পাপমোচনী একাদশীর বিশেষ ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। এই ব্রত চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী তিথিতে পালন করা হয়। বৈদিক পঞ্জিকার অনুসারে, ২০২৫ সালে পাপমোচনী একাদশী ব্রত ২৫শে মার্চ পালিত হবে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এই একাদশীর ব্রত পালন এবং ভগবান বিষ্ণুর পূজা-অর্চনা করলে ব্যক্তির পাপ ধ্বংস হয়, সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায় এবং জীবনে সফলতা অর্জিত হয়। এই ব্রতের প্রভাবে মানসিক শান্তি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতিও সম্ভব হয়।
চৈত্র মাসে পাপ ধ্বংসকারী পাপমোচনী একাদশীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই দিনে ভগবান বিষ্ণু এবং মা লক্ষ্মীর পূজা-অর্চনা করলে জীবনের দুঃখ দূর হয় এবং সাধক মোক্ষ লাভ করেন।
পাপমোচনী একাদশী ২০২৫-এর শুভ মুহূর্ত
বৈদিক পঞ্জিকার অনুসারে, ২০২৫ সালে পাপমোচনী একাদশী ২৫শে মার্চ (মঙ্গলবার) পালিত হবে।
একাদশী তিথি আরম্ভ: ২৫শে মার্চ সকাল ০৫:০৫ টা
একাদশী তিথি সমাপ্তি: ২৬শে মার্চ রাত ০৩:৪৫ টা
সুতরাং ব্রতধারীরা ২৫শে মার্চ উপবাস করতে পারেন এবং পরের দিন পারণ করতে পারেন।
পাপমোচনী একাদশীর গুরুত্ব
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, পাপমোচনী একাদশীর ব্রত পালন করলে ব্যক্তির সকল পাপ ধ্বংস হয় এবং তিনি পুণ্য লাভ করেন। এই ব্রত তাদের জন্য বিশেষ উপকারী বলে মনে করা হয় যারা জীবনে কোনো না কোনো সংকট বা মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। পাপমোচনী একাদশীর পূজার সময় আরতি করা বিশেষ ফলদায়ক বলে মনে করা হয়। বলা হয় আরতি ছাড়া পূজা অসম্পূর্ণ থাকে।
আরতি করলে ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি আসে এবং নেতিবাচক শক্তি দূর হয়। এই একাদশীতে বিধিপূর্বক ব্রত ও আরতি করলে ভগবান বিষ্ণু প্রসন্ন হন এবং সাধকের সকল মনোকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়।
পূজনবিধি এবং আরতির গুরুত্ব
প্রাতঃকালে স্নান করে পরিষ্কার পোশাক পরিধান করুন।
ব্রত সংকল্প করে ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান করুন।
পূজা স্থলে বিষ্ণু এবং মা লক্ষ্মীর প্রতিমা স্থাপন করুন।
পীত পুষ্প, তুলসীদল এবং ফল অর্পণ করুন।
শ্রীহরিকে পঞ্চামৃত দিয়ে স্নান করান এবং ভোগ লাগান।
বিষ্ণুসহস্রনাম পাঠ করুন এবং শেষে অবশ্যই আরতি করুন।
শ্রীবিষ্ণু আরতি
ॐ জয় জগদীশ হরে, স্বামী জয় জগদীশ হরে
ॐ জয় জগদীশ হরে, স্বামী! জয় জগদীশ হরে।
ভক্ত জনের সংকট, ক্ষণে দূর করে॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
যে ধ্যানে ফল পায়, দুঃখ বিনশে মন কা।
স্বামী দুঃখ বিনশে মন কা।
সুখ সম্পত্তি ঘর আবে, কষ্ট মিটে তন কা॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
মাता-পিতা তুমি আমার, শরণ গেহুঁ আমি কিসকি।
স্বামী শরণ গেহুঁ আমি কিসকি।
তুমি বিন অন্য নাই, আশা করিুঁ যিসকি॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
তুমি পূর্ণ পরমাত্মা, তুমি অন্তর্যামী।
স্বামী তুমি অন্তর্যামী।
পারব্রহ্ম পরমেশ্বর, তুমি সবার স্বামী॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
তুমি করুণার সাগর, তুমি পালন-কর্তা।
স্বামী তুমি পালন-কর্তা।
আমি মূর্খ খল কামী, কৃপা করো ভর্তা॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
তুমি হো এক অগোচর, সবার প্রাণপতি।
স্বামী সবার প্রাণপতি।
কিসে বিধি মিলুঁ দয়া ময়, তুমিকে আমি কুমতি॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
দীনবন্ধু দুঃখহর্তা, তুমি ঠাকুর আমার।
স্বামী তুমি ঠাকুর আমার।
আপন হাত উঠাও, দ্বার পড়া তোমার॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
বিষয়-বিকার মিটাও, পাপ হরো দেবা।
স্বামী পাপ হরো দেবা।
শ্রদ্ধা-ভক্তি বাড়াও, সন্তানের সেবা॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
শ্রী জগদীশজির আরতি, যে কোন নর গাওয়।
স্বামী যে কোন নর গাওয়।
কহত শিবানন্দ স্বামী, সুখ সম্পত্তি পাওয়॥
ॐ জয় জগদীশ হরে...
