আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব নিজের দাবী করেছেন এবং কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের কথা বলেছেন। এর জবাবে প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন যে ভারত নিজেই সমাধান বের করবে।
কাশ্মীর সমাধান: সম্প্রতি, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির (Ceasefire) কৃতিত্ব গ্রহণের চেষ্টা করেছেন এবং কাশ্মীর বিষয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে ভারতকে এই সমস্যার সমাধান কোনও বহিরাগত দেশের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে নয়, নিজেদের দ্বারাই খুঁজে বের করতে হবে।
ট্রাম্প কী বলেছিলেন?
আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে আমেরিকার মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছে। এছাড়াও, কাশ্মীর বিষয়ে তিনি বলেছেন যে তিনি উভয় দেশের সাথে মিলে দেখবেন এত বছর পর কাশ্মীর সম্পর্কে কোনও সমাধান বের করা যায় কি না। ট্রাম্প দাবি করেছেন যদি উভয় দেশের মধ্যে শান্তি স্থাপিত না হতো তাহলে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারাত।
প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর জবাব
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শিবসেনা (উদ্ধব বাল্কিয়) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেছেন যে কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের জন্য ভারতকে অন্য কোনও দেশের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। তিনি টুইটারে লিখেছেন, "কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের জন্য আমেরিকা বা অন্য কোনও দেশের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।" প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী আরও বলেছেন যে নিজের চ্যালেঞ্জের সমাধান নিজেই খোঁজা ভারতের অধিকার।
তিনি আরও বলেছেন, "ভারতের উপরই এই দায়িত্ব এসেছে এবং ভারতকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।" প্রিয়াঙ্কার এই বক্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছে যে কাশ্মীর সমস্যায় ভারত সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে এবং তৃতীয় কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই সমাধান চায়।
ভারতের অবস্থান
ভারত সর্বদাই কাশ্মীর বিষয়ে তৃতীয় কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত সরকার বারবার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং এই বিষয়ে কোনও বহিরাগত দেশের হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।
এবারও, যখন ট্রাম্প কাশ্মীর সমস্যায় তার মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন, ভারত তার অবস্থান আরও দৃঢ় করে বলেছে যে এই বিষয়ে কেবলমাত্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেই আলোচনা হতে পারে। ভারত আরও জানিয়েছে এই যুদ্ধবিরতির চুক্তি উভয় দেশের ডিজিএমও (Director General of Military Operations) -এর মধ্যে আলোচনার ফলাফল, কোনও বহিরাগত দেশের হস্তক্ষেপ নয়।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্য
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও এই বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেছেন যে ভারত সর্বদা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার কঠোর নীতি বজায় রেখেছে। তিনি আরও বলেছেন, "ভারত ও পাকিস্তান গোলাগুলি ও সামরিক অভিযান বন্ধ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। ভারত সন্ত্রাসবাদের সকল রূপ ও প্রকাশের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও অটল অবস্থান নেবে।"
ভারত-পাক যুদ্ধবিরতি
অন্যদিকে, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব তার সরকারকে দিতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন যে তিনি উভয় দেশের সাথে মিলে ব্যবসা বাড়ানোর দিকেও কাজ করবেন। তবে ভারত কেবলমাত্র তার ভূমিকাকে কম করে দেখেনি, বরং বলেছে যে এই চুক্তি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার ফলাফল, কোনও বহিরাগত হস্তক্ষেপ নয়।