আজ সকাল ১১ টায় অযোধ্যার শ্রী রামজন্মভূমি মন্দিরে ভব্য রামদরবারের প্রাণপ্রতিষ্ঠার শুভ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এই বিশেষ দিনে মন্দিরের উপমন্দিরগুলিতে স্থাপিত মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠাও করা হবে।
অযোধ্যা: ভগবান শ্রী রামের জন্মভূমি অযোধ্যা আবারও একটি ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে। ৫ই জুন ২০২৫-এ অযোধ্যার শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরে ভব্য রামদরবারের প্রাণপ্রতিষ্ঠার আয়োজন করা হচ্ছে। এই ঐতিহাসিক দিনে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজেই প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। একটি বিশেষ সংযোগ হলো, এই দিনটি সিএম যোগীর জন্মদিনও, যা আয়োজনটিকে আরও বিশেষ করে তুলে ধরেছে।
প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের সূচনা
সকাল ১১ টায় এই বিশেষ পূজা-বিধান শুরু হয়েছে, যেখানে বৈদিক ঐতিহ্য ও মন্ত্রোচ্চারণের মাঝে রামদরবার এবং গর্ভগৃহের চার কোণে অবস্থিত অন্যান্য সাতটি উপমন্দিরের মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ১০১ জন বিদ্বান আচার্য এই বৈদিক অনুষ্ঠানের পরিচালনা করছেন। হোম, অভিষেক, বিশেষ মন্ত্র ও বেদপাঠের সাথে এই অনুষ্ঠান অত্যন্ত পবিত্র পরিবেশে সম্পন্ন হচ্ছে।
রামদরবারে প্রাণপ্রতিষ্ঠা ‘অভিজিত মুহূর্তে’ করা হচ্ছে, যা বৈদিক পঞ্জিকা অনুসারে দিনের সবচেয়ে শুভ সময় বলে বিবেচিত হয়। এই মুহূর্তটি ১১:৪৫ টা থেকে ১২:৪৫ টার মধ্যে পড়ে। এই বিশেষ সময়ে দেববিগ্রহে প্রাণ জাগ্রত করা হবে, যার ফলে মন্দিরের আধ্যাত্মিক শক্তি অত্যন্ত প্রভাবশালী হয়ে উঠবে।
সিএম যোগীর অযোধ্যা সফর: আবেগে পরিপূর্ণ কর্মসূচী
সিএম যোগী আদিত্যনাথ আজ সকাল ১০:৩০ টায় অযোধ্যায় পৌঁছেছেন। প্রথমে তিনি হনুমানগড়ি মন্দিরে গিয়ে বজরঙ্গবলীর দর্শন করেছেন। এরপর তিনি শ্রী রাম জন্মভূমি পরিসরে রামললার দর্শন করেছেন এবং রামদরবারের প্রাণপ্রতিষ্ঠায় অংশগ্রহণ করেছেন। তার পুরো কর্মসূচী সারাদিন আধ্যাত্মিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে পরিপূর্ণ ছিল:
- বিকাল ২ টায় পুষ্পবাটিকায় বৃক্ষরোপণ করে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের বার্তা দিয়েছেন।
- বিকাল ২:১৫ টায় অযোধ্যা পৌরসভার আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।
- বিকাল ২:৫০ টায় ১৩তম সরযু জয়ন্তী মহোৎসবের উদ্বোধন করেছেন।
- বিকাল ২:৫৫ টায় সরযু তীরে অভিষেক ও আরতি করেছেন।
- বিকাল ৩:০৫ টায় মহন্ত নৃত্য গোপাল দাসজীর ৮৭তম জন্মোৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন।
- বিকাল ৩:৪৫ টায় অযোধ্যা থেকে লখনউয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
রামনগরী পেয়েছে বিশ্বব্যাপী পরিচয়
অযোধ্যার সাধু-মহন্তগণ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশংসা করেছেন। তাদের কথা হলো, যোগী সরকার অযোধ্যাকে শুধুমাত্র ধর্মীয় স্থান নয়, বরং একটি বিশ্বব্যাপী আধ্যাত্মিক কেন্দ্র রূপে গড়ে তুলেছে। রাম মন্দির নির্মাণ থেকে শহরের অবকাঠামো, পর্যটন ও সৌন্দর্যবর্ধনে জোর দিয়ে তিনি রামনগরীর হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারেন।
গত ৮ বছরে ৩২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অযোধ্যাকে নতুন রূপে উপস্থাপন করেছে। বিমানবন্দর, প্রশস্ত সড়ক, ভব্য প্রবেশদ্বার, পর্যটন কেন্দ্র এবং সরযু তীরের সৌন্দর্যবর্ধন অযোধ্যাকে বিশ্ব মানচিত্রে একটি বিশেষ স্থান দিয়েছে।
এই আয়োজন নিয়ে প্রশাসনও সম্পূর্ণ সতর্ক। অযোধ্যায় পুরোপুরি সুরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী এবং বিশেষ কমান্ডো দল নিয়োজিত করা হয়েছে। শ্রদ্ধাঞ্জলি দানকারীদের সুবিধার জন্য পার্কিং, পানীয় জল, প্রসাদ বিতরণ, চিকিৎসা সুবিধা এবং জরুরি সেবা প্রদানের ব্যাপক ব্যবস্থা করা হয়েছে।