বঙ্গলুরুতে ভীড়ের ঘটনার পর কর্ণাটক সরকার নতুন আইন আনছে। আয়োজকদের অবহেলার জন্য ৩ বছরের জেল এবং ৫০,০০০ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
কর্ণাটক: বঙ্গলুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে সম্প্রতি ভীড়ের ঘটনার পর কর্ণাটক সরকার ভীড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবছে। এই ধারাবাহিকতায় রাজ্য সরকার একটি নতুন ভীড় ব্যবস্থাপনা বিল আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই আইনের অধীনে অনুষ্ঠানে অবহেলা করলে আয়োজকদের ৩ বছর পর্যন্ত জেল এবং ৫০,০০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। এই বিল বিশেষ করে খেলাধুলা প্রতিযোগিতা, বিবাহ অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে প্রযোজ্য হবে।
চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ভীড়ের ঘটনার পর সরকার সতর্ক
তিন সপ্তাহ আগে বঙ্গলুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে একটি বড় ভীড়ের ঘটনা ঘটেছিল। আইপিএল ম্যাচের টিকিট কিনতে আসা ভীড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, যার ফলে অনেকে আহত হয়। এই ঘটনা রাজ্য সরকারকে ভীড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গুরুত্বের সাথে ভাবতে বাধ্য করে। এখন কর্ণাটক সরকার এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য একটি কঠোর এবং স্পষ্ট আইন আনার দিকে কাজ করছে।
নতুন বিল: ভীড় ব্যবস্থাপনায় অবহেলার জন্য শাস্তি এবং জরিমানা
সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত নতুন বিলে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কোনও অনুষ্ঠানের সময় ভীড় নিয়ন্ত্রণে অবহেলা পেলে, দায়ী ব্যক্তিকে ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এই বিধান আয়োজকদের আরও দায়িত্বশীল এবং সতর্ক করে তুলবে। এই আইন অনুষ্ঠানের সময় নিরাপত্তা ও ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কোন অনুষ্ঠানে এই আইন প্রযোজ্য হবে?
প্রস্তাবিত বিলের আওতায় সেসব অনুষ্ঠান আসবে, যেখানে ভীড় জমার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এতে বিশেষ করে ক্রিকেট এবং ফুটবল ম্যাচ, বিবাহ অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক সমাবেশ অন্তর্ভুক্ত। সরকার এই অনুষ্ঠানগুলির জন্য সর্বোচ্চ উপস্থিতির সীমা নির্ধারণ করবে, যাতে নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করে ভীড় জমা না হয়। এতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও ভালোভাবে প্রয়োগ করা যাবে।
ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং মেলা এর বাইরে
সরকার স্পষ্ট করেছে যে এই বিল শুধুমাত্র সেসব অনুষ্ঠানে প্রযোজ্য হবে যেখানে সম্প্রতি অশান্তি বা ভীড়ের ঘটনা ঘটেছে। ধর্মীয় অনুষ্ঠান, উৎসব বা মেলায় এখনও পর্যন্ত এ ধরণের কোনও বড় ঘটনা রেকর্ড করা হয়নি, তাই সেগুলি এই আইনের আওতায় থাকবে না। তবে ভবিষ্যতে যদি এই অনুষ্ঠানগুলিতেও অশান্তি দেখা দেয়, তাহলে আইনের আওতায় বৃদ্ধি করা হতে পারে।
আয়োজকদের উপর দায়িত্ব বৃদ্ধি
নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর আয়োজকদের উপর এটি দায়িত্ব হবে যে তারা ভীড় নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা করবে। এতে প্রবেশ ও প্রস্থান পয়েন্টের সংখ্যা, নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ, প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং জরুরী অবস্থা মোকাবেলার প্রস্তুতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সরকার চায় যে আয়োজকরা শুধুমাত্র অনুষ্ঠানের বর্ণময়তার উপর নয়, মানুষের নিরাপত্তার উপরও সমান গুরুত্ব দেবে।