যোগী আদিত্যনাথের হাতে মহারাজা সুহেলদেব স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন

যোগী আদিত্যনাথের হাতে মহারাজা সুহেলদেব স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ১০ জুন বহরায়িচে মহারাজা সুহেলদেব স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করবেন। চিত্তৌরা হ্রদের তীরে নির্মিত এই স্মৃতিসৌধ ঐতিহাসিক বিজয় দিবস এবং শৌর্য মেলার প্রতীক হিসেবে দাঁড়াবে।

UP News: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ১০ জুন বহরায়িচের ঐতিহাসিক স্থান চিত্তৌরা হ্রদের তীরে নবনির্মিত মহারাজা সুহেলদেব স্মৃতিসৌধের লোকোর্পণ করবেন। প্রায় ৩৯.৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই স্মৃতিসৌধে মহারাজা সুহেলদেবের ৪০ ফুট উঁচু একটি প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে তিনি লাঞ্ছ ও ধনুকসহ ঘোড়ায় আরোহণরত অবস্থায় দেখা যায়।

শৌর্য মেলার আয়োজন, ওমপ্রকাশ রাজভরের নেতৃত্বে

এই আয়োজনে সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পার্টি (সুভাসপা)-র প্রধান এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী ওমপ্রকাশ রাজভরও উপস্থিত থাকবেন। তাঁর দলের পক্ষ থেকে এ উপলক্ষে একটি শৌর্য মেলাও আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলা মহারাজা সুহেলদেবের ঐতিহাসিক বিজয় এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে স্মরণ করার জন্য প্রতি বছর পালিত হয়।

কোন ছিলেন মহারাজা সুহেলদেব?

মহারাজা সুহেলদেব ছিলেন শ্রাবস্তীর একজন বীর যোদ্ধা এবং বহরায়িচ অঞ্চলের শাসক। যখন মহম্মদ গজনবী সোমনাথ মন্দিরে আক্রমণ করে দেশের আত্মসম্মানে আঘাত করেছিলেন, তখন সুহেলদেব বঞ্জারা, থারু ইত্যাদি আদিবাসী সম্প্রদায়কে একত্রিত করে গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনী বিদেশী আক্রমণকারীদের দশকের পর দশক অযোধ্যা অঞ্চলে প্রবেশ করতে দেয়নি।

সৈয়দ সালার মাসুদ গাজীর সাথে নির্ণায়ক যুদ্ধ

পরে মহম্মদ গজনবীর ভাতিজা এবং সেনাপতি সৈয়দ সালার মাসুদ গাজী দিল্লি থেকে বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে বহরায়িচের দিকে অগ্রসর হন। তিনি প্রথমে মেরঠের যুদ্ধে জয়ী হন এবং পরে বহরায়িচে আক্রমণ করেন। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করার জন্য মহারাজা সুহেলদেব লক্ষীমপুর, সীতাপুর, লখনউ এবং বারাবঙ্কি ইত্যাদি বিভিন্ন অঞ্চলের ছোট ছোট রাজাদের সাথে জোট বেঁধেছিলেন।

চিত্তৌরা হ্রদের তীরে হয়েছিল ঐতিহাসিক যুদ্ধ

এই ঐতিহাসিক যুদ্ধটি চিত্তৌরা হ্রদের তীরে সংঘটিত হয়েছিল। মহারাজা সুহেলদেবের কৌশলগত দক্ষতা এবং ঐক্যের বলে তাঁর সেনাবাহিনী মাসুদের শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে। যুদ্ধের পর সালার মাসুদের মৃত্যু হয় এবং তাঁকে সেখানেই সমাধিস্থ করা হয়। আজও সেই স্থানে একটি মাজার রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর গাজী মিয়া মেলা বসে।

হিন্দু সংগঠনগুলি বিজয় দিবস পালন শুরু করেছে

মহারাজা সুহেলদেবের এই ঐতিহাসিক বিজয়কে স্মরণ করে ১০ জুন বিজয় দিবস পালিত হয়। বহু বছর ধরে হিন্দু সংগঠন এবং সামাজিক দলগুলি এই দিনটিকে মহারাজের বীরত্বের প্রতীক হিসেবে পালন করে আসছে। এখন চিত্তৌরা হ্রদের তীরে তাঁর স্মৃতিসৌধ নির্মিত হওয়ায় এই ঐতিহ্য আরও বর্ণিল রূপ ধারণ করছে।

Leave a comment