১০০ বছরের পুরনো শিব মন্দিরের জমি দখল: সরকারের কাছে সুরক্ষার দাবি

১০০ বছরের পুরনো শিব মন্দিরের জমি দখল: সরকারের কাছে সুরক্ষার দাবি
সর্বশেষ আপডেট: 22-05-2025

পাকিস্তানের সিন্ধুতে ১০০ বছরের পুরনো শিব মন্দিরের জমি দখল করেছে কিছু লোক। হিন্দু নেতা শিবা কাছি সরকারের কাছে সুরক্ষা ও নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

সিন্ধু, পাকিস্তান — পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের টান্ডো জাম শহরের কাছে অবস্থিত ১০০ বছরের পুরনো একটি শিব মন্দিরের জমি অবৈধভাবে দখলের খবর সামনে এসেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দারাওয়ার ইত্তেহাদ সংগঠনের প্রধান এবং হিন্দু সমাজের সক্রিয় প্রতিনিধি শিবা কাছি পাকিস্তান সরকারের কাছে মন্দির ও তার জমি রক্ষা করার আবেদন জানিয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় কণ্ঠ উঠেছে

শিবা কাছি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে পুরো ঘটনাটি সামনে এনেছেন। ভিডিওতে তিনি জানিয়েছেন যে, সিন্ধু প্রদেশের মুসা খাতিয়ান গ্রামে অবস্থিত এই শিব মন্দিরটি একটি ঐতিহাসিক ঐতিহ্য, যা প্রায় এক শতাব্দী পুরানো। তিনি দাবি করেছেন যে কিছু লোক এই মন্দিরের চারপাশের জমি অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে এবং সেখানে অবৈধ নির্মাণ কাজও শুরু করেছে।

মন্দিরে যাওয়ার পথও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে

ভিডিওতে শিবা কাছি আরও জানিয়েছেন যে, অবৈধ দখলকারীরা কেবলমাত্র মন্দিরের চারপাশে নির্মাণ কাজ শুরু করেনি, বরং মন্দিরে যাওয়ার প্রধান পথও অবরোধ করে দিয়েছে। ফলে সেখানে পূজা-অর্চনার জন্য আসা ভক্তদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

৪ একর জুড়ে বিস্তৃত মন্দির পরিষর

কাছি জানিয়েছেন যে, এই মন্দির এবং এর আশেপাশের প্রায় চার একর জমি একটি ট্রাস্টের অধীনে রয়েছে, যা মন্দিরের দেখভাল করে। এই মন্দিরের শুধুমাত্র ধর্মীয় নয়, ঐতিহাসিক গুরুত্বও রয়েছে। প্রতি সোমবার স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা এখানে একত্রিত হয়ে ভজন-কীর্তন করে এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। মন্দিরের কাছেই হিন্দুদের জন্য একটি শ্মশানঘাটও রয়েছে, যেখানে বার্ষিক ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

গত বছর সংস্কার করা হয়েছিল

এই ঐতিহাসিক মন্দিরের গুরুত্ব মাথায় রেখে গত বছর সিন্ধু হেরিটেজ বিভাগের একটি দল মন্দিরের সংস্কার কাজ করেছিল। এর পর থেকে মন্দিরে ধর্মীয় কার্যকলাপ আরও বেড়েছে এবং স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছিল। কিন্তু এখন জমি দখল এবং নির্মাণ শুরু হওয়ায় আবারও এই মন্দিরের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সরকারের কাছে বড় দাবি

শিবা কাছি পাকিস্তান সরকারের কাছে দাবি করেছেন যে, তারা মন্দিরের জমি থেকে অবৈধ দখলদারদের অবিলম্বে সরিয়ে দিক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। তিনি বলেছেন যে, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় পরিচয় এবং তাদের পূজাস্থল রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব।

তিনি আরও বলেছেন যে, যদি সরকার সময়মতো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এটি কেবলমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আবেগকে আঘাত করবে না, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পাকিস্তানের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ

এই ঘটনার পর পাকিস্তানের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, আর এখন ধর্মীয় স্থানের জমি দখলের মতো ঘটনা তাদের জন্য আরও উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।

Leave a comment