সুপ্রিম কোর্ট এবার প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (PMLA) -এর কিছু ধারার ওপর পুনর্বিবেচনা করবে। আগে কোর্ট এই ধারাগুলিকে সংবিধান অনুসারে বৈধ বলে গণ্য করেছিল, কিন্তু এখন এ ব্যাপারে পুনঃসমীক্ষা হবে।
নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট আবারও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধী আইন প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (PMLA) এর বৈধতা এবং তার ব্যাখ্যা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করতে যাচ্ছে। ৭ মে এই মামলায় তিন ন্যায়াধীশের খণ্ডপীঠ শুনানি করবে এবং বিশেষ করে এই বিষয়ে গুরুত্ব দেবে যে, কি প্রয়োগ निदेशালয় (ED) -কে প্রাপ্ত অসীম ক্ষমতা মৌলিক অধিকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা। সাথে সাথে, এটাও দেখা হবে যে, ইডি কর্তৃক PMLA-এর ৫০ ধারার অধীনে রেকর্ডকৃত জবানবন্দি আদালতে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য কিনা।
২০২২ সালের রায় এবং তার প্রভাব
সুপ্রিম কোর্ট জুলাই ২০২২-এ PMLA-এর অনেক ধারা বহাল রেখে ইডি-কে গ্রেফতার, জিজ্ঞাসাবাদ, তল্লাশি এবং সম্পত্তি জব্দ করার মত ক্ষমতা বৈধ বলে ঘোষণা করেছিল। কোর্ট বলেছিল, এই আইন বিশেষ প্রকৃতির এবং দেশের অর্থনৈতিক সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে। তবে, রায়ের পরে নাগরিক অধিকার কর্মী, আইনজীবী এবং বিরোধী দলের নেতারা এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের দাবি, ইডি-এর তদন্ত প্রক্রিয়ায় বিচার বিভাগীয় নজরদারির অভাব রয়েছে এবং এতে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়।
পুনর্বিবেচনা আবেদন, আপিলের রূপ ধারণ করছে?
এখন যখন সুপ্রিম কোর্ট আবারও মামলার শুনানি করছে, তখন প্রথম প্রশ্ন হলো, পুনর্বিবেচনা আবেদন কি সেই সীমার মধ্যে রয়েছে যার অনুমতি সংবিধান দেয়? আগস্ট ২০২৪-এ, বিচারপতি সি.টি. রবিকুমার (যিনি এখন অবসর গ্রহণ করেছেন) এই বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন যে, আবেদনটি কি আপিলের ছদ্মবেশ ধারণ করছে না।
ইডি-এর জবানবন্দি: প্রমাণ নাকি জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি?
PMLA-এর ৫০ ধারার অধীনে ইডি-কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় জবানবন্দি নেওয়ার অধিকার রয়েছে। ২০২২ সালের রায়ে এই জবানবন্দিগুলিকে মামলায় প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এখন কোর্ট দেখবে, এই প্রক্রিয়া কি ফৌজদারি আইনের মূল আত্মার বিরুদ্ধে, যেখানে আত্মস্বীকারোক্তি যতক্ষণ না স্বাধীন এবং স্বেচ্ছায় দেওয়া হয়, ততক্ষণ প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয় না।
শুনানিতে কোর্টের প্রধান উদ্বেগ হবে, ইডি-এর ক্ষমতা কি নাগরিকদের মৌলিক অধিকারকে দুর্বল করে? কি এই ক্ষমতার ব্যবহার রাজনৈতিক প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে হতে পারে? এবং কি তদন্ত সংস্থার এত স্বায়ত্তশাসন থাকা উচিত যে, তারা FIR ছাড়াই গ্রেফতার বা সম্পত্তি জব্দ করতে পারে?