বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা)-তে ব্যাপক রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখা গেছে। দলের সুপ্রিমো মায়াবতী তাঁর ভাতিজা আকাশ আনন্দকে জাতীয় সমন্বয়ক (নেশনাল কোঅর্ডিনেটর) পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।
লখনউ: বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা)-তে ব্যাপক রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখা গেছে। দলের সুপ্রিমো মায়াবতী তাঁর ভাতিজা আকাশ আনন্দকে জাতীয় সমন্বয়ক (নেশনাল কোঅর্ডিনেটর) পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। এই সাথে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তাঁর জীবদ্দশায় দলে কোন উত্তরাধিকারী ঘোষণা করা হবে না। মায়াবতী বলেছেন, তাঁর কাছে দল এবং আন্দোলন প্রথম, পারিবারিক সম্পর্ক পরে।
বসপা-তে বড় ধরনের পরিবর্তন
মায়াবতী দলের সংগঠনে পরিবর্তন আনতে আনন্দ কুমার এবং রাজ্যসভা সাংসদ রামজী গৌতমকে জাতীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তকে বসপার রণনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে দলের মধ্যে পারিবারিকতন্ত্রের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে মায়াবতী আকাশ আনন্দের শ্বশুর অশোক সিদ্ধার্থকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন।
মায়াবতী বলেছেন- 'কোন রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী নয়'
মায়াবতী তাঁর সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেছেন, "আমি এখন স্থির করেছি যে, যতদিন আমি জীবিত আছি, ততদিন দলে আমার কোন উত্তরাধিকারী থাকবে না। দলের সকল কর্মী ও নেতাই বসপার প্রকৃত উত্তরাধিকারী।" তিনি বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত দল এবং তার মূল আদর্শ রক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।
মায়াবতী আরও স্পষ্ট করেছেন যে, তাঁর ভাই আনন্দ কুমারের সন্তানদের বিয়ে এখন কোন রাজনৈতিক পরিবারে হবে না। তাঁর ধারণা, পারিবারিক সম্পর্ক যদি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকে, তাহলে দলের নীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেছেন, অশোক সিদ্ধার্থের কারণে দলকে অনেক ক্ষতি হয়েছে, যা তিনি আর দ্বিতীয়বার দেখতে চান না।
মায়াবতী সপা-বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন
আকাশ আনন্দ, যিনি মায়াবতীর উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিলেন, দলের সকল পদ থেকে সরানোর পর তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনুমান-অনুমান শুরু হয়েছে। দলীয় সূত্র অনুযায়ী, মায়াবতী এখন সংগঠনকে নতুন করে গড়ে তুলতে চান এবং এর জন্য একজন ব্যক্তির উপর নির্ভরশীলতা বন্ধ করতে চান। মায়াবতী তাঁর বক্তব্যে সমাজবাদী পার্টি (সপা) এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-কেও কটাক্ষ করেছেন।
তিনি বলেছেন, এই দুটি দল একই মুদ্রার দুটি দিক এবং শুধুমাত্র বসপাই তাদের সাথে লড়াই করতে পারে। মায়াবতী মিলকিপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে সপার পরাজয়ের কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, এখন সপা বসপাকে তাদের পরাজয়ের জন্য দোষারোপ করতে পারবে না। বসপা প্রধান কর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তিনি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দলের জন্য কাজ করে যাবেন।
তিনি দলের দুর্বলতার পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য ভবিষ্যতে আরও অনেক বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
