অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন যে, ১৯৮০-এর দশকে কংগ্রেসের নিষ্ক্রিয়তার ফলেই পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি হয়ে উঠেছিল। যদি সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে ইতিহাস অন্যরকম হতো।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসকে দোষারোপ করেন: অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আবারও কংগ্রেসের উপর তীব্র আক্রমণ চালিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, ১৯৮০-এর দশকে যদি ভারত সময়মতো পাকিস্তানের ‘কাঁহুটা প্ল্যান্ট’-এর উপর প্রি-এম্প্টিভ স্ট্রাইক চালাতো, তাহলে পাকিস্তান আজ পারমাণবিক শক্তি হতে পারতো না। তিনি এটিকে কংগ্রেসের ঐতিহাসিক ভুল বলে অভিহিত করেছেন এবং দেশের কৌশলগত ব্যর্থতা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
কংগ্রেসের ভুলের ফলে পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি: শর্মার অভিযোগ
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ‘X’ নামক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে একটি পোস্ট করে বলেছেন যে, ভারতের নিষ্ক্রিয়তা এবং কংগ্রেসের দ্বিধাগ্রস্ততার কারণেই পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। তিনি লিখেছেন, "আজ যখন পৃথিবী পারমাণবিক হুমকি দূর করার দিকে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন ভারত সেই সময় ভুল করেছিল যখন তাকে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল।"
ভারতীয় সেনা প্রস্তুত ছিল, কিন্তু সরকার পিছিয়ে গেল
মুখ্যমন্ত্রী শর্মা জানিয়েছেন যে, সেই সময় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র Research and Analysis Wing (RAW) পাকিস্তানের কাঁহুটা পারমাণবিক কেন্দ্র সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য পেয়েছিল। ভারতীয় সেনাও কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রি-এম্প্টিভ এয়ারস্ট্রাইকের জন্য পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছিল। এমনকি ইসরাইলও এই অভিযানে প্রযুক্তিগত এবং কৌশলগত সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিল।
ইসরাইলের সাহায্য এবং জামনগর এয়ারবেসের প্রস্তুতি
শর্মার মতে, ইসরাইল যৌথ আকাশ আক্রমণের জন্য সাহায্য করার জন্য সম্মতি দিয়েছিল এবং ভারত জামনগর এয়ারবেসকে লঞ্চপ্যাড হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। অর্থাৎ সব কিছু প্রস্তুত ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক চাপের কারণে পিছিয়ে গেছেন। পরে রাজীব গান্ধী এই পরিকল্পনা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে দেন।
রাজীব গান্ধী ও বেনজির ভুট্টোর মধ্যে চুক্তি
শর্মা আরও জানিয়েছেন যে, ১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধী পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর সাথে একটি চুক্তি করেছিলেন, যেখানে উভয় দেশই একে অপরের পারমাণবিক স্থাপনার উপর আক্রমণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু তার এক দশক পরেই ১৯৯৮ সালে পাকিস্তান পারমাণবিক পরীক্ষা করে সারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল।
পারমাণবিক ঢালে লুকিয়ে পাকিস্তানের সাহস
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন যে, পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্রের ঢালে লুকিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে কার্গিল যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ এবং সীমান্ত পারাপার আক্রমণ চালিয়েছে। আজও পাকিস্তান পারমাণবিক হুমকি দিয়ে বিশ্বব্যাপী মঞ্চে নিজেকে নৈতিক বৈধতা দিতে চেষ্টা করে।
CPI(M)-এর নীতির উপরও আক্রমণ
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ইন্ডিয়া জোটের সহযোগী দল CPI(M)-এর ঘোষণাপত্রের উল্লেখ করে বলেছেন যে, এই দল ভারতের পারমাণবিক নীতি বাতিল করার কথা বলছে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হতে পারে। তিনি বলেছেন যে, এই ধরনের চিন্তাভাবনা দেশকে দুর্বল করতে পারে।