২৭ বছর পর দিল্লিতে বিজেপির ঐতিহাসিক জয়: ৫ নেতার কৌশলগত ভূমিকা

২৭ বছর পর দিল্লিতে বিজেপির ঐতিহাসিক জয়: ৫ নেতার কৌশলগত ভূমিকা
সর্বশেষ আপডেট: 10-02-2025

২০২৫ সালের দিল্লি নির্বাচনে ২৭ বছর পর ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। পাঁচজন প্রধান নেতা কৌশল তৈরি করে আপের ভোট ব্যাঙ্কে ফাটল ধরিয়ে দিয়েছেন এবং মোদীর প্রতিশ্রুতিগুলি ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

দিল্লি নির্বাচনের ফলাফল: ২০২৫ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ঐতিহাসিক জয় অর্জন করেছে। ৪৮টি আসনে জয়ী হয়ে বিজেপি আম আদমি পার্টি (আপ)-এর চতুর্থবারের জন্য সরকার গঠনের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা এবং বিজেপির কৌশলগত প্রস্তুতি এই জয়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

তিন বছর আগে তৈরি হয়েছিল নির্বাচনী কৌশল

দিল্লি নির্বাচন জয়ের জন্য বিজেপি তিন বছর আগে থেকেই কৌশল তৈরি শুরু করেছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি দিল্লিতে ফোকাস বাড়িয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে শক্তিশালী অবস্থান তৈরির জন্য অনেক নেতাকে বিভিন্ন দায়িত্ব দিয়েছে। দলের পরিকল্পনা ছিল আপের ভোট ব্যাঙ্কে ফাটল ধরানো এবং মোদীর প্রতিশ্রুতিগুলি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। এই অভিযানে বিজেপির পাঁচজন বড় নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং দলকে ২৭ বছর পর ক্ষমতায় ফিরিয়ে এনেছেন।

দিল্লি বিজয়ে এই ৫ নেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

১. রমেশ পোখরিয়াল निশंक: কেজরিওয়ালের দুর্গে ফাটল

উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল निশঙ্ককে বিজেপি দিল্লির পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ আসনের দায়িত্ব দিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে নতুন দিল্লি, আরকেপুরম, কস্তুরবা নগর, মালবিয় নগর এবং গ্রেটার কৈলাশ। এর মধ্যে নতুন দিল্লি আসনে অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রার্থী ছিলেন, কিন্তু বিজেপির কৌশলের ফলে কেজরিওয়ালকে পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে। এই পাঁচটি আসনেই বিজেপি জয়ী হয়েছে।

২. মোহন যাদব: মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লিতে কীর্তি

মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদবকে দিল্লির ১২টি বিধানসভার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১১টি আসনে বিজেপি জয়ী হয়েছে, আর শুধুমাত্র সীলমপুর আসনে পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে। যে আসনগুলির দায়িত্ব তিনি পেয়েছিলেন, তার মধ্যে রয়েছে হরিনগর, মাদিপুর, রোহিনি, মুস্তফাবাদ, সীলমপুর, বাদলি, ত্রিনগর, বিকাশপুরী, নাগলই জাট, উত্তম নগর, নজফগড় এবং মালবিয় নগর। মোহন যাদবের পরিশ্রম এবং নির্বাচনী কৌশল বিজেপিকে বড় সুবিধা করেছে।

৩. সিদ্ধার্থনাথ সিংহ: মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় কীর্তি

উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং ইলাহাবাদের বিধায়ক সিদ্ধার্থনাথ সিংহকে বিজেপি নবীন শাহদরা এলাকার পাঁচটি আসনের দায়িত্ব দিয়েছিল। তিনি নির্বাচনী প্রচারে এত ব্যস্ত ছিলেন যে কুম্ভের অমৃত স্নানেও যোগ দিতে পারেননি। তার পরিশ্রমের ফলে বিজেপি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায়ও অগ্রগতি করেছে। তবে, তার তত্ত্বাবধানে বিজেপি মাত্র দুটি আসনে জয়ী হয়েছে, কিন্তু এই আসনগুলি দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছে।

৪. মুখতার আব্বাস নকভী: জয়ের মাস্টার স্ট্রোক

বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভী নির্বাচনী কৌশলের মূল দলের সদস্য ছিলেন। তাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার কর্মক্ষেত্রে আসা ৯০% আসনে বিজেপি জয়ী হয়েছে। তার কার্যকর প্রচার অভিযান বিজেপির জয়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

৫. শাহনওয়াজ হুসেন: পূর্বাঞ্চলীয় ভোটারদের প্রভাবিত করেছেন

শাহনওয়াজ হুসেন বিজেপির জনপ্রিয় মুসলিম নেতা, কিন্তু দিল্লি নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা একজন পূর্বাঞ্চলীয় নেতা হিসেবেও ছিল। তিনি মোতিনগর, মালবিয় নগর, মুস্তফাবাদ, বাল্লিমারান এবং কৃষ্ণানগর সহ সাতটি বিধানসভা আসনে প্রচার করেছেন। তাঁর ফোকাস বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলীয় ভোটারদের বিজেপির পক্ষে আনার উপর ছিল, যার সুবিধা দল পেয়েছে।

Leave a comment