৩৩ বছর পর গহিরমাথায় অলিভ রিডলি কচ্ছপের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন

৩৩ বছর পর গহিরমাথায় অলিভ রিডলি কচ্ছপের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন
সর্বশেষ আপডেট: 09-03-2025

৩৩ বছর পরে ওড়িশার গহিরমাথা সমুদ্র সৈকতে অলিভ রিডলি কচ্ছপের ফিরে আসা। দুদিনে একাকুলানাসি দ্বীপে প্রায় ১.৭ লক্ষ কচ্ছপ বাসা তৈরি করতে এসেছে।

ওড়িশা নিউজ: ওড়িশার গহিরমাথা সমুদ্র সংরক্ষিত এলাকার একাকুলানাসি দ্বীপে ৩৩ বছর পর বিপন্ন অলিভ রিডলি কচ্ছপের ফিরে আসা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ১৯৯২ সালের পর প্রথমবার হাজার হাজার কচ্ছপ এখানে ডিম পাড়তে এসেছে। এই বছর এ পর্যন্ত প্রায় ১.৭ লক্ষ কচ্ছপ এই সৈকতে এসেছে, যা সংরক্ষণ প্রচেষ্টার সাফল্যকে তুলে ধরে।

সংরক্ষণ প্রচেষ্টার প্রভাব

your image

এই বিষয়ে তথ্য দিতে গিয়ে ওড়িশা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মানস দাস জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রচেষ্টার ফলেই বহু বছর পর অলিভ রিডলি কচ্ছপ এখানে ফিরে এসেছে। এর আগে ১৯৯২ সালে ৩ লক্ষ কচ্ছপ এখানে ডিম পাড়তে এসেছিল।

সমুদ্র সৈকতের বিস্তারের ফলে অনুকূল পরিবেশ

সমুদ্র ভাঙনের সমস্যার কারণে একাকুলানাসি দ্বীপের সমুদ্র সৈকত সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে কচ্ছপের জন্য উপযুক্ত জায়গা আর বাকি ছিল না। তবে ২০২০ সাল থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে এবং এখন সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়েছে। এর ফলে কচ্ছপদের বাসা তৈরির জন্য যথেষ্ট জায়গা পাওয়া গেছে।

নতুন বাসা তৈরির প্রবণতা

গহিরমাথায় মূলত নাসি-২ সমুদ্র সৈকতকে কচ্ছপের জন্য আদর্শ স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হত, যেখানে এই বছর ২.৬৩ লক্ষ কচ্ছপ ডিম পাড়তে এসেছে। কিন্তু এখন একাকুলানাসি দ্বীপেও বেশির সংখ্যক কচ্ছপ ডিম পাড়া শুরু করেছে, যার ফলে এই স্থানটিও তাদের পছন্দের বাসা তৈরির স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে।

অলিভ রিডলি কচ্ছপের গুরুত্ব

- অলিভ রিডলি বিশ্বের সবচেয়ে ছোটো সমুদ্র কচ্ছপ, কিন্তু এদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
- এই কচ্ছপগুলি তাদের সমূহীয় বাসা তৈরির (Mass Nesting) জন্য বিখ্যাত।
- এরা মূলত হিন্দ মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরের উষ্ণ জলের অঞ্চলে পাওয়া যায়।
- গহিরমাথা সমুদ্র সৈকত বিশ্বে এদের সবচেয়ে বড় বাসা তৈরির স্থান।

৪৫ দিন পরে জন্ম নেবে ছোটো কচ্ছপ

অলিভ রিডলি কচ্ছপ ডিম পাড়ার পর সমুদ্রে ফিরে যায়। প্রায় ৪৫ দিন পর এই ডিম থেকে ছোটো কচ্ছপ বেরিয়ে আসে, যারা কোনো মাতৃসুরক্ষা ছাড়াই নিজেদের সমুদ্র জীবনের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। এটি প্রকৃতির অদ্ভুত সৃষ্টির উদাহরণ।

সংরক্ষণের জন্য আরও প্রচেষ্টা বাড়ানো হবে

বন বিভাগের মতে, ভবিষ্যতে কচ্ছপের সংখ্যা বাড়ানো এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে এই দিকে জড়িত করে সচেতনতা অভিযান পরিচালনা করা হবে, যাতে এই বিরল কচ্ছপের অস্তিত্ব দীর্ঘদিন ধরে টিকে থাকে।

Leave a comment