প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটে অবস্থিত বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র "বনতারা ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টার"-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এই কেন্দ্রটি কেবল ভারত নয়, বিশ্বের অন্যতম অনন্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র, যেখানে দুই হাজারেরও বেশি প্রজাতির এবং দেড় লক্ষেরও বেশি উদ্ধারকৃত প্রাণী নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছে।
গান্ধীনগর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি গুজরাটের জামনগরে বন্যপ্রাণী উদ্ধার, পুনর্বাসন ও সংরক্ষণ কেন্দ্র 'বনতারা'-র উদ্বোধন করেছেন। এই কেন্দ্রটি ২০০০-এরও বেশি প্রজাতির এবং দেড় লক্ষেরও বেশি উদ্ধারকৃত, বিপন্ন ও সংকটাপন্ন প্রাণীর আশ্রয়স্থল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বিভিন্ন প্রাণী চিকিৎসা সুবিধা পরিদর্শন করেন এবং দুর্লভ প্রজাতি সম্পর্কে তথ্য নেন। তিনি এশীয় সিংহ, সাদা সিংহ, ক্লাউডেড চিতা এবং কারাকালের মতো শাবকদের সাথে সময় কাটান এবং নিজ হাতে তাদের খাবার দেন।
শাবকদের দুধ খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে স্নেহ প্রকাশ
প্রধানমন্ত্রী মোদী উদ্ধারকৃত বহু দুর্লভ ও সংকটাপন্ন প্রজাতির শাবকদের সাথে সময় কাটান। তিনি এশীয় সিংহ, সাদা সিংহ, কারাকাল এবং ক্লাউডেড চিতার শাবকদের নিজ হাতে দুধ খাওয়ান। এদের মধ্যে অনেক প্রাণীকে গুরুতর অবস্থা থেকে উদ্ধার করে বনতারায় নিয়ে আসা হয়েছিল, যেখানে এখন তাদের যত্ন নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বনতারার অত্যাধুনিক প্রাণী চিকিৎসা সুবিধা পরিদর্শন করেন। তিনি হাসপাতালের এমআরআই রুমে এশীয় সিংহের এমআরআই হচ্ছে দেখেন এবং একটা আহত চিতার অস্ত্রোপচারেরও পর্যালোচনা করেন, যাকে হাইওয়েতে কোনো গাড়ির ধাক্কায় আঘাত পেয়ে উদ্ধার করা হয়েছিল।
উদ্ধারকৃত দুর্লভ প্রাণীদের সাথে বিশেষ মুহূর্ত
প্রধানমন্ত্রী মোদী সার্কাস থেকে উদ্ধারকৃত গোল্ডেন টাইগার ও স্নো টাইগারদের কাছ থেকে দেখেন। তিনি ওকাপিকে স্নেহের সাথে থাপ্পড় দেন এবং চিম্পাঞ্জি ও ওরাংউটানের সাথে সময় কাটান। এছাড়াও, তিনি হিপ্পোপটামাস, বিশাল উটপাখি, বোঙ্গো হরিণ, ট্যাপির এবং দুর্লভ দুই মাথার সাপ ও কচ্ছপ দেখেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী হাতির জন্য তৈরি বিশেষ হাইড্রোথেরাপি পুকুর পরিদর্শন করেন, যেখানে গোড়া ও পা-এর সমস্যায় ভোগা হাতিদের চিকিৎসা করা হয়। তিনি হাতিদের বিশেষ জাকুজিতে স্নানের প্রক্রিয়াও ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেন।
তোতাদের মুক্তি এবং কর্মীদের সাথে আলাপ
এই সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী বনতারায় উদ্ধারকৃত তোতাদের মুক্তি দেন এবং তাদের খোলা আকাশে উড়তে দেখেন। তিনি প্রাণী চিকিৎসক, সহায়ক কর্মী এবং সংরক্ষণ কেন্দ্রের পরিচর্যাকারীদের সাথে কথা বলে তাদের অভিজ্ঞতা জানতে চান এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। বনতারা ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টার কেবল আহত ও সংকটাপন্ন প্রাণীর চিকিৎসার কেন্দ্র নয়, এটি বিপন্ন প্রজাতির সংরক্ষণ ও পুনর্বাসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর দেশে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও পরিবেশগত ভারসাম্যের দিকে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে।