একাদশী মা তের আরতি
ॐ জয় একাদশী, জয় একাদশী, জয় একাদশী মা।
বিষ্ণুপূজা ব্রতকে ধারণ কর, শক্তি মুক্তি পাওয়া॥
ॐ জয় একাদশী...॥
তোমার নাম গুনাউঁ দেবী, ভক্তি প্রদান করনী।
গণ গৌরব দেওয়া মা, শাস্ত্রে বর্ণনী॥
ॐ জয় একাদশী...॥
মার্গশীর্ষের কৃষ্ণপক্ষের উৎপন্না, বিশ্বতারনী জন্মে।
শুক্লপক্ষে হয়ে মোক্ষদা, মুক্তিদাতা বনে আই॥
ॐ জয় একাদশী...॥
পৌষের কৃষ্ণপক্ষের, সফলা নামক হে।
শুক্লপক্ষে হয়ে পুত্রদা, আনন্দ অধিক রহে॥
ॐ জয় একাদশী...॥
নাম ষট্টিলা মাঘ মাসে, কৃষ্ণপক্ষ আবে।
শুক্লপক্ষে হয়ে জয়া, কহাবে, বিজয় সদা পাবে॥
ॐ জয় একাদশী...॥
বিজয়া ফাল্গুন কৃষ্ণপক্ষে শুক্লা আমলকী।
পাপমোচনী কৃষ্ণপক্ষে, চৈত্র মহাবলী কী॥
বিষ্ণুজি ভোগ কে স্বীকার নয় করেন।
ॐ জয় একাদশী...॥
চৈত্র শুক্ল নাম কামদা, ধন দিওয়া বালী।
নাম বরুথিনী কৃষ্ণপক্ষে, বৈশাখ মাস বালী॥
ॐ জয় একাদশী...॥
শুক্লপক্ষে হয়ে মোহিনী, অপরা জ্যৈষ্ঠ কৃষ্ণপক্ষী।
নাম নিরজলা সব সুখ করনী, শুক্লপক্ষ রাখি॥
ॐ জয় একাদশী...॥
যোগিনী নাম আষাঢ়ে জানো, কৃষ্ণপক্ষ করনী।
দেবশয়নী নাম কাহাওয়ো, শুক্লপক্ষ ধরনী॥
ॐ জয় একাদশী...॥
হরির কৃপা
কামিকা শ্রাবণ মাসে আবে, কৃষ্ণপক্ষ কহিয়।
শ্রাবণ শুক্লা হয়ে পবিত্রা আনন্দে রহিয়॥
ॐ জয় একাদশী...॥
অজা ভাদ্রপদ কৃষ্ণপক্ষের, পরিবর্তিনী শুক্লা।
ইন্দ্রা আশ্বিন কৃষ্ণপক্ষে, ব্রতত ভবসাগর নিকলা॥
ॐ জয় একাদশী...॥
পাপাঙ্কুশা শুক্লপক্ষে, আপ হরণহারী।
রমা মাস কার্তিকে আবে, সুখদায়ক ভারী॥
ॐ জয় একাদশী...॥
দেবোৎথানী শুক্লপক্ষের, দুঃখনাশক মইয়া।
পাবন মাসে করি বিনতী পার করো নৈয়া॥
ॐ জয় একাদশী...॥
পরমা কৃষ্ণপক্ষে হয়, জনমঙ্গল করনী।
শুক্ল মাসে হয়ে পদ্মিনী দুঃখ দারিদ্র্য হরণী॥
ॐ জয় একাদশী...॥
যে কোন আরতি একাদশীর, ভক্তি সহিত গাওয়।
জন গুরুদীতা স্বর্গের বাসা, নিশ্চয় সে পাওয়॥
ॐ জয় একাদশী...॥