ফার্মার রেজিস্ট্রি থেকে কৃষকরা প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনার সুষ্ঠু সুবিধা পাবেন, যেমন ই-কেওয়াইসি-র প্রয়োজন হবে না এবং কোনও নথি ছাড়াই ব্যাংক থেকে দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাবে। সমস্তীপুরে শিবির।
PM-KISAN: কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি (PM-KISAN) এবং অন্যান্য সরকারি পরিকল্পনার সুবিধা সুষ্ঠুভাবে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফার্মার রেজিস্ট্রি (Farmer Registry) শিবিরের উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অধীনে, সমস্তীপুর জেলার বিভিন্ন প্রখণ্ডে ফার্মার রেজিস্ট্রি শিবির স্থাপন করা হচ্ছে যাতে কৃষকরা সহজেই পরিকল্পনার সুবিধা পেতে পারেন।
ফার্মার রেজিস্ট্রি কি?
ফার্মার রেজিস্ট্রি হল একটি ডিজিটাল নিবন্ধন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কৃষকরা কৃষি সংক্রান্ত পরিকল্পনার সুবিধা স্বচ্ছতার সাথে পাবেন। এই রেজিস্ট্রির মাধ্যমে, কৃষকদের বারবার ই-কেওয়াইসি (e-KYC) করার প্রয়োজন হবে না। এছাড়াও, ডিজিটাল কেসিসি (KCC)-এর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ কোনও নথি ছাড়াই যোগ্যতার ভিত্তিতে একই দিনে পাওয়া যাবে। এই প্রক্রিয়া কৃষকদের জন্য সহজ এবং সুবিধাজনক হবে।
ফার্মার রেজিস্ট্রির উদ্দেশ্য
সমস্তীপুর জেলায় ফার্মার রেজিস্ট্রির প্রধান উদ্দেশ্য হল কৃষকদের কৃষি সংক্রান্ত সকল সরকারি পরিকল্পনার সুবিধা সময়মতো এবং স্বচ্ছভাবে পৌঁছে দেওয়া। এই রেজিস্ট্রির মাধ্যমে কৃষকরা সরাসরি ফসলী ঋণ, ফসল বীমা, কৃষি ফসল বিক্রয় এবং সারের সাবসিডি সহ সুবিধা পাবেন।
রেজিস্ট্রি শিবিরের সূচনা
সমস্তীপুর প্রখণ্ডে এগ্রিস্ট্যাক প্রকল্পের আওতায় ফার্মার রেজিস্ট্রি শিবিরের সূচনা করা হয়েছে। প্রথম ধাপে, প্রতিটি প্রখণ্ড থেকে দুটি রাজস্ব গ্রাম নির্বাচন করা হয়েছে এবং সেই গ্রামগুলিতে শিবির আয়োজন করা হচ্ছে। সমস্তীপুর প্রখণ্ডের লগুণিয়া রঘুকণ্ঠ গ্রামে প্রথম শিবিরের উদ্বোধন করা হয়। এই শিবিরের উদ্বোধন করেন দরভঙ্গা মণ্ডলের যুক্ত নির্দেশক (কৃষি) সঞ্জয় নাথ তিওয়ারী। তিনি বলেন, এখন কৃষক সম্মান নিধি থেকে শুরু করে সার, বীজ সবকিছুর সাবসিডি এই রেজিস্ট্রির মাধ্যমে পাওয়া যাবে।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
ফার্মার রেজিস্ট্রি করার জন্য কৃষকদের কাছে নিম্নলিখিত নথিপত্র থাকা প্রয়োজন:
আধার কার্ড – রেজিস্ট্রির জন্য আধার কার্ড অপরিহার্য।
আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বর – কৃষকের কাছে একটি মোবাইল নম্বর থাকতে হবে যা আধারের সাথে সংযুক্ত এবং যার উপর ওটিপি (One Time Password) পাওয়া যাবে।
জমি সংক্রান্ত তথ্য – কৃষককে তার জমির বিবরণ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সাবসিডিতে সার কেনার অধিকার পাবে।
ফার্মার রেজিস্ট্রির সুবিধা
ফার্মার রেজিস্ট্রি থেকে কৃষকরা অনেক সুবিধা পাবেন:
ই-কেওয়াইসি-র প্রয়োজন নেই – একবার রেজিস্ট্রি করার পর কৃষকদের বারবার ই-কেওয়াইসি করার প্রয়োজন হবে না।
ডিজিটাল কেসিসি ঋণ – ব্যাংক থেকে ডিজিটাল কেসিসি-এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ কোনও নথি ছাড়াই একই দিনে পাওয়া যাবে।
কৃষি পরিকল্পনার স্বচ্ছ সুবিধা – কৃষি পরিকল্পনার সাবসিডি স্বচ্ছভাবে পাওয়া যাবে।
ফসলী ঋণ এবং ফসল বীমা – কৃষকরা ফসলী ঋণ এবং ফসল বীমার ক্ষতিপূরণ পেতে সুবিধা পাবেন।
কৃষি ফসল বিক্রয় – কৃষকরা তাদের ফসল ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (MSP) এ বিক্রি করতে পারবেন।
সার ক্রয় – ইউরিয়া এবং অন্যান্য সার ক্রয়ের ক্ষেত্রেও কৃষকরা সহায়তা পাবেন এবং এটি সাবসিডির মাধ্যমে হবে।
কীভাবে আবেদন করবেন?
কৃষকরা ফার্মার রেজিস্ট্রির জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে আবেদন করতে পারেন:
অনলাইন নিবন্ধন – কৃষকরা https://bhfr.agristack.gov.in পোর্টালে গিয়ে অনলাইন নিবন্ধন করতে পারেন। এর জন্য আধার কার্ড এবং আধার-সংযুক্ত মোবাইল নম্বরের প্রয়োজন হবে।
জনসেবা কেন্দ্র – কৃষকরা তাদের নিকটস্থ জনসেবা কেন্দ্র (CSC) এ গিয়েও ফার্মার রেজিস্ট্রির নিবন্ধন করাতে পারেন।
ফার্মার রেজিস্ট্রির বাস্তবায়ন
জেলা পর্যায়ে ডিজিটাল কৃষি কোষ (Digital Agriculture Cell) গঠন করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। এই কোষের অধ্যক্ষ হবেন জেলাশাসক (DM) এবং এতে উপ-বিকাশ কমিশনার (Additional Development Commissioner), অপর সমাহর্তা (Revenue), জেলা কৃষি পদাধিকারী, পঞ্চায়েত রাজ পদাধিকারী এবং অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তারা থাকবেন।
প্রখণ্ড পর্যায়ে বাস্তবায়ন দল গঠন করা হয়েছে, যাতে প্রখণ্ড উন্নয়ন পদাধিকারী (BDO), প্রখণ্ড কৃষি পদাধিকারী এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা থাকবেন। এই দল রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়ার সঠিক এবং সময়মতো বাস্তবায়নের জন্য দায়ী থাকবে।