পঞ্জাব পুলিশ ১৩ মাস ধরে শম্ভু ও খনৌরি সীমান্তে ধর্ণা দিয়ে থাকা কৃষকদের সরিয়ে দিয়েছে। পুলিশ পরিকল্পিতভাবে ব্যারিকেড ও অস্থায়ী স্থাপনা সরিয়ে প্রতিবাদস্থল খালি করেছে।
কৃষক আন্দোলন: পঞ্জাবের শম্ভু ও খনৌরি সীমান্তে ১৩ মাস ধরে চলা কৃষক আন্দোলন পঞ্জাব পুলিশ শেষ করে দিয়েছে। পুলিশ সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে উভয় সীমান্তে প্রতিবাদস্থল খালি করেছে। এই সময় পুলিশ ব্যারিকেড, যানবাহন ও অস্থায়ী স্থাপনাও সরিয়ে দিয়েছে।
কীভাবে পুলিশের কৌশল কাজ করেছে?
এর কৌশল আগে থেকেই প্রস্তুত করা হয়েছিল, যার দায়িত্ব মোহালি পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মোহালিতে কৃষকদের গ্রেফতার শুরু করে। শম্ভু সীমান্তে রাত সাড়ে সাতটায় जेसीबी মেশিনের মাধ্যমে অভিযান শুরু হয় এবং সাড়ে নয়টা নাগাদ সীমান্ত সম্পূর্ণ খালি করা হয়। একইভাবে, খনৌরি সীমান্তে সাড়ে সাতটায় অভিযান শুরু হয় এবং সাড়ে নয়টা নাগাদ সেখানেও প্রতিবাদস্থল সরিয়ে দেওয়া হয়।
কেন ধর্ণা শুরু হয়েছিল?
২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষকরা ন্যূনতম সমর্থনমূল্য (এমএসপি) সহ ১২ দাবিতে শম্ভু ও খনৌরি সীমান্তে ধর্ণা শুরু করে। এর পর বহুবার সরকার ও কৃষকদের মধ্যে আলোচনা হয়, কিন্তু কোনও স্পষ্ট ফলাফল বেরোয়নি।
১৩ মাসে কী কী ঘটেছিল? (আন্দোলনের সম্পূর্ণ টাইমলাইন)
২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি: এমএসপি সহ ১২ দাবিতে ধর্ণা শুরু।
২০২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি: কৃষকরা দিল্লি যাওয়ার চেষ্টা করে, সংঘর্ষে বাথিন্ডার কৃষক শুভকরণের মৃত্যু।
২০২৪ সালের ১০ মার্চ: শুভকরণের মৃত্যুর ঘটনা পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে পৌঁছে।
২০২৪ সালের ১৬ মার্চ: লোকসভা নির্বাচনের কারণে আচরণবিধি লাগু হয়, কিন্তু কৃষকরা পাকা মোর্চা অব্যাহত রাখে।
২০২৪ সালের ১ এপ্রিল: শুভকরণের মৃত্যুর ঘটনা সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছে।
২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল: গ্রেফতার কৃষকদের মুক্তির দাবিতে রেলপথ অবরোধ।
২০২৪ সালের ২০ মে: কৃষকরা রেলপথ ছেড়ে দেয়, কিন্তু সীমান্তে ধর্ণা অব্যাহত রাখে।
২০২৪ সালের ১০ জুলাই: হাইকোর্ট হরিয়ানা সরকারকে এক সপ্তাহের মধ্যে শম্ভু সীমান্ত খুলতে নির্দেশ দেয়।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই: কৃষকরা চণ্ডীগড়ে বৈঠক করে দিল্লি অভিযানের হুঁশিয়ারি দেয়।
২০২৪ সালের ২২ জুলাই: হরিয়ানা সরকার সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের পক্ষ তুলে ধরার জন্য সময় চায়।
২০২৪ সালের ২৪ জুলাই: সুপ্রিম কোর্ট সীমান্তে यथास्थिति বজায় রাখার নির্দেশ দেয়।
২০২৪ সালের ১২ আগস্ট: আদালত বৃদ্ধ, ছাত্রী ও অ্যাম্বুলেন্সের জন্য শম্ভু সীমান্তের একটি লেন খোলার নির্দেশ দেয়।
২০২৪ সালের ২৫ আগস্ট: সীমান্ত খোলার বিষয়ে কৃষক ও প্রশাসনের মধ্যে বৈঠক ব্যর্থ।
২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর: সুপ্রিম কোর্ট সীমান্ত খোলার জন্য কমিটি গঠন করে।
২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর: কৃষকরা ৬ ডিসেম্বর দিল্লি অভিযানের ঘোষণা দেয়।
২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর: কৃষক নেতা জগজিৎ সিংহ দালেওয়ালকে আটক করা হয়, অনশন শুরু।
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর: কৃষকরা শম্ভু সীমান্ত থেকে দিল্লি অভিযানের চেষ্টা করে, কিন্তু হরিয়ানা পুলিশ তা আটকে দেয়।
২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর: আবার দিল্লি অভিযানের চেষ্টা, পুলিশ আবারও প্রবেশ করতে দেয়নি।
২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর: কৃষকরা চতুর্থবার দিল্লি অভিযানের পরিকল্পনা করে, কিন্তু আবারও আটকে দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর: কৃষকরা পঞ্জাব বন্ধের আয়োজন করে।
২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি: এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর খনৌরি সীমান্তে মহাপঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হয়।
২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি: কৃষক নেতা ও কেন্দ্র সরকারের মধ্যে বৈঠক হয়।
২০২৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি: কৃষক ও কেন্দ্র সরকারের মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হয়।
২০২৫ সালের ২০ মার্চ: পঞ্জাব পুলিশ ধর্ণা স্থল খালি করে।