ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (RBI) তাদের ২০২৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতি ৬.৫% হারে বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি অর্থাৎ মূল্যবৃদ্ধি প্রায় ৪% লক্ষ্যের কাছাকাছি থাকবে। প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রতি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে, যদিও বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জগুলির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের অর্থনীতি হবে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল
RBI স্পষ্ট করেছে যে, আগামী অর্থবর্ষে ভারত বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে টিকে থাকবে। দেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক গঠন, সুদৃঢ় আর্থিক ব্যবস্থা এবং টেকসই উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতি এই সাফল্যের প্রধান কারণ হবে।
প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে যে, বিশ্ববাজারের অস্থিরতা, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ বৃদ্ধির জন্য হুমকি। তবে, এই চ্যালেঞ্জগুলি সত্ত্বেও ভারতের বৃদ্ধির হার শক্তিশালী থাকার আশা করা হচ্ছে।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে RBI-র আস্থা
RBI অনুমান করেছে যে, মুদ্রাস্ফীতি ৪% এর কাছাকাছি থাকবে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এর অর্থ হল মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে যে, ব্যাংকগুলিকে সুদের হার পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি থেকে সাবধান থাকতে হবে, বিশেষ করে লাভ (शुद्ध ब्याज मार्जिन) কমে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে।
RBI-র ব্যালেন্স শিটে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের আর্থিক অবস্থাও শক্তিশালী হয়েছে। ৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত RBI-র ব্যালেন্স শিটের আকার ৮.২০% বৃদ্ধি পেয়ে ৭৬.২৫ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। এই বৃদ্ধি মূলত সোনা, দেশীয় বিনিয়োগ এবং বিদেশী বিনিয়োগে বৃদ্ধির ফলে সম্ভব হয়েছে।
এর ফলে RBI কেন্দ্রীয় সরকারকে ২.৬৯ লক্ষ কোটি টাকা লভ্যাংশও দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ব্যাংকের আয় ২২.৭৭% বৃদ্ধি পেয়েছে, যখন ব্যয় মাত্র ৭.৭৬% বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে, বছরের শেষে RBI-র উদ্বৃত্ত ছিল ২,৬৮,৫৯০ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৭% বেশি।
আর্থিক বাজারে অস্থিরতা এবং রপ্তানিতে প্রভাব
প্রতিবেদনে এও সতর্কতা জারি করা হয়েছে যে, শুল্ক নীতি পরিবর্তনের ফলে আর্থিক বাজারে কিছু কিছু স্থানে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, ভারতের রপ্তানিকেও “অন্তর্মুখী নীতি” এবং শুল্ক যুদ্ধের কারণে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে।
RBI বলেছে যে, ভারতের বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর এবং ক্রমাগত আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলি কমাতে সাহায্য পাওয়া যাবে। সেবা খাতের রপ্তানি এবং বিদেশ থেকে আসা প্রেরণও চলতি হিসাব ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হবে।
RBI-র নীতি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক
RBI অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করার জন্য ক্রমাগত দুবার নীতিগত সুদের হার কমিয়েছে। ভবিষ্যতেও মুদ্রানীতি উন্নয়নের জন্য সহায়ক হিসেবে রাখা হবে, যার ফলে বিনিয়োগ ও উৎপাদনে বেগ বাড়বে।