দিল্লিতে নতুন আবগারী নীতি: স্বচ্ছতা ও গ্রাহক স্বার্থে

দিল্লিতে নতুন আবগারী নীতি: স্বচ্ছতা ও গ্রাহক স্বার্থে
সর্বশেষ আপডেট: 14-06-2025

দিল্লি সরকার শীঘ্রই একটি নতুন আবগারী নীতি (Excise Policy) প্রয়োগ করতে চলেছে, যার উদ্দেশ্য রাজধানীর নাগরিকদের উচ্চমানের মদ সরবরাহ করা।

Excise Policy: দিল্লি সরকার আবারও রাজধানীর আবগারী নীতি সংক্রান্ত ব্যাপক পরিবর্তনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার সরকার রাজধানীতে একটি নতুন এবং স্বচ্ছ আবগারী নীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সরকারের লক্ষ্য হল দিল্লিতে মদের বিক্রয় এবং বিতরণ ব্যবস্থাকে আরও সংগঠিত, স্বচ্ছ, গ্রাহক-অনুকূল এবং সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল করা।

নতুন নীতি প্রণয়নের জন্য মুখ্য সচিব ধর্মেন্দ্র কুমারের অধ্যক্ষতায় একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা ৩০শে জুন ২০২৫-এর মধ্যে নীতির চূড়ান্ত খসড়া সরকারকে জমা দেবে। এই নীতি শুধুমাত্র আর্থিক রাজস্ব বৃদ্ধির উপর নয়, বরং সামাজিক ভারসাম্য, গ্রাহকের স্বার্থ এবং অবৈধ মদ নিরোধের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতেও বিশেষ নজর দেবে।

নতুন নীতির প্রধান উদ্দেশ্য: স্বচ্ছতা এবং গ্রাহকের স্বার্থ

মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার মতে, নতুন আবগারী নীতির মূল উদ্দেশ্য হল মদের মান নিশ্চিত করা, ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে বিক্রয় প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করা এবং লাইসেন্স ব্যবস্থায় উন্নতি সাধন করা। এছাড়াও অবৈধ মদের বিক্রয় সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সর্বজনীন স্থানে মদ্যপানের তদারকি করাও অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে।

রেখা গুপ্তা বলেন, আমরা এমন একটি নীতি চাই যা দিল্লির নাগরিকদের উচ্চমানের মদ সরবরাহ করবে, কিন্তু সামাজিক মূল্যবোধের সাথে কোন ধরনের সংঘাত হবে না।

শ্রেষ্ঠ মডেলের অধ্যয়ন

দিল্লি সরকারের এই কমিটি দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সফল আবগারী নীতির অধ্যয়ন করছে। যেসব রাজ্যে রাজস্ব বৃদ্ধি, অবৈধ মদ নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রাহক ভারসাম্যের মতো ক্ষেত্রে ভাল ফলাফল পাওয়া গেছে, সেসব রাজ্যের নীতির ইতিবাচক মডেল দিল্লিতে প্রয়োগ করা হবে। কমিটি রাজ্যের নীতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত করবে যে দিল্লির নতুন নীতি শুধুমাত্র রাজস্ব বৃদ্ধিই নয়, বরং ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই কাঠামোও সরবরাহ করবে।

মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা তার সংবাদ সম্মেলনে পূর্ববর্তী সরকারের আবগারী নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি এটিকে দুর্নীতিপূর্ণ, একপাক্ষিক এবং জনবিরোধী বলে আখ্যায়িত করে বলেছেন যে কিছু ব্যক্তিগত কোম্পানিকে অযৌক্তিক লাভ দিতে নিয়মকে উপেক্ষা করে নীতি তৈরি করা হয়েছিল।

তিনি বলেছেন, পূর্ববর্তী সরকারের আবগারী নীতি স্বচ্ছতা বা সামাজিক সুরক্ষা কোনোটাই মানেনি। এটাই কারণ যে নীতিটি প্রত্যাহার করতে হয়েছিল এবং এর ফলে বহু পূর্ববর্তী মন্ত্রী জেলে গেছেন।

৩০শে জুনের মধ্যে খসড়া প্রস্তুত হবে

নতুন আবগারী নীতি নিয়ে কাজ করছে এমন কমিটি ৩০শে জুন ২০২৫-এর মধ্যে সরকারকে প্রস্তাব জমা দেবে। এর জন্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে ব্যাপক আলোচনা, নীতিগত পর্যালোচনা এবং প্রশাসনিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আবগারী বিভাগ কমিটিকে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ও সম্পদ সরবরাহ করবে। নতুন আবগারী নীতিকে দুর্নীতিমুক্ত করার দিকেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। লাইসেন্স প্রক্রিয়ায় ই-টেন্ডারিং এবং ডিজিটাল ট্র্যাকিং সিস্টেম প্রয়োগ করা হবে। এছাড়াও, মদের দোকানের অবস্থান, সময়সীমা এবং সামাজিক প্রভাব বিবেচনা করে লাইসেন্স জারি করা হবে।

রেখা গুপ্তা সরকারের নীতির দ্বিতীয় প্রধান স্তম্ভ হল সামাজিক সুরক্ষা এবং জনস্বার্থ। নীতির কোনো এমন দিক থাকবে না যা সমাজের সংবেদনশীল শ্রেণীর যেমন, নারী, যুবক এবং নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার বলছে, এই নীতি শুধুমাত্র রাজস্বের মাধ্যম নয়, বরং সামাজিক দায়িত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হবে। এর অধীনে জনসচেতনতা অভিযান চালিয়ে মদ্যপানের অপব্যবহার রোধের দিকেও কাজ করা হবে।

Leave a comment