যদি আপনার বাড়িতে বাস্তুদোষ থাকে, অর্থের অভাব থাকে অথবা জীবনে বারবার বাধা আসে, তাহলে এর একটি প্রভাবশালী ও পবিত্র সমাধান হিসেবে শাস্ত্রে শ্রীযন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। মনে করা হয় শ্রীযন্ত্র স্বয়ং মা লক্ষ্মীর দিব্য অংশ, যার স্থাপনার দ্বারা জীবনে সৌভাগ্য, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির বাস হয়।
শ্রীযন্ত্রের উৎপত্তি: শিব থেকে প্রাপ্ত দিব্য শক্তির উপহার
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, আদি শঙ্করাচার্য একবার কৈলাসের নিকটে কঠোর তপস্যা করেছিলেন। ভগবান শিব প্রকাশিত হলে তিনি সমস্ত মানবজাতির কল্যাণের উপায় চেয়েছিলেন। তখন শিবজি তাঁকে শ্রীযন্ত্র ও শ্রীসূক্ত প্রদান করেছিলেন, যা ব্রহ্মাণ্ডীয় শক্তির কেন্দ্র বলে মনে করা হয়। এই যন্ত্রই আজ শ্রীযন্ত্র নামে পরিচিত।
শ্রীযন্ত্র ও দেবী লক্ষ্মী: আত্মার বাস
একটি প্রাচীন কাহিনী বলে, যখন দেবী লক্ষ্মী পৃথিবী থেকে রুষ্ট হয়ে বৈকুণ্ঠ চলে গেলেন, তখন চারিদিকে অন্ধকার, দারিদ্র্য ও কলহ ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর ফিরে আসার জন্য দেবতারা প্রচেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছিলেন। তখন দেবগুরু বৃহস্পতি শ্রীযন্ত্রের পূজার পরামর্শ দিয়েছিলেন। যখন যন্ত্রের বিধিপূর্ণ পূজা সম্পন্ন হল, মা লক্ষ্মী পুনরায় প্রকাশিত হয়ে বললেন, “শ্রীযন্ত্র আমার ভিত্তি, এতে আমার আত্মার বাস। যেখানে এর পূজন হয়, সেখানে আমাকে আসতেই হয়।”
শ্রীযন্ত্রে বাস করেন ৩৩ কোটি দেব-দেবতা
শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে শ্রীযন্ত্র কেবল একটি যন্ত্র নয়, বরং ৩৩ কোটি দেবতাদের বাসস্থান। এর থেকে উৎপন্ন শক্তি নেতিবাচকতা দূর করে এবং বাড়িকে আধ্যাত্মিক ও ইতিবাচক শক্তি দিয়ে পূর্ণ করে।
শ্রীযন্ত্র রাখার উপকারিতা
ধনের বৃদ্ধি: অষ্টলক্ষ্মীর বাস হয় এবং আর্থিক সমৃদ্ধি আসে।
ব্যবসা ও কর্মক্ষেত্রে সাফল্য: কাজে বাধা দূর হয়, উন্নতি হয়।
বাস্তুদোষ নিবারণ: যেখানে শ্রীযন্ত্র স্থাপিত হয়, সেখানে বাস্তুদোষ টিকে থাকতে পারে না।
পারিবারিক শান্তি: ঘরে প্রেম, সহযোগিতা ও সুখকর পরিবেশ বজায় থাকে।
আধ্যাত্মিক শক্তি: এই যন্ত্র বাড়িকে পবিত্র করে তুলে সাধনা ও ধ্যানের জন্য আদর্শ পরিবেশ প্রদান করে।
কিভাবে স্থাপনা করবেন?
শ্রীযন্ত্র শুক্রবার, অক্ষয় তৃতীয়া অথবা দীপাবলির মতো শুভ দিনে বাড়ির পূজার ঘরে স্থাপন করা শ্রেষ্ঠ বলে মনে করা হয়। এর স্থাপনার সময় বিধিপূর্ণভাবে শ্রীসূক্ত অথবা লক্ষ্মী মন্ত্রের উচ্চারণ করে পূজন করা উচিত।