মেরাঠের বহুচর্চিত সৌরভ হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার সাহিল ও মুস্কানের জেলে অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। নেশাগ্রস্ত হওয়ার কারণে জেলে নেশাজাতীয় দ্রব্য না পাওয়ায় উভয়েই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
উত্তর প্রদেশ: মেরাঠের বহুচর্চিত সৌরভ হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার সাহিল ও মুস্কানের জেলে অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। নেশাগ্রস্ত হওয়ার কারণে জেলে নেশাজাতীয় দ্রব্য না পাওয়ায় উভয়েই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে নেশার দাবী করার পর তাদের অবিলম্বে নেশা মুক্তি কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। উভয়েই জেল সুপারিটেন্ডেন্টের সাথে দেখা করে আইনগত সহায়তা ও আইনজীবীর দাবী জানিয়েছে, কিন্তু তাদের পরিবার এখনও কোন সাহায্য করেনি।
হত্যার পর হিমাচলে বিলাসবহুল জীবনযাপন
১৮ মার্চ সৌরভের হত্যার ঘটনা প্রকাশ পায়, যেখানে মুস্কান ও সাহিল মিলে তার স্বামী সৌরভকে হত্যা করে। পুলিশ তদন্তে উঠে আসে, হত্যার পর উভয়েই শিমলা, মানালী ও কাসোল ঘুরতে বেরিয়ে গিয়েছিল। তারা ১৩ দিন ধরে হিমাচলে বিলাসবহুল জীবনযাপন করে, যখন সৌরভের লাশ সিমেন্ট দিয়ে ভর্তি ড্রামে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
তদন্তে আরও জানা যায়, সাহিল আইপিএলে সাট্টা খেলায় জড়িত ছিল। সে জেতার টাকা অনলাইনে মুস্কানের কাছে পাঠাত। সৌরভ পাঠানো টাকাও উভয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই উড়িয়ে দিত। তাদের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও নেশার আসক্তি তাদের এই হত্যাকাণ্ডের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
সৌরভ হত্যাকাণ্ডে পুলিশের অবহেলাও প্রকাশ পেয়েছে। যে ঘরে হত্যা করা হয়েছিল, সেখানে মানুষ সহজেই গিয়ে ভিডিও তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ এই গুরুতর ভুল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং ইন্সপেক্টর রমা কান্ত পৌরীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে সৌরভের মৃত্যুর কারণ ব্রেন হেমরেজ বলা হয়েছে।
তার বুকে তিনটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এছাড়াও, গলা, হাত এবং পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা চিহ্ন ছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, সৌরভ হত্যার আগে মদ্যপ ছিল, কিন্তু কোনও ঘুমের ওষুধের ব্যবহারের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বুকে লাগা আঘাতের ফলেই ব্রেন হেমরেজ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
সৌরভের পিতামাতার সিবিআই তদন্তের দাবী
সৌরভের পিতামাতা রেনু দেবী ও মুন্নালাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবী জানিয়েছেন। তাদের দাবি, হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। এছাড়াও, তারা তাদের নাতনী পিহুর সাথে দেখা করার অনুরোধ জানিয়েছে এবং আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে হত্যাকারীরা তাদের নাতনীকেও হত্যা করতে পারে।
জেলে মুস্কানের অবস্থা খারাপ, গর্ভবতী পরীক্ষা নেগেটিভ
জেলে নেশার অভাবে মুস্কানের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। তিনি ডিপ্রেশন ও অনিদ্রায় ভুগছেন। জেল কর্তৃপক্ষ তার গর্ভবতী পরীক্ষা করেছে, যা নেগেটিভ এসেছে। সাহিল ও মুস্কানকে আলাদা আলাদা বারাক্কে রাখা হয়েছে যাতে তারা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে না পারে। সাহিল ও মুস্কানের হিমাচলে কাটা ১৩ দিনের কার্যকলাপ তদন্তের জন্য মেরাঠ পুলিশ শিমলা গিয়েছে। পুলিশ সেসব হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং ট্যাক্সি চালকদের সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে যেখানে তারা ছিল। হোটেল কর্মী ও স্থানীয়দের জবানবন্দী রেকর্ড করে সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
