বিজয় সেতুপতির ‘মহারাজা’ এবং মোহনলালের ‘দৃশ্যম’ জাতীয় কাল্ট ছবিগুলি দর্শকদের মনে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে, আর এবার একটি নতুন সাসপেন্স থ্রিলার ছবি ‘থুডারাম’ও থিয়েটারে ধুম ধাম করে ব্যবসা করছে।
থুডারাম ওয়ার্ল্ডওয়াইড কালেকশন: মালয়ালম চলচ্চিত্র জগতে যখনই কোনও সাসপেন্স ক্রাইম থ্রিলার মুক্তি পায়, তখন দর্শকদের উৎসাহ চরমে উঠে। এমনই একটি নাম এখন আলোচনায়, মোহনলাল অভিনীত ছবি ‘থুডারাম’। মুক্তির মাত্র ২৫ দিনের মধ্যে এই ছবিটি শুধুমাত্র দর্শকদের মন জয় করেনি, বরং বক্স অফিসেও ঝড়ের বেগে আয় করেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ‘থুডারাম’ বিশ্বব্যাপী মোট ২২৩ কোটি টাকা ব্যবসা করেছে এবং এই সংখ্যা দ্রুত ২৫০ কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে। আসুন জেনে নেই এই ছবির সাফল্যের গল্প এবং এর পিছনে লুকিয়ে থাকা জোরালো ফর্মুলা।
মোহনলালের ধুমকেতু প্রত্যাবর্তন
‘থুডারাম’ ছবিটি মুক্তির প্রথম দিন থেকেই বক্স অফিসে ধুম ধাম করে ব্যবসা করে। ৫.২৫ কোটি টাকার জোরালো ওপেনিংয়ের সাথে এই ছবিটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এটি শুধুমাত্র একটি ছবি নয়, বরং দর্শকদের পছন্দের ছবি হয়ে উঠেছে। থারুন মূর্তি পরিচালিত এই সাসপেন্স ক্রাইম থ্রিলার মোহনলালের অভিনয়ের বলে দর্শকদের মন জয় করছে।
মালয়ালম চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এই আয় একটি বৃহৎ অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে কারণ ২২৩ কোটি টাকার আয় কোনও আঞ্চলিক ছবির জন্য ব্যাপক সাফল্যের সূচক। এই সাথে ছবিটি এখন পর্যন্ত অনেক বড় বড় ছবি ছাড়িয়ে গেছে।
‘রেড ২’ এবং অন্যান্য ছবি পিছনে ফেলে
বক্স অফিসে মোহনলালের ‘থুডারাম’ শুধুমাত্র মালয়ালম ছবি নয়, হিন্দি এবং তামিল ছবিগুলিকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। অজয় দেবগণের ‘রেড ২’, নানির ‘হিট ৩’ এবং সূর্যার ‘রেট্রো’ জাতীয় ছবিগুলি জোরালো প্রচেষ্টা করেছে, কিন্তু ‘থুডারাম’ নিজের গল্প এবং দমদার অভিনয়ের বলে তাদের পিছনে ফেলে দিয়েছে।
এটা প্রমাণ করে যে আজকের যুগে দর্শকরা মহঙ্গা স্টার কাষ্টের চেয়ে গল্প এবং অভিনয়ের উপর বেশি বিশ্বাস করে। ‘থুডারাম’র গল্পের গভীরতা, থ্রিলার পটভূমি এবং মোহনলালের অসাধারণ অভিনয় এটিকে চলচ্চিত্র প্রেমীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছবি করে তুলেছে।
ছবির গল্প: সাধারণ ট্যাক্সি চালকের অসাধারণ যাত্রা
‘থুডারাম’ ছবির গল্প একটি ছোট পাহাড়ি শহর পথানামথিট্টার ট্যাক্সি চালক শানমুঘন (মোহনলাল) কে কেন্দ্র করে ঘোরে, যাকে স্নেহের সাথে ‘বেনজ’ বলা হয়। তার পুরোনো কালো এ্যাম্বাসেডর গাড়ির প্রতি বেনজের জোরালো মমতা তাকে সাধারণ মানুষের থেকে অন্যরকম করে তোলে। কিন্তু যখন তার গাড়ি রহস্যময় ভাবে হারিয়ে যায়, তখন বেনজের জীবনে ঝড় উঠে।
প্রথম অংশে বেনজের পুলিশের সাথে তার গাড়ি ফিরে পাওয়ার লড়াই দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয় অংশে গল্প পাল্টে যায়, যখন বেনজ নিজের ছেলে পাভির হত্যার প্রতিশোধ নিতে সিআই জর্জ এবং এসআই বেনির সাথে যুদ্ধ করে। গল্পের এই দ্বিতীয় অংশ দর্শকদের অত্যন্ত রোমাঞ্চিত করে এবং পুরো ছবির থ্রিল বৃদ্ধি করে।
ছবিতে মোহনলালের অভিনয়
মোহনলাল ‘থুডারাম’ ছবিতে যে দমদার অভিনয় করেছেন, তা এই ছবির সবচেয়ে বড় শক্তি। তিনি শানমুঘনের চরিত্রটিকে এমন জীবন্ত রূপে উপস্থাপন করেছেন যে দর্শকরা পুরোপুরি গল্পে বিলিয়ন হয়ে গেছেন। তার সহজ অভিনয় এবং ভাবপূর্ণ ডায়ালগ ডেলিভারি ছবির ইমোশনাল এবং থ্রিলার উভয় পক্ষকেই মজবুত করে।
এছাড়াও, শোভনা, ফারহান ফাসিল, মানিয়ানপিলা রাজু, বিনু পাপ্পু এবং ইরশাদ আলী জাতীয় কলাকুশলীরাও তাদের তাদের চরিত্রে জীবন ঢেলে দিয়েছেন, যার ফলে গল্পে আরও গভীরতা আসে।
‘থুডারাম’ ছবির পরিচালক থারুন মূর্তি দর্শকদের একটি উত্তম থ্রিলার দেওয়ার জন্য গল্প এবং পরিচালন উভয় ক্ষেত্রেই বিশেষ কষ্ট করেছেন। তার পরিচালনা এতটাই সঠিক এবং প্রভাবশালী যে দর্শকরা ছবির প্রতিটি দৃশ্যের সাথে যোগাযোগ অনুভব করেন। তিনি গল্পের মাধ্যমে সামাজিক এবং পারিবারিক মূল্যবোধ ও যোগ করে ছবিটিকে একটি ভিন্ন স্তরে নিয়ে গেছেন।