ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্র নির্বাচন: আদর্শ আচরণবিধি ও নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত

ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্র নির্বাচন: আদর্শ আচরণবিধি ও নিষেধাজ্ঞার বিস্তারিত
সর্বশেষ আপডেট: 12-02-2025

দেশে প্রতিটি নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট এলাকায় আচরণবিধি কার্যকর করে। আজ মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন ঝাড়খণ্ড এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে। এর সাথে সাথে এই দুটি রাজ্যে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই আচরণবিধি কী এবং কোন কোন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকবে…

New Delhi: নির্বাচন কমিশনের আদর্শ আচরণবিধির বিধি ও নিয়মাবলী: নির্বাচন কমিশন আজ মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ড এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে। এর সাথে সাথে এই দুটি রাজ্যে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হবে, যার ফলে রাজ্যে নানা ধরণের নিষেধাজ্ঞাও কার্যকর হবে।

এই পরিস্থিতিতে আপনার জন্য এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ যে আদর্শ আচরণবিধির সময় কোন কোন কাজ নিষিদ্ধ থাকবে। নির্বাচন কমিশন দেশে কোন বাধা ছাড়াই স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য আদর্শ আচরণবিধির অধীনে কিছু নিয়ম ও মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে, যা সকল রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের অবশ্যই মানতে হবে।

বিধান কী কী?

এতে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল, প্রার্থী এবং ভোটারদের জন্য সাধারণ আচরণ সংক্রান্ত নিয়মাবলীর নির্ধারণ করেছে। এতে সভা, মিছিল, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া, ভোট কেন্দ্র, পর্যবেক্ষক এবং ঘোষণাপত্র সংক্রান্ত নিয়মাবলী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

রাজনৈতিক দল ও নেতাদের জন্য…

- বিভিন্ন জাতি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ বা ঘৃণা বৃদ্ধিকারী কার্যকলাপে অংশগ্রহণ না করা।

- নীতি ও কাজের সমালোচনা করা, কিন্তু কোন দল, নেতা বা কর্মীর ব্যক্তিগত জীবনে মন্তব্য করা যাবে না।

- কোন জাতি বা সম্প্রদায়ের আবেগ ব্যবহার করে ভোট প্রার্থনা করা যাবে না।

- মন্দির, মসজিদ অথবা অন্য কোন পূজাস্থল নির্বাচনী প্রচারের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

- ভোটারদের ঘুষ দেওয়া, ভয়ভীতি দেখানো এবং ভোট কেন্দ্র থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে প্রচার করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

- ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগে নির্বাচনী প্রচার ও জনসভায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

- কোন রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ ও ধর্ণা করা যাবে না।

- নেতারা তাদের অনুসারীদের কোন ব্যক্তির অনুমতি ছাড়াই তার সম্পত্তি, যেমন- জমি, ভবন ও আঙিনা, দেওয়ালে পতাকা লাগানো, ব্যানার টাঙ্গানো, নোটিস লাগানো বা স্লোগান লেখার অনুমতি দিতে পারবেন না।

- রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের সমর্থকরা অন্য দলের বৈঠক বা মিছিলে বাধা দেবে না এবং তা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করবে না।

- কোন দলের পক্ষ থেকে এমন স্থানের আশেপাশে মিছিল বের করা যাবে না যেখানে অন্য দলের বৈঠক চলছে। এক দলের লাগানো পোস্টার অন্য দলের কর্মীরা ছিড়ে ফেলবে না।

সভা/মিছিল এবং রাজনৈতিক বৈঠকের জন্য…

- সকল আয়োজককে মিছিলের স্থান ও সময়ের পূর্বেই পুলিশ কর্মকর্তাদের জানাতে হবে।

- রাজনৈতিক দল ও নেতাদের নিশ্চিত করতে হবে যে যেখানে তারা সভা করতে যাচ্ছে সেখানে পূর্বে কোন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর নেই।

- সভায় লাউডস্পিকার ব্যবহারের অনুমতি পূর্বেই নিতে হবে।

- সভার আয়োজকদের অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য পুলিশের সহায়তা নিতে হবে।

মিছিলের জন্য নিয়ম কী কী?

- মিছিল আয়োজনের পূর্বে এর শুরুর সময়, পথ, শেষের সময় ও স্থানের তথ্য পুলিশকে আগেই জানাতে হবে। -মিছিল বের হওয়া এলাকায় কোন নিষেধাজ্ঞা আছে কি না, তা আগে নিশ্চিত করতে হবে।

- মিছিলের ব্যবস্থাপনা এমনভাবে করতে হবে যাতে যানবাহন চলাচলে কোন প্রভাব না পড়ে।

- একই দিনে একই পথে একাধিক রাজনৈতিক দল যদি মিছিলের প্রস্তাব দেয়, তাহলে সময় নিয়ে আগে আলোচনা করা উচিত।

- মিছিল সড়কের ডান দিক দিয়ে বের করতে হবে। মিছিলের সময় কোন ধরণের অস্ত্র বা অন্য ক্ষতিকারক সামগ্রী নিয়ে চলাচল করা যাবে না। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা ও পরামর্শ কঠোরভাবে মানতে হবে।

ভোটগ্রহণের দিনের জন্য নির্দেশনা

ভোটগ্রহণের দিন সকল রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলিতে ধ্যান রাখতে হবে:

- রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা তাদের নিয়োজিত কর্মীদের পরিচয়পত্র বা বেজ প্রদান করবেন।

- নির্বাচনী কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের সাথে সহযোগিতা করবেন।

- ভোটারদের দেওয়া লিফলেট সাধারণ কাগজে হবে, তাতে কোন চিহ্ন, প্রার্থী বা দলের নাম থাকবে না।

- ভোটগ্রহণের দিন এবং তার ৪৮ ঘণ্টা আগে কাউকে মদ বিতরণ করা যাবে না।

- ভোট কেন্দ্রের কাছে তৈরি করা শিবিরে অযথা ভিড় জমা করা যাবে না।

- শিবির সাধারণ মানুষের জন্য হবে, এবং তাতে পোস্টার, পতাকা, প্রতীক বা অন্যান্য প্রচার সামগ্রী লাগানো যাবে না।

- ভোটগ্রহণের দিন যানবাহন চালানোর অনুমতি নিতে হবে।

- ভোট কেন্দ্র: ভোটার ছাড়া এমন কেউ ভোট কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করবে না যার কাছে নির্বাচন কমিশনের কোন স্বীকৃত পরিচয়পত্র নেই।

- পর্যবেক্ষক: পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবে নির্বাচন কমিশন। যদি প্রার্থীদের বা তাদের এজেন্টদের নির্বাচন পরিচালনার সাথে কোন অভিযোগ থাকে, তাহলে তারা তা পর্যবেক্ষকের নজরে আনতে পারেন।

সরকারী দলের জন্য নিয়ম

১. মন্ত্রীগণ সরকারী ভ্রমণের সময় নির্বাচনী প্রচার করবেন না।

২. সরকারী বিমান ও যানবাহন দলের স্বার্থে ব্যবহার করা যাবে না।

৩. সরকারী যন্ত্রপাতি ও কর্মীদের দলের স্বার্থে ব্যবহার করা যাবে না।

৪. হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং স্পটে সরকারী দলের একচেটিয়া অধিকার থাকবে না।

৫. সরকারী তহবিল থেকে দলের প্রচার করা যাবে না।

৬. কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী, প্রার্থী, ভোটার বা এজেন্ট ছাড়া অন্য কাউকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।

Leave a comment