সিএনজি গাড়ির নিরাপদ গ্যাস ভর্তি: জরুরি সতর্কতা ও নির্দেশনা

সিএনজি গাড়ির নিরাপদ গ্যাস ভর্তি: জরুরি সতর্কতা ও নির্দেশনা
🎧 Listen in Audio
0:00

সিএনজি গাড়ি চালানো অনেক মানুষই গ্যাস ভরার সময় গাড়ি থেকে বের হওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্বের সাথে নেন না। তবে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা নিয়ম। উচ্চ চাপে গ্যাস ভরার সময় লিক বা দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এই প্রতিবেদনে সিএনজি ফিলিং-এর সাথে জড়িত প্রয়োজনীয় সতর্কতা, ওভারফিলিং-এর ঝুঁকি এবং স্বাস্থ্যগত প্রভাবগুলি সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যাতে প্রতিটি গ্রাহক নিরাপদ থাকতে পারেন।

গ্যাস ভরার সময় বাইরে থাকা কেন জরুরি?

সিএনজি ভরার প্রক্রিয়া চলাকালীন পাইপে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ বারের চাপ থাকে। এই উচ্চ চাপ গাড়ির গ্যাস ট্যাঙ্কি, পাইপলাইন বা ভালভে প্রভাব ফেলতে পারে। যে কোনও ধরণের প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা ফাটলের ক্ষেত্রে গ্যাস লিক হতে পারে, যার ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এমন অবস্থায় গাড়ির ভিতরে থাকা বিপজ্জনক হতে পারে। তাই বেশিরভাগ সিএনজি স্টেশন এই নিয়ম প্রয়োগ করে যে ফিলিংয়ের সময় চালক এবং যাত্রীরা গাড়ি থেকে বাইরে থাকবেন।

গ্যাস লিক থেকে সুরক্ষা

সিএনজি একটি দাহ্য গ্যাস এবং এটি উচ্চ চাপে ভরাট করা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় যদি কোনও কারণে গ্যাস লিক হয়, তাহলে আগুন লাগা বা বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। গাড়ি থেকে বাইরে থাকলে ব্যক্তি এ ধরনের কোনও জরুরী পরিস্থিতি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে এবং প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় পেতে পারে। অনেক জায়গায় এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং এর पालन না করা আইনত ভুলও হতে পারে।

ওভারফিলিং-এর সাথে জড়িত ঝুঁকি

সিএনজি ট্যাঙ্কির একটি নির্দিষ্ট ভরাট ক্ষমতা থাকে যা প্রযুক্তিগত মান অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। ট্যাঙ্কিটিকে এর চেয়ে বেশি ভরাট করা অর্থাৎ ওভারফিলিং করা নিরাপত্তা মান লঙ্ঘন। এতে ট্যাঙ্কিতে অত্যধিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে লিক, ভালভ ফেল হওয়া বা অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওভারফিলিং এড়াতে গ্রাহকদের সর্বদা মিটারে নজর রাখা উচিত এবং ভরাটের পরিমাণ নিশ্চিত করা উচিত।

স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব সম্ভব

যদিও সিএনজি গ্যাস সাধারণত গন্ধহীন, তবে গ্যাস লিক চিহ্নিত করার জন্য এর মধ্যে মার্ক্যাপটান নামক গন্ধযুক্ত পদার্থ মিশ্রিত করা হয়। কিছু মানুষের এর হালকা গন্ধে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাবের মতো সমস্যা হতে পারে। এমন অবস্থায় গ্যাস ভরার সময় বাইরে থাকা স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও একটি ভালো বিকল্প, বিশেষ করে বদ্ধ পরিবেশ এড়াতে।

মিটারে নজরদারিও জরুরি

সিএনজি গাড়িতে ব্যবহৃত মিটার ঐতিহ্যগত পেট্রোল বা ডিজেল গাড়ির মিটার থেকে আলাদা। তাই গাড়ির মালিকদের এটি নিশ্চিত করা উচিত যে ফিলিংয়ের সময় গ্যাসের পরিমাপ সঠিক হচ্ছে কিনা। এতে ওভারফিলিং এড়ানো যায়, এবং ইন্ধনের সঠিক পরিমাণ পাওয়ায় মাইলেজের নির্ভুলতাও বজায় থাকে। এছাড়াও, কোন অসঙ্গতির ক্ষেত্রে গ্রাহকরা দ্রুত অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

সিএনজি গাড়ির ব্যবহারকারী হিসেবে নিরাপত্তা নিয়মগুলি বুঝে এবং পালন করা কেবল আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না, বরং অন্যদেরও সম্ভাব্য বিপদ থেকে রক্ষা করে। পরবর্তী বার যখন আপনি গ্যাস ভরাতে যাবেন, তখন এই সতর্কতাগুলি অনুসরণ করুন এবং তথ্যগুলি অন্যান্য ব্যবহারকারীদের কাছেও পৌঁছে দিন।

Leave a comment