সিবিআই জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের বিরুদ্ধে ২,২০০ কোটি টাকার কিরু হাইড্রো প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করেছে।
জম্মু-কাশ্মীর: জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের অবস্থা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে একটি বহুল আলোচিত দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে। মামলাটি কিরু হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্রকল্পের সাথে জড়িত, যেখানে ২,২০০ কোটি টাকার সিভিল কাজের ঠিকায় कथিত অনিয়মের কথা উঠে এসেছে।
সিবিআই এই মামলায় মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে ট্রায়াল কোর্টে চার্জশিট দাখিল করেছে, যার মধ্যে সত্যপাল মালিকের নামও অন্যতম।
এই মামলাটি কী?
এই মামলাটি জম্মু-কাশ্মীরের কিশ্তোয়ার জেলার চেনাব নদীতে নির্মিত কিরু হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার প্রকল্পের সাথে সম্পর্কিত। এটি একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিদ্যুৎ প্রকল্প, যার মোট ক্ষমতা ৬২৪ মেগাওয়াট। এটি চেনাব ভ্যালি পাওয়ার প্রজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেড (CVPPPL) কর্তৃক উন্নত হচ্ছে।
এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা NHPC-এর ৫১% অংশীদারিত্ব রয়েছে, এবং জম্মু-কাশ্মীর স্টেট পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (JKSPDC)-এর ৪৯% অংশীদারিত্ব রয়েছে। এই সম্পূর্ণ প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৪,২৮৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে ২,২০০ কোটি টাকার সিভিল কাজের ঠিকা বিতর্কিত হয়েছে।
সত্যপাল মালিকের বড় দাবি
সত্যপাল মালিক যখন ২০০৮ সালের আগস্ট থেকে ২০০৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন, তখন তিনি উন্মোচন করেছিলেন যে, এই প্রকল্পের সাথে জড়িত ফাইলগুলি অনুমোদনের জন্য তাঁকে ৩০০ কোটি টাকার ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এই বিবৃতি তিনি নিজেই সর্বজনীনভাবে দিয়েছিলেন, যার পরে এই মামলাটি আরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে।
সিবিআই ২০২২ সালের এপ্রিলে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের অনুরোধে এই মামলার তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ঠিকা প্রদানের পদ্ধতিতে গুরুতর অনিয়ম বেরিয়ে এসেছে।
কোথায় হয়েছে অনিয়ম?
সিবিআই-এর তদন্তে দেখা গেছে যে, প্রকল্প নিয়ে CVPPPL-এর ৪৭তম বোর্ড বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, সিভিল ওয়ার্কসের ঠিকার জন্য ই-টেন্ডারিং এবং রিভার্স অকশনের মাধ্যমে পুনরায় টেন্ডার করা হবে। কিন্তু পরবর্তী অর্থাৎ ৪৮তম বোর্ড বৈঠকে হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পুনরায় টেন্ডার না করেই ঠিকাটি প্যাটেল ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডকে দেওয়া হয়েছিল।
সিবিআই-এর চার্জশিটে কারা আছেন?
সিবিআই-এর চার্জশিটে সত্যপাল মালিক ছাড়াও চেনাব ভ্যালি পাওয়ার প্রজেক্টস লিমিটেডের কিছু প্রাক্তন কর্মকর্তা এবং প্যাটেল ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদেরও নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার ধারণা, ঠিকা প্রদানের প্রক্রিয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়মের উপেক্ষা করা হয়েছে, যার ফলে কিছু সংস্থাকে লাভ হয়েছে।