্টার্মার বলেছেন যে
"ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে সম্মতি হয়েছে। এখন এই পরিকল্পনা আমেরিকার সামনে উপস্থাপন করা হবে।"

এছাড়াও, ইউরোপীয় নেতারা প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধি করার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন, যাতে ইউক্রেনকে সাহায্য আরও কার্যকর করা যায়।

আমেরিকা কি ইউক্রেনকে সাহায্য বন্ধ করে দেবে?

এই সম্পূর্ণ পরিস্থিতির পর এখন বড় প্রশ্ন হলো, আমেরিকা কি ইউক্রেনকে দেওয়া সাহায্য বন্ধ করে দিতে পারে? ট্রাম্পের তীব্র বক্তব্য এবং ইউক্রেনের সাথে মতবিরোধের পর আমেরিকার সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্যের উপর হুমকি দেখা দিয়েছে।

ইউরোপ এখন মনে করছে যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তাকে নিজের সামরিক শক্তি বাড়াতে হবে। তাই, ব্রিটেন এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ তাদের প্রতিরক্ষা নীতি শক্তিশালী করার উপর জোর দিচ্ছে।

Leave a comment