ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন: ৩০০ কিমি ভায়াডাক্ট নির্মাণ সম্পন্ন, ২০২৬ সালে ট্রায়াল রানের আশা

ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন: ৩০০ কিমি ভায়াডাক্ট নির্মাণ সম্পন্ন, ২০২৬ সালে ট্রায়াল রানের আশা
সর্বশেষ আপডেট: 24-05-2025

ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্পে ৩০০ কিমি ভায়াডাক্ট নির্মাণ সম্পন্ন, ২০২৬ সালে সুরাট-বিলীমোরা-র মধ্যে ট্রায়াল রানের আশা, কাজ দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে।

বুলেট ট্রেন: ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্প দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব একটি ভিডিও শেয়ার করে জানিয়েছেন যে, মুম্বাই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্পের অধীনে ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভায়াডাক্ট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ, এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্পে আরও একটি বড় সাফল্য যুক্ত হল। এখন ধারণা করা হচ্ছে যে, আগামী বছর এই বুলেট ট্রেনের ট্রায়াল রান শুরু হতে পারে।

চলুন, এই খবরটি বিস্তারিতভাবে বুঝে নেওয়া যাক—

বুলেট ট্রেন প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা কী?

মুম্বাই থেকে আহমেদাবাদ-এর মধ্যে নির্মিত হচ্ছে এ বুলেট ট্রেন লাইনের মোট ৩০০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ২৫৭.৪ কিলোমিটার নির্মাণ হয়েছে ফুল স্প্যান লঞ্চিং টেকনোলজি দিয়ে। এই টেকনোলজির সাহায্যে কাজের গতি ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে, যার ফলে কাজ দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে।

এই সময়ের মধ্যে অনেক নদীর উপর সেতু, স্টিল ও পিএসসি ব্রিজ, স্টেশন বিল্ডিং-এরও নির্মাণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত এই প্রকল্পে ৩৮৩ কিলোমিটার পিয়ার্স, ৪০১ কিলোমিটার ফাউন্ডেশন এবং ৩২৬ কিলোমিটার গার্ডার কাস্টিং সম্পন্ন হয়েছে।

কবে থেকে ট্রায়াল রান শুরু হবে এবং কবে পর্যন্ত বুলেট ট্রেন চলবে?

রেলওয়ে কর্মকর্তা এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, বুলেট ট্রেনের ট্রায়াল রান আগামী বছর শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ ২০২৬ সালে কিছু রুটে ট্রেনের ট্রায়াল রান দেখা যেতে পারে।

যদি সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে, তাহলে ২০২৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের অধীনে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হওয়ার আশা করা হচ্ছে। এর অর্থ হল ২০২৯ সাল থেকে মুম্বাই এবং আহমেদাবাদ-এর মধ্যে বুলেট ট্রেনে যাত্রা করা সম্ভব হবে।

ভারতেই নির্মিত হচ্ছে বুলেট ট্রেনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি

এই প্রকল্পের একটি বিশেষ দিক হল এতে ব্যবহৃত অধিকাংশ প্রযুক্তি এবং সম্পদ ভারতেই তৈরি করা হচ্ছে। চাই লঞ্চিং গ্যান্ট্রি হোক, ব্রিজ গ্যান্ট্রি হোক অথবা গার্ডার ট্রান্সপোর্টার—এগুলি সবই ভারতে তৈরি। এটি ভারতের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার দিকে আরও একটি বড় পদক্ষেপ প্রমাণিত হচ্ছে।

ফুল স্প্যান টেকনোলজি দিয়ে প্রতিটি স্প্যান গার্ডার প্রায় ৯৭০ টন ওজনের হয়। তদুপরি, শব্দ কমাতে ভায়াডাক্টের উভয় পাশে ৩ লক্ষের বেশি নয়েজ ব্যারিয়ার স্থাপন করা হয়েছে যাতে ট্রেনের গতির ফলে আশপাশের এলাকায় শব্দ না যায়।

কোথা থেকে কোথা পর্যন্ত চলবে বুলেট ট্রেন?

বুলেট ট্রেনের জন্য মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটে বেশ কিছু ডিপো তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমান আপডেট অনুযায়ী, আগামী বছরের শুরুতে জাপান থেকে শিনকানসেন ট্রেনের কোচ ভারতে আসতে পারে। এবং ২০২৬ সালের আগস্টের মধ্যে সুরাট থেকে বিলিমোরা-র মধ্যে বুলেট ট্রেন চালানো যেতে পারে।

সুরাটে ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন স্টেশন প্রায় প্রস্তুত। বাকি স্টেশনগুলিতেও দ্রুত কাজ চলছে। এই রুটে মোট ১২টি স্টেশন হবে, যার মধ্যে অনেক স্টেশন গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের প্রধান শহরগুলিতে অবস্থিত হবে।

কেন ভারতের জন্য বিশেষ বুলেট ট্রেন প্রকল্প?

  • বুলেট ট্রেন শুধু একটি নতুন ট্রেন নয়, বরং এটি ভারতের অবকাঠামোকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া একটি প্রকল্প।
  • এর ফলে ভারত উচ্চ-গতির ট্রেন প্রযুক্তিতে আত্মনির্ভর হচ্ছে।
  • এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের প্রকৌশলী ক্ষমতারও উন্নত প্রদর্শন হচ্ছে।
  • লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে।
  • যাত্রীরা নিরাপদ এবং দ্রুত ভ্রমণের নতুন অভিজ্ঞতা পাবে।

রেলমন্ত্রীর আপডেট এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ক্রমাগত এই প্রকল্পের সাথে সম্পর্কিত তথ্য ভাগ করে নিচ্ছেন। তিনি সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে ৩০০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। তাঁর মতে, আগামী মাসগুলিতে আরও বড় আপডেট সামনে আসবে।

রেলমন্ত্রী এটাও জানিয়েছেন যে, প্রকল্পটি নিয়ে যুদ্ধকালীন অবস্থায় কাজ করা হচ্ছে যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভারতীয়রা বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দেখতে পায়।

Leave a comment