কলকাতা ইস্কন-এর রথযাত্রায় ৪৮ বছর পর বড় পরিবর্তন। এবার ভগবান জগন্নাথের রথে সুখোয়ি যুদ্ধবিমানের টায়ার ব্যবহার করা হবে। এটি প্রযুক্তি ও ঐতিহ্যের এক অনন্য মিলন।
কলকাতা: ইস্কন-এর কলকাতা রথযাত্রায় এ বছর ৪৮ বছরের ঐতিহ্য ভেঙে রথে সুখোয়ি যুদ্ধবিমানের টায়ার ব্যবহার করা হবে। এই পরিবর্তন প্রযুক্তিগত ও ঐতিহ্যগত উভয় দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ।
ইস্কন-এর কলকাতা রথযাত্রা ভারতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মীয় আবেগের একটি প্রধান প্রতীক। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই যাত্রায় অংশগ্রহণ করে এবং ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার আরাধনা করে। এইবার এই যাত্রায় একটি বড় পরিবর্তন দেখা যাবে, যা ৪৮ বছর ধরে চলে আসা ঐতিহ্যকে ভেঙে দেবে। এইবার ভগবান জগন্নাথের রথে সুখোয়ি যুদ্ধবিমানের টায়ার ব্যবহার করা হবে।
৪৮ বছরের ঐতিহ্য ভেঙে পরিবর্তন
গত চার দশক ধরে ইস্কন ভগবান জগন্নাথের রথ বোয়িং বিমানের টায়ারে চালিয়ে আসছে। এই টায়ারগুলি এত পুরানো হয়ে গেছে যে ১৫ বছর ধরে এর প্রতিস্থাপনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বোয়িংয়ের টায়ার পাওয়া এখন খুবই কঠিন হয়ে গেছে। এই কারণে ইস্কন সুখোয়ি যুদ্ধবিমানের টায়ার রথে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুখোয়ির টায়ারের ব্যাস বোয়িংয়ের টায়ারের সমান হওয়ায় এই বিকল্পটি বেছে নেওয়া হয়েছে।
সুখোয়ি টায়ারের নির্বাচন ও প্রক্রিয়া
ইস্কনের মুখপাত্র রাধারমণ দাস জানিয়েছেন, যখন ইস্কন সুখোয়ি টায়ার তৈরির কোম্পানির কাছে দাম চেয়েছিল, তখন কোম্পানিটি অবাক হয়ে গিয়েছিল। কোম্পানির কর্মকর্তারা বুঝতে পারছিলেন না কেউ তাদের টায়ার রথযাত্রার জন্য কেন চাইছে। পরে ইস্কন কোম্পানির কর্মকর্তাদের পুরো পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছে এবং কলকাতায় ডেকে রথও দেখিয়েছে। এরপর কোম্পানিটি ইস্কনকে চারটি টায়ার সরবরাহ করেছে। বর্তমানে রথে টায়ার লাগানোর কাজ চলছে।
প্রযুক্তি ও ঐতিহ্যের অনন্য মিলন
এই পরিবর্তন কেবল প্রযুক্তিগত নয়, এটি ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিলনের প্রতীকও। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আধুনিক প্রযুক্তির সমাবেশ নতুন দিক নির্দেশ করে। সুখোয়ি বিমানের টায়ার ব্যবহারের ফলে রথের গতি ও নিরাপত্তায় উন্নতি হবে। পাশাপাশি এই পদক্ষেপ ইস্কনের অগ্রগতিশীল চিন্তাধারা ও উদ্ভাবনকেও প্রতিফলিত করে।
কলকাতা রথযাত্রার গুরুত্ব
কলকাতায় অনুষ্ঠিত ইস্কন-এর রথযাত্রা কেবল ধর্মীয় আস্থার প্রতীক নয়, এটি সামাজিক সম্প্রীতি ও সাংস্কৃতিক উৎসবেরও অংশ। প্রতি বছর হাজার হাজার ভক্ত এই যাত্রায় অংশগ্রহণ করে এবং ভগবান জগন্নাথের দর্শন করে। এই যাত্রার আয়োজন ইস্কন বড় ধুমধাম করে করে, যা দেশ-বিদেশের ভক্তদের আকর্ষণ করে।
