মার্কিন সরকার सांसदोंকে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি

🎧 Listen in Audio
0:00

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার सांसदोंকে সরকারি ডিভাইস থেকে হোয়াটসঅ্যাপ সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যাতে সাইবার আক্রমণ এবং ডেটা ফাঁসের ঝুঁকি কমানো যায়।

হোয়াটসঅ্যাপ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের (US House of Representatives) সদস্যরা এবং তাদের কর্মীদের তাদের সরকারি স্মার্টফোন এবং ডিভাইসে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ অবিলম্বে মুছে ফেলতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশের কারণ হলো হোয়াটসঅ্যাপ সম্পর্কিত সম্ভাব্য সাইবার আক্রমণ এবং সংবেদনশীল ডেটা ফাঁসের আশঙ্কা।

এই নির্দেশটি এমন সময়ে এসেছে যখন বিশ্বজুড়ে ডেটা সুরক্ষা এবং ডিজিটাল নজরদারি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সরকারগুলোর জন্য এখন অ্যাপগুলোর নিরাপত্তা ক্ষমতাंवर নির্ভর করা কঠিন হয়ে পড়েছে, এমনকি যদি সেই অ্যাপগুলো জনপ্রিয়ও হয়।

পুরো ঘটনাটি কী?

সূত্র অনুসারে, সোমবার মার্কিন কংগ্রেসের সাইবার নিরাপত্তা অফিস একটি আনুষ্ঠানিক ইমেল পাঠিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে হোয়াটসঅ্যাপে ‘সাইবার স্পাইয়িং’ এবং ডেটা ফাঁসের গুরুতর হুমকি রয়েছে। এই ইমেলের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে সংসদ সদস্যরা এবং তাদের সহযোগীরা হোয়াটসঅ্যাপকে তাদের সমস্ত সরকারি স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস থেকে মুছে ফেলতে হবে।

এই নির্দেশটি কঠোরভাবে অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, কারণ জাতীয় নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত তথ্যের গোপনীয়তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

হোয়াটসঅ্যাপের পরিবর্তে কোন অ্যাপগুলো ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে?

সরকারি নির্দেশে হোয়াটসঅ্যাপের পরিবর্তে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এমন কিছু মেসেজিং অ্যাপ হলো:

  • সিগন্যাল – ওপেন সোর্স এবং উচ্চ নিরাপত্তা সম্পন্ন অ্যাপ
  • মাইক্রোসফট টিমস – অফিসের কাজকর্মের জন্য নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম
  • উইকr – সামরিক স্তরের নিরাপত্তা প্রদানকারী মেসেজিং অ্যাপ
  • অ্যাপল আইমেসেজ এবং ফেসটাইম – এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের সাথে

এছাড়াও, সকল কর্মীকে ফিশিং অ্যাটাক, অজানা লিঙ্ক এবং সন্দেহজনক মেসেজ থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মেটার প্রতিক্রিয়া: আমরা হোয়াটসঅ্যাপকে সবচেয়ে নিরাপদ মনে করি

হোয়াটসঅ্যাপের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটা প্ল্যাটফর্মস মার্কিন কংগ্রেসের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। কোম্পানিটি বলছে যে হোয়াটসঅ্যাপ একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত মেসেজিং অ্যাপ যা এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহার করে, যার ফলে কোনো তৃতীয় পক্ষের জন্য ব্যবহারকারীর ডেটা পড়া অসম্ভব।

মেটা জানিয়েছে, ‘আমরা সবসময় হোয়াটসঅ্যাপকে গোপনীয়তা এবং সুরক্ষার সাথে ডিজাইন করে এসেছি এবং এই সিদ্ধান্ত আমাদের প্ল্যাটফর্মের ভুল বোঝাবুঝির উপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে।’

ঝুঁকি কী? ডেটা চুরির আশঙ্কা নাকি রাজনৈতিক চাপ?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কেবল একটি অ্যাপের বিরুদ্ধে নয়, বরং বড় সাইবার হুমকি এবং বিদেশি নজরদারি কার্যক্রমের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে মার্কিন প্রশাসনের উদ্বেগের প্রতিফলন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হোয়াটসঅ্যাপের মতো অ্যাপে ব্যবহারকারীর কার্যকলাপ, চ্যাট, লোকেশন এবং মিডিয়া ডেটা অ্যাক্সেস করার সুযোগ থাকে। যদি কোনো বিদেশি হ্যাকার এই অ্যাপগুলোর মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ডিভাইসে প্রবেশ করতে পারে, তাহলে জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ভারতসহ অন্যান্য দেশের জন্য কী ইঙ্গিত?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ বিশ্বের সকল সরকারের জন্য একটি সতর্কবার্তা। ভারতের মতো দেশেও লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মকর্তা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে ভারতকেও ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের দিকে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সরকারি কাজকর্মের জন্য দেশীয়, নিরাপদ এবং নিয়ন্ত্রিত অ্যাপগুলোর দিকে ঝুঁকতে হবে।

হোয়াটসঅ্যাপ কেন সন্দেহের তালিকায়?

  • এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন থাকা সত্ত্বেও, হোয়াটসঅ্যাপ মেটাডেটা এবং ব্যাকআপ ডেটা সংরক্ষণ করে।
  • কিছু ক্ষেত্রে সার্ভারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ডেটা ফাঁসের খবর পাওয়া গেছে।
  • সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পেগাসাসের মতো স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে সরকারি কর্মকর্তাদের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করার ঘটনা ঘটেছে।

সাধারণ ব্যবহারকারীদের কী করা উচিত?

  • যেকোনো অ্যাপ ইনস্টল করার সময়, তার অনুমতিগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
  • ফোনের ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, লোকেশন-এর মতো অ্যাক্সেসগুলো সবসময় সীমিত রাখুন।
  • ফিশিং লিঙ্ক থেকে সাবধান থাকুন এবং দুই-স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা (Two-Factor Authentication) ব্যবহার করুন।
  • আপনার অ্যাপগুলো নিয়মিত আপডেট করুন।

Leave a comment