সমাজবাদী পার্টি (সপা)-এর প্রবীণ নেতা এবং বিধায়ক আবু আজমী অরঙ্গজেবের প্রশংসা সংক্রান্ত বিতর্কিত বক্তব্যের ঘটনায় বড় স্বস্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার মুম্বাইয়ের একটি আদালত তাঁকে অগ্রিম জামিন মঞ্জুর করেছে।
মুম্বাই: মঙ্গলবার মুম্বাইয়ের একটি আদালত সমাজবাদী পার্টি (সপা)-এর বিধায়ক আবু আজমীকে মুঘল সম্রাট অরঙ্গজেবের প্রশংসা সংক্রান্ত মন্তব্যের ঘটনায় অগ্রিম জামিন দিয়েছে। আবু আজমীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এই মামলায় আদালত তাঁর যুক্তি শুনে এই স্বস্তি দিয়েছে। নিজের আবেদনে আবু আজমী বলেছেন, তাঁর মন্তব্যের উদ্দেশ্য কোনও ব্যক্তির অপমান করা বা কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা ছিল না। তাঁর এই যুক্তির উপর বিবেচনা করে অতিরিক্ত সেশন্স জজ ভি. জি. রঘুবংশী তাঁর অগ্রিম জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
মুম্বাইয়ের অতিরিক্ত সেশন্স জজ ভি.জি. রঘুবংশী আবু আজমীর অগ্রিম জামিন আবেদন গ্রহণ করে তাঁকে ২০,০০০ টাকা জামিন মুচলেকা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে, আদালত কিছু শর্তও আরোপ করেছে, যার পালন করা বাধ্যতামূলক হবে।
সম্পূর্ণ ঘটনা কি?
আবু আজমী সম্প্রতি মুঘল শাসক অরঙ্গজেবের প্রশংসা করে বলেছিলেন যে, তাঁর শাসনামলে ভারতের সীমানা আফগানিস্তান এবং মায়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং সেই সময়ে ভারতের অর্থনীতি বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের ২৪% ছিল। তিনি আরও দাবি করেছিলেন যে, সেই সময়ে ভারতকে "সোনার চিড়িয়া" বলা হত।
তাঁর এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং মহারাষ্ট্রে বিরোধী দলগুলি তাঁর উপর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগ আনে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির (বিএনএস) বিভিন্ন ধারার অধীনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
বিধানসভা থেকে নিলম্বন এবং রাজনৈতিক বিতর্ক
আজমীর এই বক্তব্যের জন্য মহারাষ্ট্র বিধানসভা তাঁকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত নিলম্বিত করেছিল। বিজেপি এবং অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছিল।
আবু আজমীর স্পষ্টীকরণ
আদালতে নিজের পক্ষে পেশ করা যুক্তিতে, আবু আজমীর আইনজীবী দাবি করেছেন যে, তাঁর মক্কেলের উদ্দেশ্য কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা বা কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের অপমান করা ছিল না। তিনি এটিকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেওয়া সাধারণ মন্তব্য বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এটিকে রাজনৈতিকভাবে বিকৃত করে তুলে ধরা হয়েছে।
আবু আজমী অগ্রিম জামিন পেয়ে স্বস্তি পেয়েছেন, তবে এই বিতর্কের রাজনৈতিক প্রভাব এখনও শেষ হয়নি। আগামী দিনগুলিতে এই বিষয় নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আরও উথাল-পাতাল হতে পারে।
