জয়পুরে ব্যাপক বিদ্যুৎ চুরি: ১০ লক্ষ টাকার বেশি জরিমানা

জয়পুরে ব্যাপক বিদ্যুৎ চুরি: ১০ লক্ষ টাকার বেশি জরিমানা
সর্বশেষ আপডেট: 13-06-2025

বৈদ্যুতিক বিভাগ গত বৃহস্পতিবার জয়পুর শহরে বিদ্যুৎ চুরির উপর নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য একটি ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে। এই বিশেষ তদন্ত অভিযানে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়, যেখানে ৬টি স্থানে ব্যাপকহারে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সন্ধান পাওয়া যায়। এই ঘটনাগুলিতে একটি আরও প্ল্যান্ট, একটি কোল্ড স্টোরেজ, একটি রিসোর্ট এবং একটি ব্যক্তিগত গুদাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। বিভাগ সমস্ত স্থানে ১০ লক্ষ টাকার বেশি জরিমানা আরোপ করেছে এবং আইনগত ব্যবস্থাও শুরু করেছে।

অভিযান কীভাবে চালানো হয়েছিল?

বৈদ্যুতিক निरीक्षण দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জয়পুরের প্রান্তিক এলাকায় এই অভিযান চালায়। বিভাগের মতে, এই অভিযান সকাল ৬ টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর পর্যন্ত চলে। দলগুলো আগে থেকেই জানত যে কিছু স্থানে দীর্ঘদিন ধরে মিটার ছাড়া বা মিটার বাইপাস করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে।

কোথায় কোথায় চুরি ধরা পড়েছে?

  • কাঞ্চীপুরা রোডে অবস্থিত একটি আরও প্ল্যান্টে ট্রান্সফর্মার থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ নেওয়া হচ্ছিল। প্রায় দুই বছর ধরে বিল ছাড়াই প্ল্যান্ট চালু ছিল।
  • সিরসি রোডের কাছে একটি রিসোর্টে মিটারে ছলনা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছিল।
  • জগতপুরার কোল্ড স্টোরেজে মিটার বাইপাস করে বেশি বিদ্যুৎ লোড নেওয়া হচ্ছিল।
  • বাগরুর কাছে একটি ব্যক্তিগত গুদামে ট্রানজিট ওয়্যারিং করে অবৈধ সরবরাহ নেওয়া হচ্ছিল।
  • মহলা রোডে একটি ডেয়ারি প্ল্যান্টে পুরানো ডিসকানেক্টেড সংযোগ থেকে চুরি করা হচ্ছিল।
  • শিবদাসপুরার একটি ফার্মহাউসে লুকিয়ে রাখা প্যানেল থেকে অবৈধ লাইন নিয়ে বড় আলোক ব্যবস্থা চালানো হচ্ছিল।

কার্যকরী ব্যবস্থা এবং জরিমানা

বিভাগ ৬টি ঘটনায়ই দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে এবং এফআইআর দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। মোট মিলিয়ে এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে ১০.২৭ লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও, চুরি হওয়া ইউনিটের ক্ষতিপূরণ এবং অতিরিক্ত জরিমানার জন্য নোটিস জারি করা হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে কিছু স্থানে এই বিদ্যুৎ চুরি গত ১ থেকে ২ বছর ধরে চলে আসছিল। কিছু ক্ষেত্রে গ্রাহকরা ইচ্ছাকৃতভাবে মিটারে ছলনা করেছিল, আবার কেউ কেউ সরাসরি খুঁটি থেকে সংযোগ যুক্ত করে রেখেছিল।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

বিদ্যুৎ বিতরণ নিগমের অধীক্ষক প্রকৌশলী আর.এস. চৌহান জানিয়েছেন, আমরা প্রযুক্তিগত দলের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে তদন্ত করেছি এবং প্রত্যেক সন্দেহজনক স্থান চিহ্নিত করেছি। বিদ্যুৎ চুরি একটি গুরুতর অপরাধ এবং আমরা এ ধরণের ঘটনায় কোনওরকম ছেড়াছাড়া করব না। বিভাগ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই অভিযান এখানেই থেমে থাকবে না।

আগামী কয়েক সপ্তাহে জয়পুরের আশপাশের গ্রাম, শিল্প এলাকা এবং ফার্মহাউসগুলিতেও বিশেষ নজরদারি করা হবে। জনগণের কাছে আবেদন করা হয়েছে যদি তারা কোথাও বিদ্যুৎ চুরির তথ্য পায় তাহলে দ্রুত বিভাগকে অবগত করার জন্য। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, যদি কোন গ্রাহক ইচ্ছাকৃতভাবে চুরি করে তাহলে তাকে কারাদণ্ডও হতে পারে। শুধু জরিমানা নয়, লাইসেন্স বাতিল, মামলা দায়ের এবং ভবিষ্যতে সংযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

Leave a comment