অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন রেড্ডির কাফিলার সাথে সড়ক দুর্ঘটনায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রেড্ডিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
Andhra Pradesh: অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং YSRCP (YSR কংগ্রেস পার্টি)-এর প্রধান জগনমোহন রেড্ডি একটি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনায় আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছেন। এই দুর্ঘটনাটি পালনাদু জেলার রেন্টাপল্লা গ্রামের কাছে ঘটে, যখন তিনি একজন প্রাক্তন YSRCP নেতার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এই দুর্ঘটনায় এক বৃদ্ধ ব্যক্তির ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। মৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ জগনমোহন রেড্ডিসহ তাঁর চালক এবং অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল
ঘটনাটি রবিবার ঘটে, যখন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি তাঁর কাফিলার সাথে রেন্টাপল্লা গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। পুলিশের মতে, পথে অটুকুরু বাইপাসে এক বৃদ্ধ ব্যক্তি সিংগাইয়া কাফিলার মধ্যে চলে আসেন এবং গাড়ির ধাক্কায় আহত হন। ধাক্কাটি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে সিংগাইয়ার ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রাক্তন YSRCP নেতার পরিবারের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলেন জগন
জানা গেছে যে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এক বছর আগে আত্মহত্যা করা YSRCP নেতার পরিবারের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। এই যাত্রাকালীন এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশের দাবি, এটি একটি আকস্মিক ঘটনা ছিল, কিন্তু জড়িত যানবাহনটি জগনমোহন রেড্ডির কাফিলার অংশ ছিল।
CCTV এবং ড্রোন ফুটেজ থেকে প্রমাণ পাওয়া গেছে
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠে এবং ঘটনাস্থল থেকে CCTV ফুটেজ, ড্রোন ফুটেজ এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক প্রমাণ সংগ্রহ করে। ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, মৃত ব্যক্তি সড়ক পারাপার করার সময় কাফিলার মধ্যে চলে এসেছিলেন। যদিও এটি একটি অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা ছিল, তবে পরে আত্মীয়-স্বজন অভিযোগ করে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
মৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের
মৃত সিংগাইয়ার স্ত্রী চিলি লুরধু মেরি স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির (BNS) ধারা 106(1)-এর অধীনে মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ এই অভিযোগটিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের দাবি, তারা নিরপেক্ষ তদন্ত করছে এবং প্রমাণ ছাড়া কাউকেই ক্লিনচিট দেওয়া হবে না।
যে নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে
অভিযোগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির সাথে তাঁর চালক রমন্না রেড্ডি, ব্যক্তিগত সহকারী নাগেশ্বর রেড্ডি, YSRCP-এর বর্ষীয় নেতা YV সুব্বা রেড্ডি, প্রাক্তন বিধায়ক পেরনি ভেঙ্কটরামাইয়া এবং প্রাক্তন মন্ত্রী বিদাদলা রজনী কুমারের নামও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এদের সকলের বিরুদ্ধে অপরাধজনিত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া
গুণ্টুরের SP সতীশ কুমার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দুর্ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার মতে, সড়ক যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং কাফিলার নিরাপত্তার সাথে সাথে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তাও গুরুত্বপূর্ণ। এই দিকে কোনো ত্রুটি থাকলে তাও তদন্তের আওতায় আনা হবে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক তীব্র হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলি এটিকে প্রশাসনিক অবহেলার দাবি করেছে এবং দাবি করেছে যে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকেও আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। অন্যদিকে, YSRCP এই ব্যাপারে সংযম অবলম্বন করে তদন্তের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের কথা বলেছে।
