একনাথ শিন্ডের অসন্তোষ: মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়?

একনাথ শিন্ডের অসন্তোষ: মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়?
সর্বশেষ আপডেট: 15-04-2025

মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আবারও একটা চঞ্চলতা দেখা যাচ্ছে, আর এবারের কারণ হলেন উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের অসন্তোষ। ডঃ বাবাসাহেব আম্বেডকরের জন্মদিনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁকে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি, যার ফলে তাঁর অসন্তোষ আবারও শিরোনামে উঠে এসেছে।

মহারাষ্ট্র: মুম্বাইয়ের রাজনৈতিক উত্তাল পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই একটা নাম আবারও শিরোনামে উঠে এসেছে, একনাথ শিন্ডে। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী এবং শিবসেনা (শিন্ডে গ্রুপ)-এর প্রধান নেতা শিন্ডে আবারও তাঁর ‘মৌনতা’র মাধ্যমে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। অনুষ্ঠানটি ছিল ডঃ বাবাসাহেব আম্বেডকরের জন্মদিনের, এবং স্থান ছিল চৈত্যভূমি, যেখানে প্রতি বছর রাজ্যের বড় বড় নেতারা শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন এবং তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। কিন্তু এবার মঞ্চ থেকে শিন্ডের কণ্ঠস্বর অনুপস্থিত ছিল।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পাননি, অসন্তুষ্ট শিন্ডে ঠানে গেলেন

আম্বেডকর জয়ন্তী উপলক্ষে মুম্বাই মহানগরপালিকা কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানের পত্রিকায় প্রথমে উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে এবং অজিত পওয়ার উভয়ের বক্তৃতা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন করে কেবলমাত্র রাজ্যপাল সি. পি. রাধাকৃষ্ণন এবং মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এই পরিবর্তন কেবল তালিকায়ই নয়, শিন্ডের অসন্তোষেও প্রতিফলিত হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষ হতেই তিনি সরাসরি তাঁর গৃহনগরী ঠানে চলে যান।

ঠানেতে করলেন ‘চৈত্যভূমি’র বক্তৃতা

ঠানেতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একনাথ শিন্ডে সেই বক্তৃতা পাঠ করেন যা তিনি চৈত্যভূমিতে দেওয়ার কথা ছিল। এটি ছিল প্রতীকী কিন্তু অত্যন্ত প্রভাবশালী বার্তা - মঞ্চে না হলেও, তিনি তাঁর মতামত এবং শ্রদ্ধা ডঃ আম্বেডকরকে অবশ্যই জানাতে চান। যদিও শিন্ডে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন যে, চৈত্যভূমিতে এসে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোই আমার কাছে গর্বের বিষয়, কিন্তু তাঁর শৈলী এবং স্থান পরিবর্তন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সবকিছু ঠিকঠাক নেই।

নরম ভাষা, কিন্তু কঠোর বার্তা?

শিন্ডে মঞ্চে মৌন থাকার মাধ্যমেও অনেক কিছু বলে দিয়েছেন। এটা প্রথমবার নয় যখন তাঁকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এর আগে রায়গড়ে শিবাজী জয়ন্তী অনুষ্ঠানের সময়ও তাঁকে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি, কিন্তু দেবেন্দ্র ফড়নবিশের হস্তক্ষেপে শেষ মুহূর্তে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়। এবার হয়তো তা হয়নি। এই ধারাবাহিক ঘটনাগুলি প্রশ্ন তুলে ধরেছে - কি শিন্ডে মহাজোটে সমান স্থান পাচ্ছেন?

একদিন আগেই শিন্ডে ‘মহাজোটে ফাটল’ এর খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন যে, আমরা কাজ করি, অভিযোগ করি না। কিন্তু ড্যামেজ কন্ট্রোলের মতো এই বক্তব্য এখন আরও বেশি প্রশ্ন তুলে ধরছে। খবর হচ্ছে, শিন্ডে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অজিত পওয়ারের আচরণ নিয়ে অভিযোগও করেছেন, যদিও তিনি জনসম্মুখে এটা অস্বীকার করেছেন।

রাজনৈতিক ইঙ্গিতের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ

একনাথ শিন্ডে যদিও জনসম্মুখে শান্ত দেখাচ্ছেন, কিন্তু তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্য, ভঙ্গি এবং মঞ্চে মৌন থাকার পর সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা পাঠ করার কৌশলটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তিনি মহাজোটে তাঁর অবস্থান নিয়ে সচেতন। বারবার মঞ্চ থেকে দূরে রাখা হচ্ছে, রাজনৈতিক মর্যাদায় আঘাত করতে পারে এবং শিন্ডে হয়তো এটাই বার্তা দিতে চাইছেন যে তিনি এটা সহজে ছাড়বেন না।

Leave a comment