সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রের চিপস চুরির মিথ্যা অভিযোগে মারধর ও আত্মহত্যা

সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রের চিপস চুরির মিথ্যা অভিযোগে মারধর ও আত্মহত্যা
সর্বশেষ আপডেট: 23-05-2025

পশ্চিমবঙ্গে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রকে চিপস চুরির মিথ্যা অভিযোগে মারধর করা হয়েছে। মানসিক চাপে সে কীটনাশক খেয়ে ফেলেছে এবং হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা থেকে এক অত্যন্ত দুঃখজনক সংবাদ এসেছে, যা সকলের মন কাঁপিয়ে দিয়েছে। সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্র, কৃষ্ণেন্দু দাস, যার উপর চিপসের প্যাকেট চুরির মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল, সে মানসিক চাপ ও সামাজিক অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনা শুধুমাত্র পরিবারকেই ভেঙে দেনি, বরং সমগ্র সমাজে ন্যায় ও ইনসাফের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।

ঘটনার দিন কী ঘটেছিল?

কৃষ্ণেন্দু দাস রবিবার বাজারে চিপস কিনতে গিয়েছিল। সেখানে দোকান বন্ধ ছিল এবং চিপস পাওয়া যাচ্ছিল না। ঠিক তখনই সে রাস্তার ধারে পড়ে থাকা চিপসের একটি প্যাকেট তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। কিন্তু এই সাধারণ কাজটি তার জন্য ভারী পড়ে গেল।

সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্কর এবং দোকানের মালিক তাকে চুরির অভিযোগে ধরে ফেলে। অভিযোগ, তারা তাকে পাবলিকলি মারধর করে এবং কান ধরে উঠবস করিয়েছে। ছেলে বারবার তার নির্দোষতার দাবি করেছিল যে সে চুরি করেনি, বরং রাস্তা থেকে প্যাকেটটি তুলে নিয়েছিল।

ছাত্রের উপর অত্যাচার ও মানসিক চাপ

কৃষ্ণেন্দু সিভিক ভলান্টিয়ারকে চিপসের টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু শুভঙ্করের অত্যাচার থেমে নি। এমন অপমান ও শারীরিক নির্যাতন ছেলের মনে গভীর আঘাত করে। তার মা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন সে তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে।

বাড়ি ফেরার পর কৃষ্ণেন্দু তার ঘরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর তাকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন যখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, তখনও ছেলের প্রাণ বাঁচানো যায়নি। কৃষ্ণেন্দু কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আত্মহত্যা চিঠিতে কী লেখা ছিল?

কৃষ্ণেন্দুর ঘর থেকে পুলিশ একটি আত্মহত্যা চিঠি পেয়েছে, যা পুরো ঘটনার কথা বলে। সে তার মাকে লিখেছে, “মা, আমি চুরি করিনি। আমি রাস্তা থেকে চিপসের প্যাকেটটি তুলেছিলাম।” এই চিঠি তার নির্দোষতার এবং ন্যায়ের দাবীর শেষ প্রচেষ্টা ছিল।

Leave a comment