পাহালগাম হামলার জেরে ভারতের কঠোর পদক্ষেপ: পাকিস্তানের X অ্যাকাউন্ট স্থগিত

পাহালগাম হামলার জেরে ভারতের কঠোর পদক্ষেপ: পাকিস্তানের X অ্যাকাউন্ট স্থগিত
সর্বশেষ আপডেট: 24-04-2025

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান সরকারের অফিসিয়াল X অ্যাকাউন্ট ভারতে স্থগিত, পাহালগাম সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর পর ডিজিটাল আঘাত হিসেবে বিবেচিত এই পদক্ষেপ।

পাহালগাম সন্ত্রাসবাদী হামলা: ২০২৫ সালের ২২শে এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের বিখ্যাত পর্যটন স্থল পাহালগামে সংঘটিত সন্ত্রাসবাদী হামলা সমগ্র দেশকে কাঁপিয়ে তুলেছে। এই হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। এই হামলা কেবলমাত্র দুঃখজনক নয়, এটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও তীব্র করে তুলেছে।

হামলার পর ভারত সরকার যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে, তা ইঙ্গিত করে যে এখন কেবলমাত্র কথার সময় নয়, বরং কঠোর ব্যবস্থার সময়। একের পর এক অনেক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল— পাকিস্তান সরকারের অফিসিয়াল X (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্ট ভারতে স্থগিত করা হয়েছে। এটিকে একটি ডিজিটাল আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পাহালগামে কী ঘটেছিল?

২২শে এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার বেসরান এলাকায় কিছু অজ্ঞাত সন্ত্রাসবাদী ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় ২৬ জন ঘটনাস্থলেই মারা গেছে এবং অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছে। নিহতরা কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটক ছিলেন।

এই সন্ত্রাসবাদী হামলা কেবলমাত্র সাধারণ মানুষকে আঘাত করেনি, বরং সমগ্র দেশে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ পাকিস্তানকে কঠোর জবাব দেওয়ার দাবি জানাতে শুরু করেছে।

ভারতের ডিজিটাল আঘাত: X অ্যাকাউন্টে নিষেধাজ্ঞা

এই হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারত কূটনৈতিক ও ডিজিটাল পর্যায়ে বেশ কয়েকটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে একটি হল— পাকিস্তান সরকারের অফিসিয়াল X (টুইটার) অ্যাকাউন্ট ভারতে স্থগিত করা।

এখন ভারতে কোনও ব্যবহারকারীই পাকিস্তান সরকারের অফিসিয়াল হ্যান্ডেল দেখতে পারবে না। এই পদক্ষেপকে ডিজিটাল আঘাত বলা হচ্ছে, কারণ এটি অস্ত্র নয়, বরং প্রযুক্তি ও মিডিয়ার মাধ্যমে করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত করে যে ভারত এখন প্রতিটি স্তরে তার কৌশল তীব্র করছে—ভৌত সীমান্ত থেকে শুরু করে ভার্চুয়াল স্পেস পর্যন্ত।

ভারতের অন্যান্য কঠোর পদক্ষেপ

ভারত কেবলমাত্র ডিজিটাল আঘাতেই সীমাবদ্ধ থাকে নি, বরং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক, জল ও সীমান্ত সংক্রান্ত স্তরেও কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

১. সিন্ধু জল চুক্তিতে স্থগিতাদেশ

১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অধ্যক্ষতায় অনুষ্ঠিত সুরক্ষা বিষয়ক কেবিনেট কমিটির (CCS) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে যতক্ষণ পাকিস্তান সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদের সমর্থন করবে, ভারত এই চুক্তি কার্যকর করবে না।

২. আটারি সীমান্ত বন্ধ

ভারত আটারি সীমান্ত অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এই সীমান্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রধান স্থলপথ যোগাযোগের স্থল যেখান দিয়ে বাণিজ্য ও মানুষের চলাচল হয়।

৩. সার্ক ভিসা স্কিম বাতিল

ভারত পাকিস্তানকে প্রদত্ত সার্ক ভিসা ছাড় প্রকল্প (SVES)-এর অধীনে জারি করা সমস্ত ভিসা বাতিল করেছে এবং পাকিস্তানী নাগরিকদের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দেশ ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে।

৪. কূটনৈতিক পর্যায়ে পদক্ষেপ

ভারত পাকিস্তানের হাইকমিশনে কর্মরত প্রতিরক্ষা, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর উপদেষ্টাদের অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোষণা করেছে এবং তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, ভারত ইসলামাবাদে অবস্থিত তার হাইকমিশন থেকেও প্রতিরক্ষা, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর উপদেষ্টাদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে।

Leave a comment