ব্রিটিশ কর্নেলের সতর্কতা: রাশিয়ার ইউক্রেনে পারমাণবিক আঘাতের আশঙ্কা

ব্রিটিশ কর্নেলের সতর্কতা: রাশিয়ার ইউক্রেনে পারমাণবিক আঘাতের আশঙ্কা
সর্বশেষ আপডেট: 07-06-2025

ব্রিটিশ কর্নেল রিচার্ড কেম্প সতর্ক করেছেন যে রাশিয়া ইউক্রেনে পারমাণবিক আঘাত হানতে পারে। এই পদক্ষেপ যুদ্ধকে আরও ভয়াবহ করে তুলবে এবং বিশ্বশান্তির জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করবে।

প্রতিরক্ষা সংবাদ: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধে সম্প্রতি একটি গুরুতর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কর্নেল রিচার্ড কেম্প সতর্ক করেছেন যে, রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে রাশিয়া ইউক্রেনে পারমাণবিক আঘাত হানতে পারে। এই বিবৃতি তখন এসেছে যখন উভয় দেশের মধ্যে সংঘর্ষ তীব্রতর হচ্ছে। যদি এমন হয়, তাহলে শুধুমাত্র ইউক্রেন নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

ব্রিটিশ কর্নেল রিচার্ড কেম্পের সতর্কবার্তা

কর্নেল রিচার্ড কেম্প বলেছেন যে, রাশিয়া কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, বিশেষ করে ইউক্রেনের বিমানবন্দর এবং সামরিক ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে। তিনি মনে করেন পুতিন এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তাঁর বিরোধীদের ভয় দেখাতে এবং যুদ্ধে নিজের দখল মজবুত করতে চান। কেম্প আরও বলেছেন যে বিশ্বের অনেক নেতার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো কঠোর প্রতিক্রিয়া আসতে পারে না, কারণ তারা পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকির প্রতি সচেতন কিন্তু সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারছেন না।

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের অবস্থা

রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করেছিল, যার পর থেকেই এই সংঘর্ষ চলছে। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ইউক্রেন আমেরিকা থেকে পাওয়া দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার অনেক ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছে। এই কারণে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রাগার

রাশিয়ার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক অস্ত্রাগার রয়েছে। এর অধীনে প্রায় ৫,৮৮৯ টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১,৬৭৪ টি স্থাপন করা হয়েছে। আমেরিকার কাছে প্রায় ৫,২৪৪ টি ওয়ারহেড রয়েছে, যখন ব্রিটেনের কাছে ২২৫ টি ওয়ারহেড রয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে রাশিয়া তাদের পারমাণবিক নীতিতে পরিবর্তন করেছে, যেখানে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, যদি কোনও অ-পারমাণবিক দেশ (যেমন ইউক্রেন) কোনও পারমাণবিক দেশের (যেমন আমেরিকা) সমর্থনে রাশিয়ার উপর আক্রমণ করে, তাহলে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

পূর্বেও পারমাণবিক হুমকি দেওয়া হয়েছে

গত কয়েক বছরে রাশিয়া বারবার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার টেলিভিশন চ্যানেলগুলি লন্ডন, প্যারিস এবং বার্লিনের মতো ইউরোপীয় শহরগুলিতে পারমাণবিক আক্রমণের কথা বলেছিল। রাশিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি দিমিত্রি মেদভেদেভও ২০২৩ সালে সতর্ক করেছিলেন যে, যদি পশ্চিমা দেশ ইউক্রেনকে পারমাণবিক অস্ত্র দেয়, তাহলে রাশিয়া প্রতিশোধ নেবে। পশ্চিমা দেশগুলি যদিও এই হুমকিগুলিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে বলেছে যে, এখনও পর্যন্ত পারমাণবিক আক্রমণের কোনও নিশ্চিত প্রস্তুতি দেখা যায়নি।

পারমাণবিক আক্রমণের সম্ভাবনা

কর্নেল কেম্প মনে করেন যে, পুতিন শুধুমাত্র তাঁর শক্তি প্রদর্শনের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন, যদিও এর ফলে সামরিক সুবিধা কম হবে। একটি পারমাণবিক আক্রমণে শুধুমাত্র ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিই নয়, আশেপাশের এলাকা ও মানুষও গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। এতে রাশিয়ার নিজস্ব সৈন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। এছাড়াও, যদি রাশিয়া এমন পদক্ষেপ নেয়, তাহলে আন্তর্জাতিক স্তরে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে এবং অন্যান্য দেশও প্রতিশোধ নিতে পারে।

Leave a comment