থারুরের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদল গায়ানার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ

থারুরের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদল গায়ানার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ
সর্বশেষ আপডেট: 26-05-2025

শশী থারুরের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদল গায়ানার প্রধানমন্ত্রী মার্ক অ্যান্থনি ফিলিপসের সাথে সাক্ষাৎ করেছে। আতঙ্কবাদের বিরুদ্ধে ভারতকে সমর্থন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।

বার্বিস: ভারত এবং গায়ানার মধ্যে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের নেতৃত্বে সর্বদলীয় ভারতীয় প্রতিনিধিদল গায়ানার প্রধানমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার (অব.) মার্ক অ্যান্থনি ফিলিপসের সাথে সাক্ষাৎ করেছে। এই সময় প্রধানমন্ত্রী ফিলিপস শুধুমাত্র ভারতের সাথে সম্পর্ককে শক্তিশালী করার কথা বলেননি, বরং আতঙ্কবাদের বিষয়েও একটি বড় বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গায়ানা আতঙ্কবাদের প্রতিটি ঘটনার তীব্র নিন্দা করে এবং আইনের শাসনে বিশ্বাস রাখে।

গায়ানার প্রধানমন্ত্রী ভারতকে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন

গায়ানার প্রধানমন্ত্রী মার্ক অ্যান্থনি ফিলিপস ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সাথে আলোচনার সময় বলেছেন, তাঁর দেশ ভারতীয় কোম্পানিগুলির বিনিয়োগের স্বাগত জানায়। তিনি বলেছেন, গত কয়েক বছরে ভারত এবং গায়ানার মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ভবিষ্যতে এটি আরও শক্তিশালী হবে।

প্রধানমন্ত্রী ফিলিপস বলেছেন, তিনি ভারতের সাংসদদের সফরের আন্তরিক স্বাগত জানান। এই সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রী ফিলিপস বিশেষ করে ভারতের সাথে ব্যবসা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছেন।

আতঙ্কবাদ নিয়ে গায়ানার প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন

গায়ানার প্রধানমন্ত্রী আতঙ্কবাদের বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলেছেন, তাঁর দেশ আতঙ্কবাদের কোনও রূপকে মেনে নেয় না। তিনি বলেছেন, প্রতিটি দেশ এবং নাগরিকের নিজ নিজ দেশে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাস করার অধিকার আছে। এর জন্য সমস্ত দেশকে মিলে আতঙ্কবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ফিলিপস এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, গায়ানা আতঙ্কবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে পুরোপুরি সমর্থন করে।

শশী থারুর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন

গায়ানার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের পর কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী ফিলিপসের উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ডিনারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং তাঁর ক্যাবিনেটের অনেক সদস্যও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শশী থারুর বলেছেন, আমাদের আলোচনা অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল। আমরা আতঙ্কবাদের বিষয়েও আলোচনা করেছি এবং দেখেছি যে গায়ানা এই বিষয়ে ভারতের সাথে পুরোপুরি সমর্থন করে।

তেজস্বী সূর্য বলেছেন – গায়ানা প্রতিটি মঞ্চে ভারতের সমর্থন করেছে

এই প্রতিনিধিদলে যুক্ত বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্যও সাক্ষাতের পর বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গায়ানার প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতি উভয়েই ভারতের পক্ষে স্পষ্টতই তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, অপারেশন সিন্দুরের সময়ও গায়ানা ভারতের সাথে ছিল এবং ভারতের প্রতিরোধের অধিকারের সমর্থন করেছিল।

তেজস্বী সূর্য বলেছেন, গায়ানা কেবলমাত্র CARICOM-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে না, বরং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও ভারতের পক্ষে কথা বলে। তিনি বলেছেন, পুলওয়ামা হামলার পর গায়ানার রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র হামলার নিন্দা করেননি, বরং ভারতের প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপেরও সমর্থন করেছিলেন।

মিলিন্দ দেওড়া বলেছেন – ভারত এবং গায়ানার সম্পর্ক ঐতিহাসিক

শিবসেনা সাংসদ মিলিন্দ দেওড়া, যিনি এই প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন, তিনিও তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, অপারেশন সিন্দুরের পর ভারতের সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল বিশ্বজুড়ে এই বার্তা দিতে গেছে যে, ভারত আতঙ্কবাদের বিরুদ্ধে এবং প্রয়োজন হলে ভারত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাতে পিছিয়ে থাকবে না। তিনি বলেছেন, গায়ানা এবং ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে এবং এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। মিলিন্দ দেওড়া গায়ানার ৫৯তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সেখানে উপস্থিত থেকে তাঁর আনন্দ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, তিনি ভারতের সকল নাগরিকের পক্ষ থেকে গায়ানার সরকার ও জনগণকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

ভারত-গায়ানার সম্পর্ক

ভারত এবং গায়ানার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। গায়ানায় বহু সংখ্যক ভারতীয় বংশোদ্ভূত লোক বাস করেন এবং দুটি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং কৌশলগত সহযোগিতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গায়ানা ক্যারিবীয় দেশগুলির সংগঠন CARICOM-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (UNSC)ও ভারতের সমর্থন করে চলেছে। এইভাবে এই সাক্ষাত ভারতের পররাষ্ট্রনীতি এবং কৌশলগত স্বার্থের দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a comment