আর্থিক জগতে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে এবং প্রথাগত ব্যাংকগুলি এখন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। প্রযুক্তিভিত্তিক ফিনটেক কোম্পানি, প্রাইভেট ক্রেডিট ফান্ড, নন-ব্যাংক লিকুইডিটি প্রোভাইডার এবং ডিজিটাল ব্যাংকের মতো নতুন অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত উঠে আসছে এবং ব্যাংকগুলির বাজার শেয়ার কমিয়ে আনছে।
ব্যবসা: আর্থিক জগতে আজ একটি বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, যেখানে প্রথাগত ব্যাংকগুলি ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের মধ্যে সংগ্রাম করছে। প্রযুক্তিভিত্তিক ফিনটেক কোম্পানি, ডিজিটাল ব্যাংক, প্রাইভেট ক্রেডিট ফান্ড এবং নন-ব্যাংক লিকুইডিটি প্রোভাইডারের মতো নতুন অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত উঠে আসছে এবং পুরোনো ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাজার শেয়ারের উপর গভীর প্রভাব ফেলছে। Boston Consulting Group (BCG) এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এই পরিবর্তনের গভীরতা স্পষ্ট করেছে এবং ইঙ্গিত দিয়েছে যে ভবিষ্যতে ব্যাংকিং শিল্প সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হবে।
Boston Consulting Group-এর প্রতিবেদন থেকে উন্মোচিত বড় সত্য
BCG-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আর্থিক খাতে মোট আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু পুরোনো ব্যাংকগুলি এর সঠিক অংশ পেতে পারছে না। এখন অর্থ সেই কোম্পানিগুলির দিকে যাচ্ছে যারা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে আর্থিক ব্যবস্থাকে সহজ এবং দ্রুত করে তুলছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ডিজিটাল সম্পদ যেমন ক্রিপ্টোকারেন্সির দ্রুত বিস্তার হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আর্থিক খাতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। তবে, অধিকাংশ ব্যাংক এখনও এই ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত আছে।
কেন পিছিয়ে পড়ল প্রথাগত ব্যাংকগুলি?
- ডিজিটাল ব্যাংকগুলি গত পাঁচ বছরে 85-100% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যখন পুরোনো ব্যাংকগুলির বৃদ্ধি মাত্র 10-15% পর্যন্ত সীমাবদ্ধ।
- নতুন কোম্পানিগুলির কাছে বড় প্ল্যাটফর্ম, কম ব্যয় এবং ডিজিটাল পরিচালনার শক্তি আছে।
- প্রাইভেট ক্রেডিট কোম্পানি এবং রিটেল ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মও দ্রুত উঠে আসছে।
- পুরোনো ব্যাংকগুলির ফি, সুদের বাইরে আয় (নন-ইন্টারেস্ট ইনকাম) কমছে এবং ব্যয় বাড়ছে।
- প্রযুক্তিতে ব্যাপক বিনিয়োগ সত্ত্বেও কর্মপদ্ধতিতে উন্নতির গতি ধীর।
- BCG-এর মতে, নতুন প্রতিযোগীরা কম খরচে আরও ভালো পারফরম্যান্স করছে, যখন প্রথাগত ব্যাংকগুলি তাদের পুরোনো পদ্ধতিতে আটকে আছে।
মূলধন বাজারেও নতুন প্রভাব
ব্যাংকগুলির আয় হ্রাস শুধুমাত্র খুচরা আর্থিক ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধ নয়, মূলধন বাজারেও ছোট পরামর্শদাতা কোম্পানি এবং নন-ব্যাংক মার্কেট মেকার পুরোনো ব্যাংকগুলির শেয়ার কমিয়ে আনছে। বিশেষ করে আমেরিকায় প্রাইভেট ক্রেডিট কোম্পানি ব্যাংকিং খাতের আয় কমিয়ে আনছে। পূর্ব এশিয়া এবং ইউরোপে অনেক ব্যাংকের শেয়ার তাদের বইয়ের মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা সেই ব্যাংকগুলি থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে যারা পুরোনো প্রযুক্তি এবং ধীর আয়ের কারণে পিছিয়ে পড়ছে।
ব্যাংকগুলির সামনে এখন কী কী বিকল্প আছে?
প্রথাগত ব্যাংকগুলির জন্য এখন বিকল্প খুব কম রয়ে গেছে। তাদের তাদের কর্মপদ্ধতি সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল করা, নতুন প্রযুক্তি স্ট্যাকে ব্যাপক বিনিয়োগ করা এবং গ্রাহকের অভিজ্ঞতা উন্নত করা হবে। ক্লাউড কম্পিউটিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ব্লকচেইন এবং বিগ ডেটা-র মতো প্রযুক্তি গ্রহণ করা জরুরি হয়ে উঠেছে।
এছাড়াও, ব্যাংকগুলি ফিনটেক কোম্পানিগুলির সাথে অংশীদারিত্ব বা সহযোগিতার নতুন মডেল তৈরি করতে হবে যাতে তারা দ্রুত পরিবর্তিত আর্থিক পরিবেশে তাদের প্রতিযোগিতামূলকতা বজায় রাখতে পারে। গ্রাহকরা এখন দ্রুত, সস্তা এবং কাস্টমাইজড আর্থিক পণ্যের চাহিদা করছে, যা কেবল ডিজিটাল মাধ্যমেই সম্ভব।
