প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিগত ১১ বছরে ভারত দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০১-১২ থেকে ২০২২-২৩-এর মধ্যে ভারত প্রায় ২৬.৯ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্যের অবস্থা থেকে বের করে এনেছে।
নয়াদিল্লি: মোদী সরকারের ১১ বছরের कार्यकालে দেশে দারিদ্র্যের হারে উল্লেখযোগ্য হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দূরদর্শী নীতি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচীর ফলে ভারত চরম দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে। ২০০১-১২ সালে যেখানে দেশের চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ২৭.১ শতাংশ, সেখানে ২০২২-২৩ সালে এসে তা কমে মাত্র ৫.৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
এই সময়কালে ভারতে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপনকারী মানুষের সংখ্যা ৩৪৪.৪৭ মিলিয়ন থেকে কমে ৭৫.২৪ মিলিয়নে নেমে এসেছে। অর্থাৎ, বিগত ১১ বছরে প্রায় ২৬৯ মিলিয়ন মানুষ চরম দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে।
চরম দারিদ্র্যে প্রচুর হ্রাস
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন জানাচ্ছে যে, ২০০১-১২ সালে ভারতের চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ২৭.১%, যা ২০২২-২৩ সালে কমে মাত্র ৫.৩% হয়েছে। এই হ্রাস কেবল স্থায়ী নয়, বরং এটি দেখায় যে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য কেন্দ্র সরকারের পরিকল্পনাগুলি কার্যকর ছিল। ২০০১-১২ সালে দেশে প্রায় ৩৪৪.৪৭ মিলিয়ন মানুষ চরম দারিদ্র্যে জীবনযাপন করছিল, যখন ২০২২-২৩ সালে এসে এই সংখ্যা কমে মাত্র ৭৫.২৪ মিলিয়নে নেমে এসেছে। অর্থাৎ, বিগত ১১ বছরে প্রায় ২৬৯ মিলিয়ন অর্থাৎ ২৬.৯ কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে।
এই ৫ টি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ এবং মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে ২০০১-১২ সালে ভারতের ৬৫% দরিদ্র মানুষ বাস করত। কিন্তু দারিদ্র্য হ্রাসে এই রাজ্যগুলিই সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। এই রাজ্যগুলির পরিকল্পনা এবং কেন্দ্র সরকারের উদ্যোগের ফলে দারিদ্র্যের হারে ব্যাপক হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে।
শহুরে ও গ্রামীণ উভয় ক্ষেত্রেই উন্নতি
- দারিদ্র্য হ্রাস কেবল শহরগুলিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং গ্রামগুলিতেও পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে।
- গ্রামীণ এলাকায় চরম দারিদ্র্য ২০০১-১২ সালে ১৮.৪% ছিল, যা ২০২২-২৩ সালে কমে ২.৮% হয়েছে।
- শহুরে এলাকায় এই হার ১০.৭% থেকে কমে মাত্র ১.১% হয়েছে।
- এই থেকে স্পষ্ট যে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং সবার জন্য সুযোগ সৃষ্টি সমাজের সর্বশেষ স্তরেও পৌঁছেছে।
বহুমাত্রিক দারিদ্র্যেও ব্যাপক হ্রাস
ভারত কেবল আয়-ভিত্তিক দারিদ্র্য নয়, বহুমাত্রিক দারিদ্র্য (Multidimensional Poverty Index - MPI) এর ক্ষেত্রেও চমৎকার সাফল্য অর্জন করেছে।
- ২০০৫-০৬ সালে MPI ছিল ৫৩.৮%, যা ২০০৯-২১ সালে কমে ১৬.৪% এবং ২০২২-২৩ সালে ১৫.৫% হয়েছে।
- এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার মানের উপর ভিত্তি করে পরিমাপ করা হয়।
দারিদ্র্য দূরীকরণে মোদী সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দারিদ্র্য নির্মূলের জন্য ‘সবার জন্য সুযোগ, সবার জন্য উন্নয়ন’ এর মন্ত্র গ্রহণ করেছেন। কিছু প্রধান পরিকল্পনা যা এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করেছে:
- প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা: দরিদ্রদের পাকা ঘর দেওয়ার ঐতিহাসিক পরিকল্পনা।
- উজ্জ্বলা যোজনা: নারীদের বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগ এবং পরিষ্কার জ্বালানি।
- জনধন যোজনা: কোটি কোটি দরিদ্র মানুষকে ব্যাংকিং ব্যবস্থার সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
- আয়ুষ্মান ভারত: ৫০ কোটিরও বেশি মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য বীমা।
- ডিজিটাল ইন্ডিয়া এবং DBT: ভর্তুকি এবং পরিকল্পনার সুবিধা সরাসরি উপকৃতদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে দুর্নীতি কমেছে।
- এই সমস্ত পরিকল্পনা দারিদ্র্য নির্মূলে সিদ্ধান্তমূলক ভূমিকা পালন করেছে এবং অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকে নতুন গতি দিয়েছে।
মোদী সরকারের ডিজিটাল উদ্যোগ সরকারী সাহায্য সরাসরি উপকৃতদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে। এর ফলে কেবলমাত্র সুবিধার অপব্যবহার বন্ধ হয়নি, বরং দ্রুত কোটি কোটি মানুষ পরিকল্পনার সুবিধা পেয়েছে। ২৫ কোটিরও বেশি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনার ক্ষেত্রে ডিজিটাল অবকাঠামো একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে।