টম ক্রুজের অত্যন্ত প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘মিশন ইম্পসিবল: ডেড রেকনিং’ ভারতে ১৭ মে মুক্তি পেয়েছে, কিন্তু প্রত্যাশার বিপরীতে এর বক্স অফিস পারফরম্যান্স এখনও পর্যন্ত তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। দর্শকদের মধ্যে যতটা আলোচনা ও উৎসাহ দেখা গিয়েছিল, ততটা ভিড় সিনেমা হলে দেখা যায়নি।
Mission Impossible BO Collection Day 4: হলিউডের সুপারস্টার টম ক্রুজের অত্যন্ত প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র মিশন ইম্পসিবল: দ্য ফাইনাল রেকনিং-এর জন্য দীর্ঘদিন ধরে ভক্তরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। অ্যাকশন ও থ্রিলের সমাহারে ভরা এই চলচ্চিত্র মিশন ইম্পসিবল ফ্র্যাঞ্চাইজির শেষ কিস্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যার ফলে দর্শকদের প্রত্যাশাও ছিল অনেক উঁচুতে। চলচ্চিত্রটি ভারতে ১৭ মে মুক্তি পেয়েছে, কিন্তু প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এটি বক্স অফিসে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
চলচ্চিত্রটি মুক্তির চার দিন হয়ে গেছে, তবুও এখনও ৫০ কোটি টাকার ক্লাবে যোগ দিতে পারেনি। যেখানে ভক্তরা আশা করেছিলেন টম ক্রুজের ফিরে আসা বড় পর্দায় দারুণ সাফল্য পাবে, সেখানে বাস্তবতা কিছুটা ফিকে প্রমাণিত হয়েছে।
শান্দার উদ্বোধন কিন্তু পতন উদ্বেগ বৃদ্ধি করেছে
চলচ্চিত্রটি প্রথম দিন অর্থাৎ শুক্রবার প্রত্যাশামতো ১৬.৫ কোটি টাকার শক্তিশালী উদ্বোধন করেছিল। দ্বিতীয় দিন শনিবার সংগ্রহ আরও কিছুটা বেড়ে ১৭ কোটি টাকার ঘরে ঢুকে পড়ে। কিন্তু রবিবার, যখন সাধারণত চলচ্চিত্রের আয় বৃদ্ধি পায়, ‘মিশন ইম্পসিবল’-এর জন্য গ্রাফ নেমে গেছে এবং তৃতীয় দিনের আয় মাত্র ৫.৭৫ কোটি টাকা হয়েছে। সোমবার কর্মদিবস হওয়ায় পতন আরও বেশি দেখা গেছে এবং চলচ্চিত্রটি চতুর্থ দিনে মাত্র ৫.৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে।
এখন পর্যন্ত মোট সংগ্রহ ৪৪.৭৫ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা টম ক্রুজের মতো গ্লোবাল তারকার চলচ্চিত্রের জন্য ভারতীয় বাজারে তুলনামূলকভাবে কম বলে মনে করা হচ্ছে।
টম ক্রুজের তারকা শক্তি ও প্রচারের পরও ঠান্ডা প্রতিক্রিয়া
টম ক্রুজের ভারতীয় ভক্তবৃন্দ বেশ বড়, এবং তাঁর চলচ্চিত্রগুলি এখানে সাধারণত ভালো পারফরম্যান্স করে। ‘মিশন ইম্পসিবল’ ফ্র্যাঞ্চাইজির এই শেষ অধ্যায় বলে মনে করা হচ্ছে, যা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে বিশেষ উৎসাহ ছিল। কান চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি স্ট্যান্ডিং ওভেশন পেয়েছে এমন খবর উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় বক্স অফিসে এখনও পর্যন্ত এই চলচ্চিত্রটি তার তারকা শক্তি ও অ্যাকশনের জোরে দর্শকদের ব্যাপক আকর্ষণ করতে পারেনি।
চলচ্চিত্রটির এখন পর্যন্ত পারফরম্যান্স দেখে স্পষ্ট যে এটি মাল্টিপ্লেক্স কেন্দ্রিক চলচ্চিত্র হিসেবেই থেকে গেছে। মেট্রো শহরগুলিতে যেখানে ইংরেজি চলচ্চিত্রের দর্শক সংখ্যা বেশি, সেখানে চলচ্চিত্রটি কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে, কিন্তু ছোট শহর ও সিঙ্গল স্ক্রিন থিয়েটারে দর্শক সংখ্যা অনেক কম ছিল। এর প্রধান কারণ চলচ্চিত্রের ভাষা, জটিল গল্প এবং স্থানীয় আবেদনের অভাব বলে মনে করা হচ্ছে।
কোনো বড় বলিউড মুক্তি নেই, লাভ পেতে পারে
এই সপ্তাহে বক্স অফিসে কোনো বড় বলিউড চলচ্চিত্র মুক্তি পাচ্ছে না, যার সুবিধা ‘মিশন ইম্পসিবল’ অবশ্যই পেতে পারে। দর্শকদের কাছে বিকল্পের অভাবের কারণে তারা এই চলচ্চিত্রটি দেখার কথা ভাবতে পারে। যদি মুখে মুখে প্রচার এবং সোশ্যাল মিডিয়ার রিভিউ ইতিবাচক থাকে, তাহলে চলচ্চিত্রের সংগ্রহে ধীরে ধীরে উন্নতি দেখা যেতে পারে।
বর্তমানে চলচ্চিত্রটি যে গতিতে আয় করছে, তা দেখে ১০০ কোটি টাকার ঘর এখনও দূরে বলে মনে হচ্ছে। এর জন্য প্রয়োজন চলচ্চিত্রটি আগামী দিনগুলিতে স্থির আয় করবে এবং সপ্তাহান্তে কোন বড় উত্থান দেখাবে। তবে টম ক্রুজের জনপ্রিয়তা এবং সপ্তাহান্তের ছুটির প্রভাব মিলে চলচ্চিত্রটিকে শক্তি দিতে পারে।