নুসরাত ভরুচার এই ছবিতে ভূতের বদলে দেখানো হয়েছে সমাজের কুসংস্কার ও রীতিনীতির ভয়। ছবিটি কন্যা ভ্রূণ হত্যা এবং মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের দিকে আলোকপাত করেছে, তবে কিছু ত্রুটি এর শক্তিকে কমিয়ে দিয়েছে। জেনে নিন ছবির পুরো গল্প এবং প্রধান দিকগুলি।
ছোড়ি ২ রিভিউ: নুসরাত ভরুচা আবারও ‘ছোড়ি ২’ দিয়ে ফিরে এসেছেন, কিন্তু এবার ছবিতে ভয়ঙ্কর ভূতের বদলে তিনি সমাজের কুসংস্কার ও রীতিনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেখা যাচ্ছে। ২০২১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ছোড়ি’র সিক্যুয়েলে নুসরাত ভরুচা এবার হররের পাশাপাশি সমাজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাও তুলে ধরেছেন। তাহলে কি ‘ছোড়ি ২’র গল্পে ভয় ও সাসপেন্স আছে, এবং কি এই ছবি তার উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণরূপে সফল হতে পেরেছে? আসুন, একনজর দেখে নেওয়া যাক।
ছবির গল্প ও থ্রিল
‘ছোড়ি ২’র গল্প সাক্ষী (নুসরাত ভরুচা) এবং তার মেয়ে ইশানীর চারপাশে ঘোরে। সাক্ষী তার স্বামীর হত্যার পর গ্রাম ছেড়ে শহরে আশ্রয় নেয়, যেখানে তার মেয়েকে এক রহস্যময় শক্তির মুখোমুখি হতে হয়। ছবির প্রধান উপাদান হল এখানে ভূত-প্রেত নয়, বরং কুসংস্কার ও রীতিনীতি, যেমন কন্যা ভ্রূণ হত্যা এবং মেয়েদের বিরুদ্ধে হিংসা, তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এই বার্তাই ছবির মূল ভাবনা, কিন্তু যেখানে ভয়ের আশা করা হয়েছিল, সেখানে ছবি তার পথ থেকে বিচ্যুত হতে দেখা যাচ্ছে।
শক্তিশালী দিক ও ছবির সামাজিক বার্তা
ছবির সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হল এর সামাজিক বার্তা। পরিচালক খুব সহজ উপায়ে কন্যা ভ্রূণ হত্যা এবং মেয়েদের বলি দেওয়ার প্রথাগুলিকে উন্মোচন করেছেন, যা আজও অনেক গ্রামে চলছে। এই বার্তা ভূত-প্রেতের ছবিতে দেখানো ভয়ের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর। তবে, ছবির হরর উপাদানে ঘাটতি দেখা যায়, যার ফলে দর্শক ভয়ের বদলে শুধুমাত্র সামাজিক বিষয়গুলিতে বেশি মনোযোগ দেয়।
ছবির কিছু দুর্বল দিক
গল্পে অনেক জায়গায় লজিক্যাল ত্রুটি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ছবিতে স্পষ্ট করা হয়নি যে সাক্ষীর মেয়ে ইশানী এবং দাসী মা কেন সূর্যের আলোর প্রতি অ্যালার্জি, যা গল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এছাড়াও, সাক্ষীর চরিত্র নিয়েও কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে, যেমন তার স্বামীর হত্যার পর সে কেন হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়ে, এবং তার বীরত্বের আবির্ভাবও কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই ঘটে। এই সব বিষয় ছবির সাসপেন্সকে দুর্বল করে দিয়েছে।
অভিনয়শিল্পী ও অভিনয়
নুসরাত ভরুচা তার চরিত্রের সাথে ভালো ন্যায়বিচার করেছেন, তবে কিছু দৃশ্যে তিনি তুলনামূলকভাবে দুর্বল দেখিয়েছেন, যেমন কূপের দৃশ্যে তার অভিনয় তেমন প্রভাব ফেলেনি। সোহা আলি খান দাসীর ভূমিকায় চমৎকার অভিনয় করেছেন এবং তার চরিত্রের দেহভঙ্গি ও সংলাপের উপস্থাপনা খুবই কার্যকর হয়েছে। গশ্মীর মহাজনীর চরিত্র সাধারণ ছিল, তবে তিনি তা সঠিকভাবে পালন করেছেন।
কি দেখা যাবে
যদি আপনি ছবিটি শুধুমাত্র হরর দিক থেকে দেখেন, তাহলে ‘ছোড়ি ২’ কিছুটা হতাশ করতে পারে, কিন্তু যদি আপনি সমাজে চলমান কুসংস্কারগুলিকে বুঝতে চান, তাহলে এই ছবি অবশ্যই আপনার চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করবে।